Advertisment

গরিব শিশু ও বয়স্ক মানুষের আবাসন, জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন: জয়ী

''এমন একটা ইনস্টটিউট হবে, যেখানে সমস্ত প্রতিভাধর গরিব বাচ্চাদের স্কলারশিপ দিয়ে রাখা হবে, ওখানে বয়স্করাও থাকবে। এটা আমার বিগেস্ট ফিউচার প্ল্যান এভার।''

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Actor Joey Debroy wants to build a rehabilitation centre for underprivileged children and deserted senior citizens

ভিকি চরিত্রে জয়ী দেবরায়। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

ছোটবেলার পাড়ার প্রেম কেমন থাকে বড়বেলায়। দুই বন্ধু বড় হয়ে যাওয়ার পরে দুজনের জার্নিটা বদলে গিয়েও কীভাবে টিকে যায় বন্ধুত্ব, সেই নিয়েই জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালাস-- 'তুই আমার হিরো'। এই ছবিতে 'হিরো'-র ভূমিকায় রয়েছেন জয়ী দেবরায় ও নায়িকা প্রিয়াঙ্কা রতি পাল। ২৩ ফেব্রুয়ারি দুুপুর ১টায় সম্প্রচারের আগে, জয়ী দেবরায়ের সঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র একান্ত কথোপকথনে ধরা পড়ল এই চরিত্রের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে অভিনেতার নিজের মধ্যেও। সেই প্রসঙ্গেই অভিনেতা জানালেন তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্নের কথা--

Advertisment

চরিত্রটা তো বেশ পাড়ার হিরো টাইপ। এরকম চরিত্র করতে কি ভাল লাগে তোমার?

অনেস্টলি বলতে কী, হৃদয়হরণ-এর একটা ইমেজ ছিল। একটু বোকা বোকা টাইপ। ওই ইমেজটা একটু ব্রেক করার দরকার ছিল। জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালস-কে আমি ধন্যবাদ জানাব যে সিরিয়ালটা শেষ হওয়ার পরেই, প্রায় সঙ্গে সঙ্গে এমন একটা চরিত্র দিয়েছে যে হল পাড়ার চ্যাংড়া। সেইটা আমি যে এক্সপেরিমেন্ট করতে পেরেছি, সেটাই দারুণ ব্যাপার। কয়েকদিন আগেই আমাকে ফোন করে বলল যে এডিট শেষ হয়ে গেছে, চ্যানেল ইজ হ্যাপি। আমি যে চরিত্রটা জাস্টিফাই করতে পেরেছি, সেটাতে আমি খুব খুশি।

আরও পড়ুন: বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসব: আছে শীত, সিএএ, গণহত্যা…আছে ছবিও

তুমি যেমন মানুষ, তোমার পার্সোনালিটি যেমন, তার কিছু কিছু কি এই চরিত্রটার মধ্যে রয়েছে?

কিছু কিছু হয়তো কিন্তু বডি ল্যাঙ্গোয়েজ তো পাবেই না। যে চরিত্রটা আমি করছি, তার বডি ল্যাঙ্গোয়েজ একদম অন্য রকম। কিন্তু চরিত্রের মধ্যে একটা জিনিস আছে, ছেলেটি খুব রাইটিয়াস মানে যেটা ঠিক সেটা ঠিক, যেটা সত্যি সেটা সত্যি। ছবিটা দেখলে বুঝবে যে ও বয়স্ক মানুষদের জন্য কিছু করতে চায়, বৃদ্ধাশ্রম বানাতে চায়। এটা আমার মধ্যেও আছে। আমি যতটা পারি বৃদ্ধাশ্রমের জন্য কিছু করতে চেষ্টা করি আর খুব গরিব বাচ্চাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি। একটা সিন মনে আছে। একটা বাড়ি খালি করতে গিয়ে দেখি যে একটা বয়স্ক কাপল একা থাকে। ওই সিনটা করতে গিয়ে আমি এত ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলাম, আমার চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে গিয়েছিল। এখনও মনে পড়লে আমার কষ্ট লাগে। এই চরিত্রটা হল রবিনহুড। নিজের কিছু নেই। যা রোজগার করে সবাইকে দিয়ে নিজের হাত খালি করে ফেলে। এটা তো হোস্টেল লাইফ থেকেই আমার মধ্যে ছিল। মাসের প্রথমে যখন পকেটমানি আসত, আমি সবাইকে দিয়ে-টিয়ে মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে আমার হাত খালি। বাকি মাসটা ভিক্ষা চেয়ে চেয়ে কাটত। তো এই দুটো জিনিস বলতে পারো, আমার সঙ্গে মিল আছে।

Actor Joey Debroy wants to build a rehabilitation centre for underprivileged children and deserted senior citizens জয়ী দেবরায় ও প্রিয়াঙ্কা রতি পাল, 'তুই আমার হিরো'-র ভিকি ও পিউ চরিত্রে। ছবি সৌজন্য: জি বাংলা

প্রিয়াঙ্কা তোমার নায়িকা, ওর সঙ্গে প্রথম কাজ। কেমন লাগল কাজ করে?

ফ্যাবুলাস, মাইন্ডব্লোয়িং। প্রথম প্রথম প্রিয়াঙ্কাকে খুব স্ট্রিক্ট লাগে। কিন্তু যত বন্ধুত্ব হয়েছে, সহজ হয়ে গেছে। খুব মজা করে কাজ করেছি। খুব সাটল কিন্তু এত সুন্দর ও সিনগুলোকে টেনেছে। আমাদের দুজনের খুব ভাল কেমিস্ট্রি এসেছে, সেটা ও নিজেও বলেছে আমাকে। এখন অডিয়েন্স কীভাবে রিঅ্যাক্ট করবে, সেটাই দেখতে হবে।

টেলিভিশন থেকে আবারও ছবিতে ফিরে যাচ্ছ, তাই তো?

হ্যাঁ আমি আবারও ফিরে যাচ্ছি। এখন 'বিয়ে ডট কম'-এর শুটিং চলছে। বনি, কৌশানী, পায়েল আর আমি। এটা রোমান্টিক কমেডি। সুদেষ্ণাদি-রানাদার ডিরেকশনে। প্রচুর ভাল অভিনেতা-অভিনেত্রীরা রয়েছেন। এপ্রিল-মে-তে আবার একটা সারপ্রাইজ আছে আবার জুলাই-অগস্ট মাসে আর একটা সারপ্রাইজ আছে।

ওয়েব সিরিজে আসছ না কেন?

আমার কাছে দুটো অফার এসেছিল, টেলিভিশন থেকেও এসেছে কিন্তু আমি আসলে একটুও ব্রেক পাইনি। ৫ জানুয়ারি আমার সিরিয়াল শেষ হল, তার পরেই 'তুই আমার হিরো'-র কাজ শুরু হয়ে গেল। ওই কাজটা করতে করতেই আমি শ্রীলঙ্কা গিয়েছিলাম আমার একটা দেড় বছর আগেকার ছবির শিডিউল শেষ করতে। ওখান থেকে ফিরে 'তুই আমার হিরো'-র কাজ শেষ করলাম। প্রায় সাথে সাথেই 'বিয়ে ডট কম'-এর কাজ শুরু হয়ে গেল। আসলে কোনও ব্রিদিং স্পেস পাচ্ছি না। তবে একটা অফার পেয়েছি ওয়েব সিরিজের। সেটা এই মার্চের মাঝামাঝি হতে পারে, দেখা যাক। ওয়েব সিরিজ ইজ আ নেক্সট প্ল্যাটফর্ম টু প্রুভ ইওরসেলফ। অ্যামাজন ইউকে আর ইউএসএ-তে আমার একটা ছবি 'নীতিন', রিলিজ হয়েছে কিছুদিন আগে।

আরও পড়ুন, স্টার জলসা-তেও কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের বায়োপিক! এবার লড়াই দুই চ্যানেলে

এই যে তুমি বললে একটু আগে যে গরিব বাচ্চাদের জন্য আর বয়স্ক মানুষদের জন্য কিছু করতে চাও। তেমন কিছু কি প্ল্যান করছ?

এটা আমার একটা বিরাট বড় একটা স্বপ্ন। এমনিতে আমার সব প্রজেক্টেই যা সাইনিং অ্যামাউন্ট থাকে, তার ১০ শতাংশ চ্যারিটিতে যায়... ঠিক চ্যারিটি বলব না, এটা আমার হ্যাপিনেস। আমাদের একটা এনজিও আছে 'স্পার্ক'-- সোসাইটি ফর প্রোটেকশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন অফ চিলড্রেন। এখানে চিলড্রেন বলতে আমরা আন্ডার-প্রিভিলেজড চিলড্রেনদের বুঝি। আমরা সাতজন বন্ধু মিলে খুলেছিলাম কলেজে পড়ার সময়। এটা একটা রেজিস্টার্ড এনজিও। আমার স্বপ্ন হল এমন একটা ইনস্টটিউট হবে, যেখানে সমস্ত প্রতিভাধর গরিব বাচ্চাদের স্কলারশিপ দিয়ে রাখা হবে। শুধু পড়াশোনায় ভাল নয়, কেউ হয়তো ভাল ফুটবল খেলে বা ভাল ছবি আঁকে, তাকে আমরা ইনস্টিটিউটে নিয়ে এসে রাখব। আর ওর বাবা-মায়ের দুবেলার খাবারের দায়িত্ব আমরা নেব। ওর যদি কোনও ভাই-বোন থাকে, তার স্কুলের পড়াশোনার খরচাটা আমরা দেব। ওই একই ইন্সটিটিউটে বয়স্করাও থাকবে। যাতে একটা ইন্সটিটিউটের মধ্যে এক দল অভিজ্ঞ মানুষ থাকবে। আবার একদম ছোটরাও থাকবে। একটা কমিউনিটি তৈরি হবে। আমি সব সময় বড় স্বপ্ন দেখি। খুব বড় স্বপ্ন দেখলে তবেই আমি হয়তো মাঝামাঝি কোনও জায়গায় পৌঁছতে পারি। এটা আমার বিগেস্ট ফিউচার প্ল্যান এভার।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Bengali Serial Bengali Actor Bengali Television
Advertisment