General Election 2019: রাজ্যে কংগ্রেস সংগঠন তলানিতে ঠেকলেও, মুর্শিদাবাদ জেলায় দলের দাপট অক্ষুণ্ণ রাখতে পেরেছেন বহরমপুরের বিদায়ী সাংসদ অধীর চৌধুরী। সুদীর্ঘ সাড়ে তিন দশকের বাম শাসনের পর ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটে গেলেও, মুর্শিদাবাদ রাজনীতি চলেছে অধীর চৌধুরীর অঙ্গুলি হেলনেই। এবার অধীরের সেই আধিপত্য কেড়ে নিতে আদাজল খেয়ে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার বহরমপুরে নির্বাচনী প্রচারে এসে অধীর রঞ্জনকে দু'ভাবে ধাক্কা দিলেন মমতা। মুর্শিদাবাদে দলকে প্রাসঙ্গিক রাখতে পারায় কংগ্রেস মহলে অধীর যে বিশেষ কৃতিত্ব পেয়ে থাকেন, এদিন সে বিষয়েই আক্রমণ হানেন একদা যুবকংগ্রেস নেত্রী মমতা। অন্যদিকে, অধীর চৌধুরীর 'কুকীর্তি'র খতিয়ানও তুলে ধরেও চরম আক্রমণাত্মক বক্তৃতা রাখেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
লোকসভা নির্বাচনের আরও খবর পড়ুন, এখানে
শুক্রবার মমতা বলেন, ‘‘বহরমপুরে কংগ্রেসকে যদি কেউ তৈরি করে থাকে, তাহলে দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আমি করেছি। ১৯৯৮ সালে তৃণমূল তৈরি হল। আমার ছবি দেখিয়ে কংগ্রেস বলত, ও তো কংগ্রেসর সঙ্গেই রয়েছে। সব জেলাতে তৃণমূল গড়তে পারলেও, মুর্শিদাবাদ ও মালদা জেলায় পিছিয়ে ছিলাম একথা সত্য...এবার মুর্শিদাবাদ ও মালদায় সব আসনে তৃণমূল জিতবে’’।
অধীর গড়ে দাঁড়িয়ে অধীর চৌধুরীকেই এদিন ফের চরম আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৩ এপ্রিল (মঙ্গলবার) মুর্শিদাবাদে ভোট। এর আগে শুক্রবার মুর্শিদাবাদের 'বেতাজ বাদশা' অধীরের নাম না করে মমতা বলেন, ‘‘সংসদের অধিবেশনের শেষ দিনও হাউসে দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে চোর বলেছেন...আর, বিজেপির লোকেরা টেবিল চাপড়াচ্ছে। তৃণমূল যদি চোর হ্যায়, তাহলে তুমি ডাকাতদের সর্দার’’। এখানেই না থেমে মমতা আরও বলেন, ‘‘আপনাদের এখানকার সাংসদ...কত কিছুর সঙ্গে যুক্ত। যদি বলি, তাহলে আমার মুখ খসে পড়বে। তবুও বলব...বৈদ্যুতিন চুল্লিতে কীভাবে লোক মারা গেল? জোড়া খুন কী করে হয়েছিল? বৈদিক ভিলেজ কী করে হল? সব জানি। কিন্তু বলি না। কারণ, রাজনৈতিক সৌজন্য’’।
আরও পড়ুন: মমতা আরএসএস কোর কমিটির সদস্য, ‘মনে হচ্ছে’ অধীরের
এদিন বহরমপুরের সভায় সারদা প্রসঙ্গ টেনে অধীরকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘‘যেদিন সংসদের শেষ অধিবেশন ছিল। সেদিনও হাউসে দাঁড়িয়ে গালাগাল দিচ্ছে। বলছে তৃণমূল নাকি চোর। আমি বলছি, তৃণমূল যদি চোর হয়, তাহলে তুমি ডাকাতদের সর্দার। তৃণমূলকে চোর বলতে লজ্জা করে না? কাকে মদত দিচ্ছো? বিজেপির লোকেরা টেবিল চাপড়াচ্ছে। আর তুমি সারদা-নারদা করছো। বুকের পাটা থাকলে যাও, ১৯৮০ সাল থেকে সারদা হয়েছে, সিপিএম-বিজেপির সব কটা লোক জেলে যাবে। তুমি ছিলে, তোমার বন্ধু ছিল। সিপিএম বিজেপিকে ছোঁয়েনি, কংগ্রেসকে ছোঁয়নি। তৃণমূলকে এরা কেন গালাগাল করে জানানে, কারণ তৃণমূল ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ে। আমরা মরবার জন্য তৈরি থাকি, বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। তোমরাই সবথেকে বিশ্বাসঘাতক। দিনের বেলা লাল দল, আর রাতে গেরুয়া দলের সঙ্গে ভাব করো’’।
আরও পড়ুন: কেন তৃণমূল সরকার আসার পর সারদা তদন্ত: মমতা
একইসঙ্গে এদিনও কংগ্রেসের সঙ্গে আরএসএস-এর যোগ নিয়ে সরব হন মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘‘আরএসএস কাজ করছে এখানে। বাইরে থেকে প্রচারক নিয়ে এসেছে’’। প্রসঙ্গত, এর আগেও মমতা অভিযোগ করেন, বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরীকে সাহায্য করছে আরএসএস। সেইসঙ্গে সারদা-নারদ তদন্ত নিয়েও অধীরের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মমতা। কেন তৃণমূল সরকার আসার পর সারদা তদন্ত, সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা।