PM Modi Meditation: কন্যাকুমারী সফরে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়ালে ১ জুন সন্ধ্যা পর্যন্ত ধ্যানমগ্ন থাকবেন। আজ তার ধ্যানের দ্বিতীয় দিন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর ধ্যানের একটি ভিডিও সামনে এসেছে, ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে গেরুয়া কুর্তা এবং গামছা গায়ে দেখা যাচ্ছে। তিনি স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তির সামনে বসে ধ্যান করছেন।
১৩১ বছর আগে এখানেই ধ্যানমগ্ন হয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। কন্যাকুমারীর সেই বিবেকানন্দ রকেই এবার ধ্যানে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এখানে ধ্যানে বসেই মোদী উন্নত ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ধ্যানমগ্ন থাকার সময় মোদী ডায়েটে থাকছে মূলত থাকছে ডাবের জল, আঙুর ফলের রস এবং জুসের মতো তরল খাবার। ৪৫ ঘণ্টা ধ্যানমগ্ন থাকবেন তিনি। কারুর সঙ্গে কোন কথা বলবেন না মোদী। টানা ৪৫ ঘন্টা মৌনব্রত পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী। জানা গিয়েছে ওই ধ্যানের জায়গা থেকে বাইরেও আসবেন না তিনি। বেশিরভাগ সময়টাই কাটাবেন ধ্যান করে।
বৃহস্পতিবার কন্যাকুমারী পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। কন্যাকুমারী পৌঁছে ভগবতী আম্মান মন্দিরে প্রার্থনা করেন ও পুজো দেন প্রধানমন্ত্রী । লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শেষ হওয়ার পরে, প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রতিবার আধ্যাত্মিক যাত্রায় যান এবং ২০১৯ সালের ভোট প্রচারের পরে, তিনি কেদারনাথ গিয়েছিলেন এবং ২০১৪ সালে, মোদী প্রতাপগড়ে গিয়েছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ এখানে ভবিষ্যতে একটি উন্নত ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন। এই সেই জায়গা যেখানে তিনি ভারত মাতার দর্শন করেছিলেন। এই স্থানেই তিনি তার বাকি জীবন মানুষের জন্য উৎসর্গ করার স্বপ্ন দেখেছিলেন।
আরও পড়ুন - < Prajwal Revanna Arrest: দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার দেবেগৌড়ার নাতি, SIT-র ম্যারাথন জেরার মুখে প্রজ্জ্বল রেভান্না >
বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুরে একটি নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য রেখে মোদী তাঁর ২৪-এর লোকসভা ভোটের নির্বাচনী প্রচারপর্ব শেষ করেছিলেন। আগামীকালই সপ্তম ও শেষ দফার ভোট। প্রধানমন্ত্রী মোদী ১৬ মার্চ কন্যাকুমারী থেকে তার নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। গত ৭৫ দিনে প্রধানমন্ত্রী ১৮৩টি নির্বাচনী কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে একাধিক নির্বাচনী সমাবেশ ও রোড শো। এগুলি ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী মোদী বিভিন্ন মিডিয়া প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮০ টি সাক্ষাত্কারও দিয়েছেন, যেখানে তিনি সরকারের করা উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এছাড়াও, ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ, সিএএ, অযোধ্যায় রাম মন্দির এবং ৩৭০ ধারার মতো বিভিন্ন ইস্যুতে বিরোধী দলগুলিকে তিনি কোণঠাসা করেন।
কন্যাকুমারী নানাদিক থেকে বিশেষ
কন্যাকুমারী ভারতের জন্য বিভিন্ন দিক থেকে বিশেষ। এখানেই ভারতের পূর্ব এবং পশ্চিম উপকূলরেখা মিলিত হয়েছে। কন্যাকুমারীতে আরব সাগর, ভারত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগর মিলিত হয়। একভাবে কন্যাকুমারীতে গিয়ে জাতীয় ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
জাতীয় ঐক্যের ইঙ্গিত
এই ভৌগোলিক এলাকার আরেকটি গুরুত্ব হল কন্যাকুমারীর এই স্থানটি ভারতের সবচেয়ে দক্ষিণ প্রান্ত। এছাড়া ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলের রেখা এই স্থানে মিলিত হয়েছে। এছাড়াও এটি ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরের মিলনস্থল। বিশেষজ্ঞদের মতে, কন্যাকুমারীতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতীয় ঐক্যের ইঙ্গিত দিচ্ছেন।
এদিকে মোদীর ধ্যান নিয়ে চলছে রাজনৈতিক ঝড়। একদিন পরেই সপ্তম ও শেষ দফার ভোটগ্রহণ। এমন পরিস্থিতিতে তিনি পরোক্ষভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মোদীর ধ্যান চলবে ৪৫ ঘণ্টা। এই ৪৫ ঘন্টা কঠোর ধ্যানের সময় তিনি স্রেফ তরল খাবার খাবেন। কারুর সঙ্গে কোন কথা বলবেন না তিনি। শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে তিনি নারকেল জল এবং আঙুরের জ্যুস পান করবেন। ১ জুন ধ্যান শেষের পর প্রধানমন্ত্রী মোদী সাধু তিরুভাল্লুর মূর্তি পরিদর্শন করবেন। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর ফোকাস নিয়ে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য প্রায় দু'হাজার পুলিশ কর্মী মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি ভারতীয় কোস্টগার্ড ও ভারতীয় নৌবাহিনীও কড়া নজরদারি চালাচ্ছে।