যে জঙ্গলমহলকে এক সময় হাতিয়ার করে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস, সেই জঙ্গলমহল থেকেই তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করার ডাক দিলেন এক ঝাঁক বিজেপি নেতা। বুধবার ঝাড়গ্রামে শালবনির রাবন পোড়া ময়দানে বিজেপির ডাকে 'গণতন্ত্র বাঁচাও সভা' থেকে তৃণমূলকে হঠানোর ডাক দিলেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, যিনি শেষ মুহূর্তে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের জায়গা নিয়েছিলেন, রাজ্য বিজেপির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা।
স্মৃতি ইরানি তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশকে কটাক্ষ করে বলেন, "মোদীজিকে ভয় পেয়ে সকলে এক হয়েছে, দেশের বিকাশের কথা ভুলে গিয়ে সকলে মোদীকে নিয়েই বলে গেলেন।" তিনি আরো বলেন, "দিদির মনে ভয় ধরেছে, তাইতো হেলিপ্যাডে আমাকে নামতে অনুমতি দেয়নি। জোর যার ভোট তার, এ জিনিস বাংলায় আর হতে দেওয়া যাবে না।" তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে দুর্নীতির কথা বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, "তৃণমূলে তোলাবাজি ট্যাক্স, চাকরি পেতে গেলে ট্যাক্স, কলেজে ভর্তি হতে গেলে ট্যাক্স, বাড়ি বানাতে গেলে ট্যাক্সের যন্ত্রণায় বিব্রত জঙ্গলমহলের মানুষ। দিদি বাংলার এমন অবস্থা করে রেখেছেন।" এই অবস্থার পরিবর্তন হবেই বলে দলীয় কর্মীদের তিনি আশ্বস্ত করেন।
আরও পড়ুন: ‘বিজেপির চোখে নেতাজী দেশনায়ক নন’, বললেন মমতা
স্লোগান তুললেন লকেট চট্টোপাধ্যায়বিজয়বর্গীয় বলেন, "বাংলার পাপ্পুর (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) মুখ্যমন্ত্রী হওয়া, দিদির প্রধানমন্ত্রী হওয়া, বা দিল্লির পাপ্পুর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন কোনদিন পূরণ হবে না।" দিলীপ ঘোষ তাঁর ভাষণে তৃণমূল কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলা করতে এলে কোমর ভেঙে রেখে দেবো, কোনো হাসপাতালেই তার চিকিৎসা হবে না।" তিনি আরো বলেন, "জঙ্গলমহলে সিন্ডিকেট আছে শিক্ষা নেই, মানুষ এর জবাব দেবেন, জঙ্গলমহলের একটা লোকসভা আসনেও তৃণমূলকে জিততে দেব না।" রাজ্য বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় বক্তব্যের পাশাপাশি স্লোগান তোলেন, "জঙ্গলমহল বদলে দিন, তৃণমূলকে বিদায় দিন।" তাঁর কটাক্ষ, "সিবিআই-এর হাত থেকে বাঁচতে ব্রিগেডের ময়দানে সকলে হাত মিলিয়েছে।" ফের স্লোগান তোলেন, "জঙ্গলমহল ডাকছে, বিজেপি আসছে।"
বিজেপির গণতন্ত্র বাঁচাও সভায় এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রাজ্য নেতা শমীক ভট্টাচার্য, সায়ন্তন বসু প্রমুখ। সভায় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল উল্লেখযোগ্য।