/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/04/bruce.jpg)
সেলফি তুলছেন ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার
তখনও নরেন্দ্র মোদী আসেননি। মঞ্চে গরম বক্তৃতা করছেন রাহুল সিনহা। পদ্মফুল আঁকা গেরুয়া পতাকাধারীদের ভিড়ের মধ্যে আচমকাই হইচই শুরু হল এক সাহেবকে ঘিরে। সাহেবের হাতে মোবাইল, পরণে সাদামাটা ফর্মাল প্যান্ট-শার্ট। ব্যারিকেডের যতখানি সম্ভব কাছে গিয়ে একের পর এক ছবি তুলছেন প্রধানমন্ত্রীর সভায় আসা ভিড়ের!
সাদা চামড়ার ভিনদেশীকে দেখে আহ্লাদে আটখানা বিজেপি সমর্থকেরাও। হুগলি থেকে আসা একদল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) সমর্থক সেলফিও তুললেন তাঁর সঙ্গে। সংঘ পরিবারের ওই ছাত্রছাত্রীদের প্রত্যেকের নাম জিজ্ঞাসা করলেন ব্রুস বাকনেল। জানতে চাইলেন পড়াশোনার খবর। ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের এই প্রাক্তনী এখন কলকাতার ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার। পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারতের ১৩টি রাজ্যে ‘কুইন'-এর প্রতিনিধি।
আরও পড়ুন: টাচ মি ইফ ইউ ক্যান, ‘এক্সপায়ারিবাবুকে’ চ্যালেঞ্জ মমতার
হঠাৎ ব্রিগেডে কেন? ব্রুস বললেন, "তেমন কোনও কারণ নেই। আমি এই শহরটা ঘুরে দেখতে ভালবাসি। দেশটাকে যতখানি সম্ভব জানতে, বুঝতে চাই। ডিপ্লোম্যাট পরিচয়ের বাইরে আমি একজন ভারতপ্রেমিকও বটে। চলার পথে ইন্টারেস্টিং কিছু চোখে পড়লেই নেমে পড়ি।” তাঁর কথায়, "আমি ২০১৬ সালে ভারতে এসেছি। এটাই আমার প্রথম এই দেশের সাধারণ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা। তাই যখন শুনলাম খোদ প্রধানমন্ত্রী আসছেন সভা করতে, ভাবলাম একবার ঢুঁ মেরে যাই।"
ব্রুসকে ঘিরে এদিন উৎসাহের অন্ত ছিল না। শ্রীরামপুরের কলেজ পড়ুয়া তানিয়া দাস সাহেব ডিপ্লোম্যাটের সঙ্গে সেলফি তুলেছেন। তিনি বলেন, “ভদ্রলোক যেমন হ্যান্ডসাম, তেমনই ভদ্র। ওঁকে বললাম, আমিও বিলেতের রাজনীতির খবর রাখি। করবিনকে আমার খুব ভাল লাগে। উনি শুধু হাসলেন।” কিছু অত্যুৎসাহী বিজেপি কর্মী ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনারকে অনুরোধ করেন, পদ্মফুল আঁকা স্কার্ফ কপালে বেঁধে ছবি তুলতে। ব্রুস সবিনয়ে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গের বামেদের ‘ঠাঁই নেই’ কানহাইয়ার বেগুসরাইতে
কেমন লাগল সভার মেজাজ? বাকনেলের কথায়, "রাজনীতি নিয়ে কিছু বলব না। তবে এত মানুষ এসেছেন, খুব সক্রিয়ভাবে তাঁরা রাজনীতি নিয়ে ভাবছেন, এটা গণতন্ত্রের পক্ষে খুবই ভাল। যে সরকারই আসুক, ব্রিটেন এবং ভারতের সম্পর্ক চিরকালই বন্ধুত্বপূর্ণ থাকবে বলেই মনে হয়।"
মোদীর সভায় এলেও প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা অবশ্য শোনা হয়নি ব্রুসের। তাঁর দুই ভারতীয় সহকর্মী বারবার অনুরোধ করছিলেন ফিরে যাওয়ার। তাঁদের যুক্তি, ভিড় ক্রমশ বাড়লে বেরোনো মুশকিল হবে। তাই মোদী সভায় আসার মিনিট পাঁচেক আগেই ব্রিগেড ছাড়েন ব্রুস বাকনেল। ফেরার পথে তাঁকে বারকয়েক জড়িয়ে ধরেন কয়েকজন বিজেপি কর্মী। একজনকে বলতে শোনা গেল, “সাহেব তো কী! এসেছে যখন, তখন মোদীর ভক্তই হবে।”