আদর্শ নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করার দায়ে সোমবার সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খান এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধীর নির্বাচনী প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এর কয়েক ঘন্টা আগেই কমিশন একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতীর নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে।
আজম খানের ওপর তিনদিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, ওদিকে মানেকা গান্ধী দু দিন প্রচার করতে পারবেন না। দুজনেরই শাস্তির সময়সীমা শুরু হবে মঙ্গলবার সকাল দশটা থেকে। আর তিনদিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় দফার লোকসভা নির্বাচন।
উত্তরপ্রদেশের রামপুরের বিজেপি প্রার্থী জয়া প্রদাকে নিয়ে অশালীন মন্তব্যের অভিযোগ উঠল সমাজবাদী পার্টি নেতা আজম খানের বিরুদ্ধে। সোমবার উত্তরপ্রদেশের সাহাবাদ থানায় আজম খানের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ফ্লাইং স্কোয়াডের অভিযোগের ভিত্তিতে সমাজবাদী পার্টির নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত হয়েছে।
বিজেপির দিক থেকে অভিযোগ, সমাজবাদি পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদবের উপস্থিতিতেই তাঁর নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী জয়া প্রদাকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন আজম খান। জয়া প্রদার সঙ্গে আর.এস.এস-এর যোগ নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে আজম খানের বিরুদ্ধে। তিনি জনতার উদ্দেশে বলেন, "আমার আপনার মধ্যে পার্থক্য কোথায়? ওঁর আসল চেহারাটা জানতে আপনাদের সময় লেগেছে ১৭ বছর। আমি ১৭ দিনে চিনে গেছি। ওঁর অন্তর্বাসও খাকি রঙের"।
জয়া প্রদা আজম খানের মন্তব্য প্রসঙ্গে বলেছেন, তিনি আদৌ অবাক হননি। জানিয়েছেন, "আজম খান নির্বাচনে জিতলে গণতন্ত্রে মহিলাদের কোনও জায়গাই থাকবে না। তাই ওঁকে নির্বাচন লড়ার অনুমতি দেওয়াই উচিত না।"
আরও পড়ুন, “কংগ্রেস ভেবেছিল বালাকোট হামলায় ১৯৬২-র পরিস্থিতি তৈরি হবে”
"বিজেপি প্রার্থী, আপনি দিল্লির মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে টিভি চ্যানেলকে বললেন আপনি রামপুরের দানবকে শেষ করতে যাচ্ছেন। দেড়শ খানা গুলি আমার বুকে মারুন তো। আমি অনুমতি দিচ্ছি, মারুন তো। কিন্তু আপনাকে আসতে হবে। বাইরের কাউকে পাঠাবেন না," বলেন আজম খান।
মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির মুখপাত্র চন্দ্রমোহন বললেন, "এবার সময় এসে গিয়েছে, মায়াবতী অথবা অখিলেশ এবার বলুন ওঁরা কিরকম প্রার্থীকে সমর্থন করছেন। আমরা চাই নির্বাচন কমিশন বিষয়টির দিকে নজর দিক। অখিলেশ যাদবের উপস্থিতিতেই অশালীন মন্তব্য করা হয়েছে। ওঁদের এবার স্পষ্ট করে দেওয়া উচিত, মহিলাদের সম্মান ওঁদের কাছে আদৌ গুরুত্বপূর্ণ কি না"।
মন্তব্যের জন্য আজম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এসপি মুখপাত্র রাজেন্দ্র চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান, ঘটনা সম্পর্কে তাঁর কাছে কোনও তথ্য নেই।
তবে জয়া প্রদার সঙ্গে আজমের রাজনৈতিক শত্রুতা অবশ্য আজকের নয়। ২০০৯ সালের লোকসভার প্রচার চলাকালীন জয়ার হার সুনিশ্চিত করতে অভিনেত্রীর ভুয়ো ছবি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন আজম খান। প্রসঙ্গত, ৫৬ বছরের আজম খান ৩১,০০০ ভোটে জিতে দ্বিতীয় বারের জন্য রামপুরের সাংসদ হয়েছেন।
Read the full story in English