ক্যারিয়ারের একেবারে শুরুতে, বলিউডে প্রবেশ করা শিল্পা শিরোদকরের কাছে সহজ বিষয় ছিল না। প্রযোজক বনি কাপুরের প্রযোজনায় একটি ছবির কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে তাকে 'অপমানিত' হতে হয়। ছবির প্রস্তাব আসছিল না, সামনে তখন অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। সেই কঠিন সময়েই প্রবীণ অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী তাঁর পাশে দাঁড়ান এবং 'ভ্রষ্টাচার' ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন।
পিঙ্কভিলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, শিল্পা জানান কীভাবে মাধুরী দীক্ষিতের ম্যানেজার রিক্কু রাকেশ নাথ তাঁকে মিঠুনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। রিক্কু মিঠুনকে অনুরোধ করেন যেন তিনি শিল্পাকে যেন, বড় পর্দায় লঞ্চ করেন। কারণ তখন ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই শিল্পাকে তাচ্ছিল্য করত। অভিনেত্রী হিসেবে তাঁর কোনও মান ছিল না।
শিল্পা আবেগ ভরে বলেন,"রিক্কুজি যখন মিঠুনদাকে অনুরোধ করলেন, তিনি এক মুহূর্তও ভাবেননি। সঙ্গে সঙ্গে বললেন, 'আমি ওকে লঞ্চ করব।' এরপর কলকাতায় এক বাংলা ছবির মহরতে আমাকে সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। খবর ছড়িয়ে পড়ে যে আমি মিঠুনদার বিপরীতে অভিনয় করছি।" এরপর মিঠুন তাঁকে পরিচয় করিয়ে দেন পরিচালক রমেশ সিপ্পির সঙ্গে, যাঁর হাত ধরেই 'ভ্রষ্টাচার' হয়ে ওঠে শিল্পার প্রথম ছবি। "আমি দাদার জন্যই সুযোগটা পেয়েছিলাম। তিনি না থাকলে হয়তো আজ আমি এই জায়গায় পৌঁছাতেই পারতাম না," বলেন শিল্পা।
তিনি আরও জানান, মিঠুনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা শুধুই পেশাদার ছিল না, বরং তা ছিল "ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর আজীবন কৃতজ্ঞতায় ভরপুর"। শুটিং চলাকালীন তিনি দারুণ নার্ভাস থাকতেন। কারণ তিনি সেই মানুষটির সামনে নিজেকে প্রমাণ করতে চাইতেন, যিনি তাঁকে অভিনয় জগতে নিয়ে এসেছিলেন। তাঁকে বলতে শোনা গেল...
"মিঠুনদা আমার অনেক সিনিয়র ছিলেন। আমি সকাল সকাল সেটে পৌঁছে যেতাম, একক দৃশ্যগুলো শুট করতাম। আর দাদা বিকেলে আসতেন কম্বিনেশন শটের জন্য। কিন্তু তাঁর সামনে রিটেক দিতে চাইতাম না, ভীষণ চাপ থাকত। আমি নার্ভাস থাকতাম। একবার উনি আমায় জিজ্ঞেস করলেন, ‘এত নার্ভাস কেন?’ আমি বললাম, ‘আপনার সামনে রিটেক দিতে চাই না।’ তখন উনি হেসে বলেছিলেন, ‘তুই তো একদম পাগল।’ আজও শিল্পা শিরোদকর মনে করেন, তাঁর বলিউড যাত্রার পেছনে মিঠুন চক্রবর্তীর অবদান অসীম — এবং তাঁর প্রতি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকবেন।