১৫ বছরের বিরতির পর বড় পর্দায় ফিরে এলেও মঞ্জু ওয়ারিয়ারের অভিনয় জীবন প্রথম দিকে আশানুরূপ গতি পায়নি। তা সত্ত্বেও তিনি আজও কেরালার ঘরে ঘরে পরিচিত একটি নাম। তার কারণ স্পষ্ট, ক্যারিয়ারের প্রথম পর্বে তার অসাধারণ অভিনয় এখনও মালায়ালিদের হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছে।
স্বল্প সময়েই অবিস্মরণীয় অবদান
মাত্র চার বছরের মধ্যে মঞ্জু এমন এক প্রভাব ফেলেন, যা অগণিত দর্শকের মনে স্থায়ী ছাপ ফেলে। থুভাল কোট্টারাম, কালিভেদু, ই পুজহায়ুম কাদান্নু, ইরাত্তাকুট্টিকালুডে আচান, আরাম থামপুরান, প্রণয়বর্ণঙ্গল, সামার ইন বেথলেহেম, পাথরাম, কান্নেউত্তু সহ আরও বহু সিনেমায় তার দুর্দান্ত অভিনয় আজও প্রশংসিত।
যদিও তিনি ১৯৯৫ সালে পরিচালক মোহনের 'সাক্ষ্যম' দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক করেন। তার পরের বছর মুক্তি পাওয়া এ কে লোহিতদাস রচিত সুন্দর দাস পরিচালিত 'সল্লাপম' তাকে মালায়ালাম ছবিতে সত্যিকারের পরিচিতি এনে দেয়। সেই ছবিতে "রাধা" চরিত্রে তার অভিনয়, সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ায় এবং তাকে উঠিয়ে আনে প্রতিশ্রুতিশীল অভিনেত্রীদের শীর্ষ সারিতে।
‘সল্লাপম’-এর সেটে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা
সল্লাপম-এর একটি শ্যুটিং দৃশ্য আজও অভিনেতা মনোজ কে জয়ানের স্মৃতিতে গেঁথে আছে। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এক ভয়ংকর শটের সময় মঞ্জু এতটাই চরিত্রে ঢুকে গিয়েছিলেন যে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
দৃশ্যটি ছিল আত্মহত্যার: মঞ্জুর চরিত্রটিকে দ্রুতগামী ট্রেনের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ার শট ছিল। আর মনোজ যে ভুমিকায় অভিনয় করেছিলেন, তাঁর কাজ ছিল মঞ্জুকে, টেনে ধরার প্রাণপণ চেষ্টা করা। অভিনেতা বলেন, "আমার হাত যদি একটুও আলগা হতো, তাহলে সে ট্রেনের চাকার নিচে চলে যেত। আমি নিজেকে শুধু এটাই বলেছিলাম— 'যাই হোক, আমি তাকে ছাড়তে পারব না। এই পরিস্থিতিতে।' শটটি শেষ হওয়ার পর আমি একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম।"
তিনি আরও বলেন, "আমি এতটাই কেঁপে উঠেছিলাম যে মনে হয়েছিল ওকে ধমক দিতে হবে। কিন্তু শটটি নিখুঁত হয়েছিল। পুরো ইউনিট করতালিতে ফেটে পড়ে। সেদিন যদি আমি সেখানে না থাকতাম, মালায়ালাম সিনেমা হয়তো তার এক ভবিষ্যৎ আইকনকে হারিয়ে ফেলত।"