সালটা ২০০৬। জন আব্রাহাম তখন 'কাবুল এক্সপ্রেস'-এর শুটিং করছেন আফগানিস্তানে। এক সকালে প্রাতঃরাশ সেরে চা খাওয়ার জন্য ছাদে উঠেছিলেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে চায়ে চুমুক দেবেন! মুহূর্তের মধ্যেই দেখলেন আকাশ থেকে রকেট লঞ্চার ফেলে মার্কিন দূতাবাসে হামলা করা হল। ঠিক অভিনেতার পিছনেই। বুঝেছিলেন, "এ যাত্রায় প্রাণে বেঁচে দেশে ফিরতে পারলে হয়।"
ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন? জানালেন অভিনেতা। জনের কথায়, 'কাবুল এক্সপ্রেস'-এর শুটিং করার সময়ে আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাজিবুল্লার বাড়িতে থেকেছিলাম। সেইসময়ে নাজিবুল্লার বাংলো রাষ্ট্রসংঘ অনুমোদিত হোটেল ছিল। তো একদিন চা খেতে বাড়ির ছাদে উঠেছি। হঠাৎ দেখলাম, এক রকেট লঞ্চার ফেলা হল মার্কিন দূতাবাসের ওপর। ঠিক আমার পিছনেই ছিল সেই বিল্ডিং। এটা আসলে আফগান মানুষদের রাগের বহিঃপ্রকাশ ওখানে থাকা মার্কিনীদের ওপর।
এখানেই অবশ্য শেষ নয়। 'কাবুল এক্সপ্রেস'-এর শুটিং করতে আফগানিস্তানের এক প্রত্যন্ত জায়গায় যাচ্ছেন। লোকেশনে পৌঁছনোর আগে গাড়িতে বসেই জন আব্রাহাম শুনতে পান, সেখানে নাকি এক আত্মঘাতী মানববোমা হামলা চালিয়েছে। তা শুনে তো ততক্ষণে অভিনেতার চিন্তা শুরু। জন গাড়ির চালককে জিজ্ঞেস করলেন, "আচ্ছা এই সুইসাইড বোম্বার্সরা আসে কোথা থেকে?" গাড়ির চালক উত্তর দেন, "ওরা যেদিক থেকে খুশি আসতে পারে।" ঠিক তখনই জনের মনে হয়, এবার তো আর নিজেকে বাঁচানোর কোনও উপায় নেই! তবে অভিনেতা এও বলেন যে, আফগানিস্তানে শুট করার এই রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা তিনি কখনও ভুলবেন না।
<আরও পড়ুন: একে-অপরকে মিস করছেন সাবা-হৃতিক! এবার খুল্লামখুল্লা প্রেম নিবেদন, দেখুন>
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে শুটিংয়ের সময় এহেন ঘটনা চোখের সামনে দেখলেও আফগান লোকেদের নিয়ে কিন্তু বেজায় প্রশংসা করেন জন। অভিনেতা বলেন, "শুট শেষে আমি যখন আফগানিস্তান ছাড়ছিলাম, তখন সেখানকার স্থানীয় লোকেরা ঘিরে ধরে আমায় অনুরোধ করেছিলেন, জন জান আপনি যা-ই করুন না কেন, আফগানি লোকেদের বিষয়ে কোনও খারাপ কথা বলবেন না। ওঁরা অতিথি আপ্যায়ণের দিক থেকে সত্যিই বিশ্বের অন্যতম ভাল দেশ।"
সম্প্রতি 'অ্যাটাক' সিনেমার প্রচার করতে গিয়েই আফগানিস্তানে শুট করার দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন জন আব্রাহাম। পয়লা এপ্রিল-ই প্রেক্ষাগৃহে আসছে জনের নতুন ছবি 'অ্যাটাক'। যেখানে অভিনয় করেছেন জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ, রকুলপ্রীত সিং, প্রকাশ রাজ ও রত্না শাহ পাঠক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন