চরম উত্তেজনা নন্দীগ্রামে। ভোট শুরুর প্রায় সাড়ে ৬ ঘন্টা পর এদিন নন্দীগ্রামের বয়াল মকতব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান মমতা। আর তারপর থেকেই সেখানে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। তৃণমূল নেত্রীকে দেখেই বুথ ও সংলগ্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। কেন তৃণমূল প্রার্থী বুথে রয়েছেন? তিনি বহিরাগতদের নিয়ে এসেছেন। এই অভিযোগে সরব হন বিজেপি সমর্থকরা। তুমুল উত্তেজনার জেরে বয়ালের প্রাথমিক বিদ্যালয়েপ্রায় ৪৫ মিনিট ভোট গ্রহণ স্থগিত হয়ে যায়। পরে অবশ্য ফের তা চালু হয়। তখনও বুথেই বসে মমতা।
এদিন দুপুরের পর থেকেই বয়াল মকতব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনী ও ব়্যাফ। এমনতী বিবদমান দুই দলের লোকেদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে লাঠি চার্জ করতে হয়। ততক্ষণে অবশ্য বুথের বাইরের দিক ঘিরে ফেলে মুখ্যমন্ত্রীর বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী। বুথের মধ্যেই তাঁরে ঘিরে ছিলেন সুরক্ষাকর্মীরা।
ঘটনার প্রায় ঘন্টা দেড়েক পর কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়। আসে বিশেষ বাহিনী। পরে প্রায় ঘন্টা দু'য়েক পর বয়াল মকতব প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বাইরে বের করে আনা হয় মুখ্যমন্ত্রীকে।
বয়ালে বুখের বাইরে নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা এক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের কথায়, 'সকাল থেকে এখানে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট চলছিল। হঠাই মুখ্যমন্ত্রী আসতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।'
এদিনর ভোটে নজরে নন্দীগ্রাম। আর ভোট ঘিরে সেখানেই গন্ডগোল বাধে। বয়াল, সোনাচূড়া,গোকুলনগর সহ নন্দীগ্রামের বিভিন্ন বুথে তৃণমূল এজেন্টদের বসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সবক্ষেত্রেই অভিযোগের তির বিজেপির দিকে। এই সব অভিযোগ প্রথম থেকে আসছিলো তৃণমূল নেত্রী তথা ওই কেন্দ্রের জোড়া-ফুল প্রার্থীর কাছে। শেষ পর্যন্ত ভোট শুরুর ৬ ঘন্টা পর রেয়াপাড়ার ভাড়া বাড়ি থেকে ঠা ঠা রোদ্দুর উপেক্ষা করেই হুইলচেয়ারে বেরিয়ে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রথমেই বয়ালে শংকরবেতার গ্রামের সাত নম্বর বুথে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে এরপর ওই এলাকার গ্রামে ঢুকে পড়েন তিনি।কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট দিতে বাধা দিচ্ছে, মারধর করছে বলে তাঁকে জানান স্থানীয় ভোটাররা। মমতার কাছে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান সকলে। এর মাঝেই বয়ালে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে বিজেপি কর্মীরা 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি দিতে শুরু করে।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'সকাল থেকে কাউকে ভোট দিতে দেয়নি। ৬৩টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ৮০ শতাংশ ছাপ্পা ভোট হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশেই এই কাজ হয়েছে। কিন্তু অভইযোগ সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন। আমরা আদালতে যাব।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন