General Election 2019: জোট জল্পনা জিইয়ে রাখল কংগ্রেস। ডায়মন্ড হারবার, তমলুক, বিষ্ণুপুর, আরামবাগ ও আসানসোল কেন্দ্র বামেদের জন্য ছেড়ে রেখে বুধবার ফের ‘জোট বার্তা’ দিলেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র সরাসরি জোট সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেও এদিন রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যের গলায় ভিন্ন সুর শোনা গেল। ৫টি লোকসভা কেন্দ্র বামেদের জন্য ছাড়া হলেও রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে ইতিমধ্যেই ঘোষিত কংগ্রেস প্রার্থীদের নাম পুনর্বিবেচনার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। বামেদের পক্ষ থেকে এই বার্তার প্রতি ইতিবাচক প্রত্যুত্তরের আশা প্রকাশ করেছেন প্রদীপবাবু।
লোকসভা ভোটের আরও খবর পড়ুন, এখানে
প্রদীপ এদিন জানিয়ে দেন, কংগ্রেস এ রাজ্যে সর্বাত্মক জোট চেয়েছিল। তাঁর ভাষায়, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম দুটো পতাকা একসঙ্গে মিশে যাক।’’ কিন্তু, বামেরা শুধুমাত্র আসন সমঝোতার পথে হাঁটায় রীতিমতো হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন, Lok Sabha Election 2019: বাম-কং জোট হচ্ছে না: কংগ্রেস ভিখিরি হয়ে যায়নি, তোপ সোমেনের
প্রসঙ্গত, শুক্রবার এ রাজ্যের ২৫টি আসনে বাম প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। ছেড়ে রাখা হয়েছিল, গতবার কংগ্রেসের জেতা মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, বহরমপুর, জঙ্গিপুর আসন। বামফ্রন্টের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, বাকি ১৭টি আসনে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে প্রার্থী দেওয়া হবে। এই ১৭টি আসনে কোনওটিতে বামেরা লড়বে, কোনওটিতে কংগ্রেস লড়বে। এরপরই সোমেন মিত্র জানান, এক তরফা প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে বামেরা। রবিবার এ রাজ্যের কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে দিল্লি যান সোমেন। সোমবার কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। আর তারপরই সোমবার মধ্যরাতে ১১ আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেয় কংগ্রেস। এই তালিকায় দেখা যায়, গতবার বামেদের জেতা রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসনেও প্রার্থী ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। এরপর মঙ্গলবার ১৩ আসনে দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। এদিনও কংগ্রেসের গতবার জেতা ৪ আসন ছেড়ে রেখে ‘গুড জেস্চার’ দেখায় বামফ্রন্ট। পাশাপাশি বিমান বসু জানিয়ে দেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা অর্থাৎ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্যে ‘ইতিবাচক সাড়া’র অপেক্ষায় থাকবে বামফ্রন্ট। বামেদের দেওয়া ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই এদিন বিকেল ৩টে ৪৫ মিনিট নাগাদ বিধান ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে ৫ আসন ছাড়ার বার্তা দেন প্রদীপ ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন, Lok Sabha Election 2019: ‘হাত’ ধরার রাস্তা খোলা রেখে দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ বামেদের
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন, রায়গঞ্জ এবং বেশ কয়েকটি আসনে গত নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোট শতাংশ বামেদের তুলনায় অনেক কম থাকা সত্ত্বেও অমূলক ভাবে এবারও সেখানে প্রার্থী দিতে চাইছেন সোমেন-প্রদীপরা। এদিন প্রদীপবাবু বলেন, অনেক আসনে কংগ্রেসের ভোট শতাংশ বেশি থাকা সত্ত্বেও তা বামেদের জন্য ছাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বিমানবাবুরা সে আসনগুলোর কথা না বলে, কেবল কংগ্রেসের ভোট শতাংশ কম থাকা আসনগুলির কথাই তুলে ধরছেন। বিজেপি-তৃণমূলকে রুখতে একসঙ্গে কোমরবেঁধে লড়াই করার বিষয়ে যে আলোচনা অতীতে বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বের হয়েছিল, এদিন সেই ‘বৃহত্তর স্বার্থে’র কথাও বাম নেতৃত্বকে স্মরণ করে দিতে চেয়েছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য।
৫ আসন ছেড়ে বামেদের কোর্টে জোটের বল ঠেলে দিলেও বিমান বসুর মতো কোনও সময় বেঁধে দেননি প্রদীপ ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, বামেরা নিশ্চয়ই বৃহত্তর স্বার্থের কথা মাথায় রেখে এই জোট বার্তার প্রত্যুত্তর দেবেন।