General Election 2019: লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-তে যোগ দিতে পারেন? রীতিমতো শ্লেষের সুরে এ সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে নারাজ একদা মমতার 'ডানহাত' তথা বর্তমানে বিজেপির অন্যতম হেভিওয়েট নেতা মুকুল রায়। শুক্রবার দিনভর রাজ্য রাজনীতি দেখল এক অন্য মুকুলকে। প্রথমে রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অফিসের মেঝেয় বসে জঙ্গি কায়দায় অবস্থান। এরপর সেখান থেকে রাজ্য বিজেপির দফতরে পৌঁছে আগুনে সাংবাদিক বৈঠক। গতকাল প্রথম দফার ভোটে রাজ্যের যে দুটি আসনে নির্বাচন হয়েছে, সেগুলির আগাম ফলাফলও ঘোষণা করেছেন মুকুল রায়। সব মিলিয়ে বরাবর ঠান্ডা মাথায় কৌশল রচনায় 'সিদ্ধহস্ত' মুকুল রায়ের অচেনা রূপ দেখল কলকাতা।
লোকসভা ভোটের আরও খবর পড়ুন, এখানে
সম্প্রতি দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন দাবি করেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের পর কেন্দ্রে সরকার গড়বে তৃণমূল। পরবর্তীকালে কার্শিয়ঙের সভাতেও একই কথা শোনা গিয়েছে খোদ তৃণমূল সুপ্রিমোর কণ্ঠে। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মুকুলের মন্তব্য, ‘‘২০১৪ সাল থেকে বলছে বড় ভূমিকা নেবে। কিন্তু, সরকার গড়বে কে’’? মমতা এনডিতে যোগ দিলে নেবেন? এ প্রশ্নের জবাবে মুকুল বলেন, ‘‘কংগ্রেসেরও সঙ্গেও ছিলেন, এনডিএতেও উনি ছিলেন। দল পাল্টাতে ওঁর জুড়ি আর কেউ নেই। ১ মিনিটের মধ্যে দল পাল্টি করার জুড়ি নেই আর। ভবিষ্যতে কী হবে বলতে পারছি না।’’
আরও পড়ুন: বাপরে বাপ! মোদী ভয়ঙ্কর মস্তান
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা না বলতে পারলেও, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসনের ভোটের ফলাফল আগাম বলে দিয়েছেন 'ভোটের অঙ্কে ওস্তাদ' মুকুল। এদিন 'আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে' তিনি বলেন, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে বিজেপিই জিতছে। মুকুলের দাবি, ‘‘এতকিছু সত্ত্বেও জোর দিয়ে বলছি, দুটো নির্বাচনের ফলাফলই বিজেপির পক্ষে যাবে। ভোটের ফলাফলে বিজেপি ২, অন্যান্যরা শূন্য, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে একথা বলছি।’’
এদিন প্রথম দফার ভোটে বাংলার 'ফলাফল' ঘোষণার পাশাপাশি মুকুল আরও বলেন, "আমরা জিতব জানি, তা সত্ত্বেও সুষ্ঠু ভোটের দাবি জানিয়ে ফের কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছি। কারণ আমরা চাই, বাংলার প্রত্যেকটা মানুষ যেন অবাধে ভোট দিতে পারেন।’’ মুকুল রায় এদিন ফের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের বদলির দাবি তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘যেসব পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের হাতে পঞ্চায়েত ভোট নিরপেক্ষ ভাবে হয়নি, তাঁদের যাতে ভোটের দায়িত্ব না দেওয়া হয়, সে দাবি জানিয়েছি আমরা।’’ একথা বলতে গিয়ে মুকুলের দাবি, ‘‘পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও তা কাজে লাগানো হয়নি। আলিপুরদুয়ারের রিটার্নিং অফিসার শুভাঞ্জনবাবু মমতার ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন। যার ফলে কুমারগ্রাম, তুফানগঞ্জ, নাগরাকাটা, ফালাকাটা-সহ বেশ কিছু বুথে সিআরপিএফ থাকা সত্ত্বেও কাজে লাগানো হয়নি।"
আরও পড়ুন: অভিষেক-পত্নীকাণ্ডে মমতা সরকারকে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের
অন্যদিকে, কোচবিহারের ২৯৭টি বুথ ও আলিপুরদুয়ারের ৪২টি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন মুকুলরা। এ প্রসঙ্গে একদা তৃণমূলে দু'নম্বর মুকুল বলেন, ‘‘কোচবিহারের যেসব জায়গায় ভোট হয়নি, সেখানে পুনরায় ভোট নেওয়া হোক। প্রিসাইডিং অফিসারের রিপোর্টের ভিত্তিতে নয়, কমিশনের ওয়েবকাস্টিং দেখে স্ক্রুটিনি করা হোক, এই দাবি আমরা কমিশনের কাছে রেখেছি।’’ উল্লেখ্য, আজ রাজ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অফিসে মেঝেতে বসে বিক্ষোভ দেখান মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদাররা। মুকুল বলেন, ‘‘জোরালো ভাষায় বলেছি, কেন্দ্রীয় বাহিনী কম থাকলে নির্বাচন কমিশনকে বলুন।’’