অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় যখন তাঁর মা-কে হারিয়েছেন, তখন তিনি সদ্য পা রাখছেন অভিনয় জগতে। ছেলে প্রথম সিনেমার শুটিং শুরু করেছে, সেটা দেখে গিয়েছিলেন তাঁর মা বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু ছেলের পেশাগত সাফল্য দেখে যেতে পারেননি। মা না থাকলে ঠিক কেমন মনে হয়, এটা নিয়ে তো নতুন করে কিছু লেখার নেই। মাদার্স ডে-তে যখন সোশাল মিডিয়ায় সবাই শেয়ার করছেন মায়ের সঙ্গে ছবি, অভিনেতার মনে পড়ছে বড়বেলায় মায়ের সঙ্গে কোনও ছবি তোলা হয়নি তাঁর।
মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মায়েদের জন্য নির্ধারিত এই দিনে অনেকেই মায়ের কথা লিখছেন সোশাল মিডিয়ায়। মায়ের সঙ্গে তোলা ছবি ভেসে উঠছে টাইমলাইন জুড়ে। যাঁরা মা-কে হারিয়েছেন, তাঁদের যেন আরও বেশি করে মনে পড়ছে মায়ের কথা। এই দিনটা আনন্দের, উদযাপনের। কিন্তু অনেকের কাছেই এই দিনটা কষ্টের, ফোন করলেই যাঁরা মায়ের গলাটা শুনতে পান না অথবা বাড়িতে আর মা দরজা খুলে দেন না যাঁদের।
আরও পড়ুন: বাবাকে মনে করে ঋষি কাপুরের ফোটো শেয়ার করলেন ঋদ্ধিমা
দু'জনের কেউ আজ নেই। ছবি: সৌজন্য অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়
অনিন্দ্য তাঁর মা-কে হারিয়েছেন ২০১১ সালে। বেশ অনেকদিন অসুস্থ ছিলেন বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়। তাই ছবি তোলার মতো পরিস্থিতি ছিল না। আবার সেই সময়ে স্মার্টফোন কেনার সামর্থও ছিল না অনিন্দ্যর, এমনটাই লিখেছেন তাঁর সোশাল মিডিয়া পোস্টে। ''আমি ২০০৮-এ নেশা ছাড়ি, ২০১১ সালে যখন আমার প্রথম ছবি বাপি বাড়ি যা-র ওয়ার্কশপ করছি মিমি-অর্জুনদের সাথে তখন মা চলে যায়, মা আমাকে কাজ করতে দেখে গেছে, জানত আমি সিনেমা করছি কিন্তু প্রথম সিনেমা দেখে যেতে পারেনি'', ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানালেন অনিন্দ্য।
''বাবা চলে যাবার আগে তাও কিছু সুখ স্বাচ্ছন্দ্য দিতে পেরেছি কিন্তু মা-কে দিতে পারিনি । মা খালি দেখে গেছে ছেলে নেশা ছেড়ে সমাজের মূলস্রোতে ফেরার চেষ্টা করছে। এখন যে একটু ঝগড়া করব বা দুশোটা টাকা চাইব বাড়িতে তারও সুযোগ নেই'', লিখেছেন অনিন্দ্য। এই দুঃখ যেমন বয়ে বেড়াতে হবে সারা জীবন, তেমনই এই সত্যকেও অস্বীকার করার উপায় নেই যে তিনি থাকুন বা না থাকুন তাঁর আশীর্বাদ সব সময়েই ঘিরে থাকবে।
মায়েরা কখনও হারিয়ে যান না আসলে। তাঁরা বেঁচে থাকেন সন্তানসন্ততির মধ্যে। তাই মাদার্স ডে সব সময়েই 'হ্যাপি'। মায়ের জন্য দিন কখনও 'স্যাড' হতেই পারে না।