ভোট মরশুমে একের পর এক বিতর্কে নাম জড়িয়েছে নতুন চ্যানেল নমো টিভির। আগামী ৪৮ ঘন্টায় যেসব এলাকায় ভোট হতে চলেছে, সেখানে নমো টিভিকে কোনোরকম নির্বাচনী প্রচার চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে না এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রাক রেকর্ডকৃত বক্তৃতাও সম্প্রচার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নির্বাচনী কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন দিল্লীর প্রধান নির্বাচনী আধিকারিকদের জানিয়ে দেয় যে বিজেপির মালিকানাধীন নমো টিভিকে ভোটের প্রতিটি পর্যায়ে নির্বাচনী নীরবতা বিধি মেনে চলতে হবে, এবং চ্যানেলের অনুষ্ঠান-বিজ্ঞাপনের ব্যয়ের সমস্ত হিসেব যথাযথভাবে চিহ্নিত করতে হবে। প্রচারপর্ব চলছে, এমন কোনও অনুষ্ঠান থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে, কিন্তু অবশ্যই তা ৪৮ ঘন্টার সময়সীমার আগে।
আরও পড়ুন: নমো টিভি: তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের জবাব চাইল নির্বাচন কমিশন
আগামী ১৮ এপ্রিল দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোটের জন্য মঙ্গলবার রাত থেকেই ৪৮ ঘন্টা ব্যাপী নির্বাচনী নীরবতা বিধি পালনের সময়সীমা শুরু হয়। দিল্লীর প্রধান নির্বাচনী দপ্তরের এক অফিসারের বক্তব্য অনুযায়ী, নমো টিভিকে জন প্রতিনিধি আইন, ১৯৫১ ধারা ১২৬ (আই) (বি) মেনে চলার এই নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিজেপির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিল তারা। এই আইন অনুযায়ী কোনও নির্বাচনী এলাকায় ভোটের দু'দিন আগে থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনোরকম প্রচার করা যাবে না, তা টেলিভিশন হোক কিংবা সিনেমা, অথবা অনুরূপ কোনও মাধ্যম।
নমো টিভি এমন একটি চ্যানেল যেখানে বিজেপির রাজনৈতিক বক্তব্য ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা দিয়ে অনুষ্ঠানগুলি সাজানো হয়ে থাকে, যা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যে যথেষ্ট স্বচ্ছতা প্রকাশ পেয়েছে। এর আগে নির্বাচন কমিশনের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছিল যে বিজেপি মদতপুষ্ট নমো টিভিকে "অবিলম্বে সরিয়ে নেওয়া" উচিত, কারণ তথ্য সম্প্রচার দপ্তরের জারি করা সম্প্রচারের সার্টিফিকেট ছিল না নমো টিভির হাতে।
আরও পড়ুন: নমো টিভি কি সব নিয়ম মেনে চলছে?
কমিশনের নির্দেশিকা আসার একদিন পর বিজেপি স্বীকার করেছিল যে নমো অ্যাপের একটি অংশ নমো টিভি, এবং এটি সম্পূর্ণভাবে বিজেপির আইটি সেল দ্বারা চালিত হয়। নমো টিভি একটি প্ল্যাটফর্ম সার্ভিস। এই প্ল্যাটফর্ম সার্ভিসের মাধ্যমে কিছু নির্দিষ্ট চ্যানেল স্থানীয় কেবল অপারেটর এবং ডিটিএইচ অপারেটরদের দেখিয়ে থাকে। যারা স্যাটেলাইট চ্যানেল সম্প্রচার করে, সেইসব সম্প্রচারকরা এ পরিষেবা দেয় না, এবং এখনকার নিয়মে এই চ্যানেলগুলি কোনওরকম অনুশাসনের আওতায় পড়ে না।
অন্যদিকে, স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলিকে ভারত সরকার দ্বারা রেজিস্টার্ড হতে হয়, অর্থাৎ তাদের সম্প্রচারের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অনুমতি লাগে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে যে এই চ্য়ানেলটি তাদের আওতাধীন নয়, কারণ এটি ডিটিএইচ অপারেটরদের বিশেষ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সম্প্রচারিত হচ্ছে। আম আদমি পার্টি এবং কংগ্রেস এই চ্যানেলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছে।
Read the full story in English