মঙ্গলবার রাতেই নিরাপত্তাজনিত কারণে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে পূর্ব ত্রিপুরা কেন্দ্রের লোকসভা নির্বাচনের দিন। ১৮ এপ্রিলের বদলে এই আসনে এবার ভোট গ্রহণ করা হবে ২৩ এপ্রিল। বুধবার পূর্ব ত্রিপুরার আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলেন রাজ্য নির্বাচন কর্তৃপক্ষ।
ত্রিপুরার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক শ্রীরাম তরণীকান্তি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, "কড়া নজরদারির ব্যাপারে আমরা আরও জোর দিচ্ছি। বেশ কিছু সন্দেহজনক মানুষ আশেপাশে রয়েছেন। তাঁদের কথা মাথায় রেখে নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে। সমস্যা তৈরি করতে পারেন, সম্ভাব্য এরকম কয়েকজনের বিরুদ্ধে আমরা পদক্ষেপ নিতে পারি।" কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পুলিশ বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে।
লোকসভার দু'টি আসনের জন্য ত্রিপুরার নির্বাচনে আগেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬৪টি কোম্পানি পাঠানো হয়েছিল।মঙ্গলবার রাতে এক সাংবাদিক বৈঠকে তরণীকান্তি বলেন, নিরাপত্তার কারণেই পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্রে ভোট পিছিয়ে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রাজ্য নির্বাচন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ২৩ এপ্রিলের মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার, এবং ভোটদাতাদের আস্থা অর্জন করার।
আরও পড়ুন, ভেলোরের পর এবার পূর্ব ত্রিপুরা, পিছিয়ে গেল নির্বাচন
আগরতলা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে খোয়াই জেলার কল্যাণপুর অঞ্চলে ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছিল একদল লোক। তাদের থামাতে গেলে গোবিন্দ দাস নামে পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টরের ওপর হামলা করে দুষ্কৃতীরা।
খোয়াইয়ের পুলিশ সুপার কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্তী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, পূর্ব ত্রিপুরার স্থানীয়দের ভোট দেওয়ার ব্যাপারে ভয় দেখাচ্ছিলেন এক দল লোক। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাঁচজনের মধ্যে দু'জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৩২ এবং ৩৫৩ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের স্থানীয় আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বুধবার বিকেলবেলা।
ত্রিপুরা বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, কমিশনের নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন। "স্বাধীন এবং অবাধ ভোটের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তবে নির্বাচন ঘিরে যে অশান্তি হচ্ছে তা মেটানোর জন্য মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি," জানান তিনি।
বিরোধী সিপিআই (এম) এবং কংগ্রেস, উভয়পক্ষ থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটের সময়ে হিংসা ছড়ানো, রিগিং, বুথ আটকে দেওয়া এবং ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, এই নিয়ে দেশের দুটি লোকসভা কেন্দ্রে বাতিল করা হলো ১৮ এপ্রিলের ভোটদান পর্ব। সোমবার তামিল নাড়ুর ভেলোরে নির্বাচন বাতিল করতে চেয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে আবেদন করে নির্বাচন কমিশন, যে আবেদন মঞ্জুর করতে কার্যত বাধ্য রাষ্ট্রপতি। ভেলোরে ভোটারদের টাকা দিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ কমিশনের। সমগ্র তামিলনাড়ুতেই নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয়েছে ১৮ এপ্রিল।