General Election 2019: লোকসভা ভোটের মুখে রাজ্যের দলবদলের রাজনীতিতে নয়া মোড়। এতদিন তৃণমূল নেতারা দল ছেড়ে পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নিচ্ছিলেন। রাজ্যের শাসকদলের পাশাপাশি আরও দুই বিরোধী দল তথা বাম ও কংগ্রেস থেকেও অনেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু সেই ছবিটা এবার বদলাল। পদ্মবাহিনী ছেড়ে এবার তৃণমূলে যোগ দিয়ে দলবদলের রাজনীতিতে নয়া মোড় এনে দিলেন বিজেপি নেতারা। শুধু তাই নয়, দলবদল নিয়ে বিজেপিকে কার্যত পাল্টা জবাব দিল তৃণমূল। অর্জুন সিংয়ের বিজেপিতে যোগদানের পরের দিনই ভাটপাড়া, বারাকপুর এলাকা থেকে বিজেপি কর্মীরা যোগ দিলেন ঘাসফুল শিবিরে।
লোকসভা ভোটের আরও খবর পড়ুন, এখানে
শুক্রবার তৃণমূলের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন ‘সিং পরিবারের’ দুই সদস্য। এদিন তৃণমূলে যোগ দিলেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য ধরমপাল গুপ্ত। জোড়াফুল শিবিরে যোগ দিয়েছেন বারাকপুর মহকুমায় বিজেপির সম্পাদক প্রমোদ সিং। শুধু বিজেপি নেতারাই নন, কংগ্রেস, সিপিএম থেকেও এদিন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন একাধিক নেতা। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ শ্যাম ও সিপিএম নেতা সঞ্জয় সিং এদিন জোড়াফুল পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন। পাশাপাশি, ২০১৬ সালে ভাটপাড়ার নির্দল প্রার্থী জিতেন্দ্র সাউও যোগ দিয়েছেন মমতার দলে। একথা শুক্রবার জানান তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থ বলেন, ‘‘আরও অনেকে আবেদন করেছেন। সকলে দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে নতুন জীবন লাভ করলেন, দল আরও মজবুত হবে।’’
আরও পড়ুন, West Bengal Lok Sabha Elections 2019 LIVE Updates: অর্জুনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ তৃণমূলের
এ প্রসঙ্গে দলত্যাগী নেতাদের নাম না করে আক্রমণের সুরে পার্থ বলেন, ‘‘মমতার ছবি নিয়ে যাঁরা নেতা হলেন, তাঁরা দলকে পিছন থেকে ছুরি মারার ব্যবস্থা করলেন, তাদের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত জনবিক্ষোভ হচ্ছে। সকলে মিলে একজোট হয়ে লড়ব।’’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দেন ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং। এর আগে বিষ্ণুপুরে তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও বোলপুরের বহিষ্কৃত সাংসদ অনুপম হাজরারাও বিজেপিতে যোগ দেন। অর্জুন সিংয়ের বিজেপিতে যোগদান তৃণমূলের কাছে ‘বড় ধাক্কা’ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এমতাবস্থায় লোকসভা ভোটের মুখে এই মুহূর্তে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষকে টেক্কা দিতে তাই মরিয়া মমতা বাহিনীও।
আরও পড়ুন, ‘গদ্দার’ থেকে ‘কৃষ্ণ’, মুকুল-অর্জুনের সমঝোতা প্রকাশ্যে
অন্যদিকে, মমতার একদা প্রধান সেনাপতি মুকুল রায়ই তৃণমূল সাংসদদের ‘ভাঙিয়ে’ বিজেপিতে নিয়ে আসার পুরোধা। কয়েকদিন আগে ‘বিনা নিমন্ত্রণে’ বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের বাড়ি গিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন মুকুল। এ নিয়ে তড়িঘড়ি বিধাননগরের কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে বসার নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং তৃণমূলনেত্রী। বৈঠক শেষে সব্যসাচীকে সঙ্গে নিয়ে দলের একতার বার্তাই দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ফিরহাদ হাকিমরা। ‘ভিখিরি’র মতো মুকুল দরজায় দরজায় ঘুরছেন বলেও কটাক্ষ করেন ফিরহাদ।
আরও পড়ুন, আগামী দিনে তৃণমূলেও যোগ দিতে পারি: বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়
দলবদল প্রসঙ্গে তৃণমূলকে আক্রমণ করে দিলীপ শুক্রবার বলেন, ‘‘যেখানে ওরা পঞ্চায়েত ভাঙার চেষ্টা করছে, আমরা সংসদের সদস্য ভাঙিয়ে নিয়ে আসছি। ওরা জেলা পরিষদ ভাঙার চেষ্টা করছে, আমরা বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিয়ে আসছি।’’
অন্যদিকে, এদিনও বিজেপিতে যোগ দিলেন কয়েকজন। পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নেন বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সোমেন অধিকারী, জাভেদ খানের প্রাক্তন সহকারী শেখ রফিক সরকার-সহ আরও কয়েকজন।