ছোটা নাগপুর, বৈরি, বানজারা, সাঁওতালি- একের পর এক বিরল ভাষার স্ক্রিনিং হচ্ছে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে। কেবলমাত্র ২০১৯-এ নয়, বিগত পাঁচ বছর ধরেই প্রায় মুছে যাওয়া ভাষার ছবি দেখানো হচ্ছে শহরের এই ফেস্টিভালে। এবারে সেই তালিকায় প্রথমবার দেখানো হচ্ছে জোহার অর্থাৎ সাঁওতালি ভাষার ছবি। পরিচালক দশরথ হাঁসদা এদিন বললেন, ''সাঁওতালি ভাষায় এখন আর কেউ পড়াশোনা করতে চায়না। প্রত্যেকে হয় হিন্দি নয়তো ইংরাজী ভাষা শিখেই সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কেউ উচ্চশিক্ষার পর নিজের ভাষায় ছবি তৈরি করতে ইচ্ছুক নয়''।
তবে আঞ্চলিক ভাষায় ছবি তৈরি তো হল, কিন্তু স্ক্রিনিং। ভিক্টর দশরথের বললেন, ''একসময় শিলিগুড়ির হলে আমার তৈরি প্রথম ছবি দেখানোর আর্জি করলে, হল কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন, এই ছবি কেউ দেখেনা। পুরো হল বুক করে নিয়ে ছবির স্ক্রিনিং করতে হয়েছিল। চান্দোলিখ ছবির স্ক্রিনিং হচ্ছে ফেস্টিভালে।'' এখনকার সাঁওতালি ছেলে-মেয়েরা ফিল্ম স্কুলে পড়তে যায় এবং নিজেদের ভাষাতে ছবি তৈরি করতে উদ্যোগী।
আরও পড়ুন, ‘শেষ মেস’ বাঙালির নস্ট্যালজিয়া ফিরছে রঙিন পর্দায়
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সাঁওতালি ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে গেলেও অনেক কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা থেকেই গিয়েছে। একের পর এক সিনেমাহল বন্ধ হয়ে যাওয়া তার মূলে। পরিচালকের মতে, ''নকশাল সমস্যাও সাঁওতাল সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে বড় বিড়ম্বনার কারণ। এখন নিজেই ছবি দেখানোর পন্থা তৈরি করে নিয়েছেন তিনি। গ্রামে গিয়ে মোবাইল থিয়েটার অর্থাত নিজেই প্রজেকশনে ছবি দেখানোর ব্যবস্থা করি। হলের একদিনের আয়ের তুলনায় বেশি ব্যবসা করে ছবি।''
বানজারা ভাষায় ছবি তৈরি করেছেন পরিচালক ভিক্টর দয়ালান। এর আগে কর্ণাটক ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনয় করেছেন পরিচালক। এখনকার প্রজন্মের জন্যই এই ভাষায় ছবি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। কঙ্কোনি ও বৈরী ভাষায় ছবি তৈরি করেছেন নাগনাথ যোশী। এই ছবি তৈরির জন্য মঙ্গুল এলাকায় ঘুরতে হয়েছে তাদের। ছবির জন্য মুসলিম ছেলে খুঁজতেও বেগ পেতে হয়েছিল। সমস্ত নন অ্যাক্টরদের নিয়ে ছবি করেছেন তিনি। ছোটা নাগপুর ভাষায় ছবি তৈরি করেছেন নন্দলাল নায়ক।