বাংলা বিনোদন জগতের জনপ্রিয় অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্য়ায় একটা দৃষ্টান্ত সেই সব নেশাগ্রস্ত যুবক-যুবতীদের কাছে যাঁরা এখনও নেশার কবল থেকে বেরতে পারেননি। একটা সময়ে মাদকের নেশায় আচ্ছন্ন ছিলেন অভিনেতা। আর সেই নেশার জন্য বহুভাবে অসম্মানিত, অপমানিত হতে হয়েছে তাঁর পরিবারকে, বিশেষ করে তাঁর বাবাকে। ফাদার্স ডে-র সকালে পুরনো সেই কথার সূত্র ধরেই বাবাকে শ্রদ্ধা জানালেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্য়ায়।
ঠিক এক বছর আগে বাবাকে হারিয়েছেন অভিনেতা। বাবা অসুস্থ হলেই সব কাজ ছেড়ে তাঁর কাছেই পড়ে থাকতেন অভিনেতা। তাঁর দায়িত্ববোধ সম্পর্কে পরিচিত-অল্পপরিচিত অনেকেরই হয়তো সংশয় ছিল, কিন্তু অনিন্দ্য যে স্বেচ্ছায়, নিজের চেষ্টায় নেশার কবল থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পেরেছিলেন সেটাই তাঁর সবচেয়ে বড় দায়িত্ববোধের পরিচয়। আর সেটাই ছিল বাবার প্রতি তাঁর সবচেয়ে বড় কর্তব্য।
আরও পড়ুন: ‘কৃশানু দে-র পরে আর কোনও বাঙালি ফুটবলার কিংবদন্তি হতে পারেননি’
ফাদার্স ডে-র সকালে বাবার ছবি পোস্ট করে অনিন্দ্য ফেসবুকে লিখলেন, ''এই লোকটা একটা সময়ে সমাজের বুকে মাথা নত করে হাঁটত । সবাই বলতো এর ছেলে নেশা করে বা পাতাখোরের বাবা। এটাও হয়তো শুনেছে যে ছেলেকে ঠিকমতো মানুষ করতে পারেনি তাই ছেলেটা এরকম। আমার জন্যে এই মানুষটাকে অনেক বিপর্যস্ত হতে হয়েছে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে।''
২০০৮ সালে এই নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেন অনিন্দ্য় শুধুমাত্র নিজের ইতিবাচক চিন্তা ও পরিবারের সহমর্মিতার জোরে। তার পর একটু একটু করে অভিনেতা হিসেবে নিজের জায়গা তৈরি করা বাংলা বড়পর্দা ও ছোটপর্দায়। গত চার-পাঁচ বছরে অনিন্দ্য় শুধুমাত্র জনপ্রিয় অভিনেতাই হয়ে ওঠেননি, পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের মাদবিরোধী ক্য়াম্পেনের প্রধান মুখও তিনি। নিঃসন্দেহে এই পরিবর্তন অনেকটা স্বস্তির পাশাপাশি অনেকটা সম্মানও ফিরিয়ে দিয়েছিল তাঁর বাবা ও প্রিয়জনদের।
আরও পড়ুন: টেলিপর্দায় সৌদামিনী হয়ে ফিরল সুস্মিলি
তাই বাবাকে হারানোর এক বছর পরে যখন অভিনেতা লেখেন, ''আমি অনেক সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ফিরিয়ে দিতে হয়তো পারিনি কিন্তু যেটা ফিরিয়ে দিতে পেরেছিলাম সেটা একটু সম্মান একটু শ্রদ্ধা। বুক উচিয়ে বলতে পারতো আমি অনিন্দ্যর বাবা...'', তার চেয়ে বড় শ্রদ্ধা নিবেদন আর কিছু হতে পারে না।
আর এমন একটা বার্তা পড়ার পরে ফাদার্স ডে-কে আর নিছক বিজ্ঞাপনী ট্রেন্ড বলা যায় কি?