সকালেই ভোট গণনা শুরু হওয়ার পরেই পূর্বাভাস বোঝা গিয়েছিল। সেই ট্রেন্ড-ই বেলা গড়ানোর সঙ্গে অব্যাহত। ২১-১৯, ২৫-১৬, কখনও আবার ২২-১৮। টেবিল টেনিস স্কোরের মতোই দোদুল্যমান রাজ্যে তৃণমূল বনাম বিজেপি দ্বন্দ্ব। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে যেখানে বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ইঙ্গিত, সেখানে রাজ্যেও অপ্রত্যাশিত ভাল ফলের আশা দেখছে কেন্দ্রের শাসকদল। আর এতেই কোথাও হতাশা, কোথাও আবার উল্লাস। শহর কলকাতায় আপাতত দুই চিত্র-ই চোখে পড়ছে।
সকাল থেকেই শহর সুনসান। রাস্তাঘাট ফাঁকা। হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশন চত্ত্বর কার্যত জনহীন। সকলেরই চোখ টিভি অথবা মোবাইলের স্ক্রিনে। কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে সকাল নটা পর্যন্ত ভিড় চোখে পড়ে নি। হরিশ মুখার্জি রোডের সামনে বিক্ষিপ্তল জটলা ছিল কেবল। এর ঠিক উলটো চিত্র আবার শহরের একের পর এক বিজেপি দফতরে।
আরও পড়ুন: Lok Sabha Election 2019 Results Live: তিনশোরও বেশি আসনে এগিয়ে এনডিএ
এখন থেকেই জড়ো করে রাখা হচ্ছে গেরুয়া আবির। যেন স্রেফ চূড়ান্ত ফলটুকু ঘোষণা হওয়ার অপেক্ষায় মোদি-অমিত শাহের অনুগামীরা। রাজ্য নেতৃত্ব উৎসাহী কর্মী, সমর্থকদের জন্য দফতরের ভিতরে প্রেস কর্নারে বসার বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন। রাজ্যের একের পর এক কেন্দ্র থেকে বিজেপি-র এগিয়ে যাওয়ার খবর আসতেই শোনা যাচ্ছে 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত এলাকা।
এই মূহুর্তের খবর অনুযায়ী, রাজ্যে তৃণমূলকে কড়া টক্কর দিচ্ছে বিজেপি। তৃণমূল ২৪ এবং বিজেপি ১৭ আসনে এগিয়ে। বিষ্ণুপুর আসনে প্রচার করতে পারেন নি বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। কিন্তু তিনিও এগিয়ে গিয়েছেন দেখেই বিজেপির সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ-য়ের রাজ্য সদর দফতরে শুরু হয়েছে উল্লাস। রাজ্য বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের অধিকাংশই নেতাজী ইনডোর স্টেডিয়ামের গণনাকেন্দ্রে। কিছুক্ষণ আগে দলের সদর দফতরে এসেছেন জয়প্রকাশ মজুমদার।
যত বেলা বাড়ছে, তত পাল্লা দিয়ে ভিড় বাড়ছে বিজেপি দফতরে। ১১টা নাগাদ মুরলীধর সেন রোডের অফিসে আসেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে ঘিরে স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি কর্মীরা। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে শুরু হয় আবীর খেলা, মোদীর নামে স্লোগান৷ একদল বিজেপি কর্মী পথচলতি মানুষজনকে মিষ্টিমুখ করান। বাস, ট্যাক্সি থামিয়ে মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন বিজেপি কর্মীরা।
জোড়াসাঁকোর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিজেপি সমর্থকেরা দফতরে আসতে শুরু করেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ফলাফল নিয়ে সরাসরি কিছু বলছেন না বিজেপি নেতারা। কেবল রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "ফলাফল যাই হোক, সংঘর্ষ যেন না হয়। আমাদের সবাইকে এ-নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। মানুষ নরেন্দ্র মোদীর প্রতি ভরসা করেছেন। বাংলাতেও গেরুয়া ঝড় শুরু হওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে। তবে এখনও গণনা বাকি আছে।"