এই ভোটে ইভিএম ব্যবহার করা যাচ্ছে না, পরিবর্তে সাবেক ব্যালট পেপারেই ফিরতে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে। তবে এই ব্যবস্থা সারা দেশের জন্য নয়, কেবলমাত্র নিজামাবাদের জন্য। কিন্তু, হঠাৎ কেন এই ভোল বদল? জানা যাচ্ছে, এই কেন্দ্র থেকে বিপুল সংখ্যক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ফের ব্যালটের শরণাপন্ন হতে হয়েছে হায়দরাবেদের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্য্যালয়কে। প্রার্থীদের নামের তালিকা এতটাই দীর্ঘ যে ইভিএম-এ তা আঁটবে না। আর তাই জরুরী ভিত্তিতে হায়দ্রাবাদ সিইও অফিসের কর্মকর্তারা ব্যালট বক্সের ব্যবস্থা করছেন।
এত বেশি প্রার্থী কেন?
তেলেঙ্গানা জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে নিজামাবাদ কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কে চন্দ্রশেখর রাও এর কন্যা কে কভিতা। তবে, কভিতা ছাড়াও এই কেন্দ্র থেকে লড়ছেন আরও ১৮৪ জন। এই প্রার্থীদের মধ্যে ১৭৫ জনই কৃষক। কয়েক দশক ধরে হলুদের দাম সর্বনিম্ন হওয়ায় বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এই কৃষকরা। আর সেজন্যই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
আরো পড়ুন- বাংলার ৬ কেন্দ্রে ‘বিশেষ নজর’ কমিশনের
নির্বাচনী আধিকারিক রজত কুমার জানান, ৪টি ইভিএমকে একত্র করে মোট ৬৪টি নাম নেওয়া সম্ভব ,যার মধ্যে নোটাও থাকবে। তাই এক্ষেত্রে ব্যালট পেপার ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। জানা গিয়েছে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে ১৫ লাখ জাম্বো আকারের ব্যালট পেপার এবং একশোর কাছাকাছি ব্যালট বাক্সের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। এমন বিরাটাকার ব্যালট ছাপানোর জন্য বিভিন্ন প্রিন্টার নিয়েও আলোচনা চলছে। অন্যান্য জেলা ও প্রতিবেশী রাজ্যগুলি থেকেও ব্যালট বাক্স সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে খবর। সব মিলিয়ে এটি যে রীতিমতো সময়সাপেক্ষ কাজ, সে কথা জানিয়েছেন সিইও অফিসের এক কর্মী।
আরো পড়ুন- ক্ষমতায় এলে বাংলায় এনারসি আনবই: অমিত শাহ
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ১৯৯৬-এর পর এই প্রথম কোনও রাজ্যে ভোটের জন্য বিপুল সংখ্যক ব্যালট পেপার ব্যবহার করা হবে। নিজামাবাদে ২৪৫ টি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে টিআরএস, কংগ্রেস, বিজেপি এবং বামপন্থী প্রার্থী ছাড়াও রয়েছেন কৃষকেরা।
প্রসঙ্গত, কৃষকদের অবস্থার কথা মাথায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রার্থী প্রত্যাহার করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল টিআরএস নেতৃত্ব। তবে, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার পরও বেশিরভাগ কৃষক নিজেদের নাম তুলে নিতে অস্বীকার করেন এবং রীতিমতো বাদানুবাদের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ফলে নির্বাচন কমিশনকে বাধ্য হয় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে নির্বাচন করতে।
আরো পড়ুন অভিষেকের স্ত্রীর ব্যাগ তল্লাশিকাণ্ড গড়াল সুপ্রিম কোর্টে
নিজামাবাদ কেন্দ্রের অন্যতম প্রার্থী কাভিতা জানান, কংগ্রেস ও বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে কৃষকদের প্ররোচিত করেছে। নিজামাবাদের মানুষই এর জবাব দেবে।
উল্লেখ্য, নিজামাবাদের এই কৃষকরা বেশ কয়েক মাস ধরে প্রতিবাদ করছেন। তাঁদের দাবি, সরকার ন্যূনতম কুইন্টাল প্রতি ৯০০০টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েও কেবলমাত্র ৪৫০০টাকা করে দিচ্ছে।
এই প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেওয়া আনেশ রেড্ডী বলেন, "হলুদ চাষের জন্য আমরা একর প্রতি দেড় লক্ষ টাকা ব্যয় করি। প্রতি কুইন্টাল হিসাবে যার মূল্য হয় সাড়ে সাত হাজার টাকা, সেখানে কীভাবে আমরা প্রতি কুইন্ট্যাল ৪৫০০ টাকা করে নেব? তাই ভয়াবহ ক্ষতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা"।
তিনি আরও বলেন "আমরা ন্যাশনাল টারমারিক বোর্ড প্রতিষ্ঠা করতে চাই । ২০১৪ সালে, কাভিথা নিশ্চিত করেছিলেন যে বোর্ডটি প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি ২০১৭ সালে তিনি প্রাইভেট মেম্বার্স বিল আনেন। কিন্তু এটি পাস করানো হয়নি। ফলে বোদ্ধান, বালাকোন্ডা এবং আর্মুরের হাজার হাজার চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।"
Read the full story in English