/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/05/lead2.jpg)
মহুয়া বাংলা-র 'কাকাবাবু সিরিজ'-এ জগাই মল্লিকের চরিত্রে। ছবি সৌজন্য: পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র
Mrinal Mukherjee Death: প্রায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয়ে, গানে তিনি মুগ্ধ করে রেখেছিলেন দর্শক-শ্রোতাদের। গায়ক-নায়ক হিসেবেই শুরু করেছিলেন পেশাগত জীবন। খড়কুটো উপন্য়াস অবলম্বনে অরুন্ধতী মুখোপাধ্যায়ের ছবি, ছুটি-তে নায়কের ভূমিকায় তাঁর অভিনয় অসামান্য় বললেও কম বলা হয়। বাংলা ছবির ইতিহাসে চিরকাল শাশ্বত হয়ে থাকবে মৃণাল মুখোপাধ্যায় ও নন্দিনী মালিয়া অভিনীত ওই ছবি।
সত্তরের দশকের সাদাকালো বড়পর্দা থেকে ২০১৭ সালের বাংলা বিনোদন জগৎ-- পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে শিল্পী হিসেবে তাঁর যাত্রা অবিরাম চলেছে। তাঁর মৃত্য়ুর খবরে শোকাহত বাংলার ছোটপর্দা ও বড়পর্দার জগৎ। বর্ষীয়ান শিল্পী অত্যন্ত স্নেহশীল ছিলেন নতুন প্রজন্মের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের প্রতি।
আরও পড়ুন: প্রয়াত অভিনেতা মৃণাল মুখোপাধ্য়ায়
রাশি ও দেবীপক্ষ, এই দুটি ধারাবাহিকেই তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল গীতশ্রী রায়ের। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে গীতশ্রী জানালেন, ''আমি ভাবতেই পারছি না, বিশ্বাসই করতে পারছি না খবরটা। ওঁর সঙ্গে শেষ কাজ করেছি দেবীপক্ষ-তে, যেখানে আমার দাদাশ্বশুরের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। তার আগে, রাশি-তে বেশ অনেকটা সময় ওঁর সঙ্গে কাজ করেছি। আমি অনেকটা ছোট, তাই আমাকে 'বেটা' বলে ডাকতেন। অনেক গান শোনাতেন সময় পেলেই। ওঁর অসুস্থতার কথা একেবারেই কখনও বুঝতে দেননি।''
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/05/inside2.jpg)
বাংলা ছবিতে যতজন গায়ক-অভিনেতা এসেছেন, তার মধ্য়ে অবশ্য়ই প্রথম সারিতে থাকবেন মৃণাল মুখোপাধ্য়ায়। তপন সিনহা-র 'গল্প হলেও সত্য়ি' (১৯৬৬) ছবি দিয়ে তাঁর বড়পর্দায় যাত্রা শুরু। তার পরের বছরেই নায়ক হিসেবে তাঁর প্রথম আত্মপ্রকাশ অরুন্ধতী মুখোপাধ্য়ায়ের ছবি 'ছুটি' (১৯৬৭)-তে। ওই ছবিতে নন্দিনী মালিয়া ও মৃণাল মুখোপাধ্য়ায়ের অভিনয় অবিস্মরণীয়। তপন সিনহার 'এখনই' (১৯৭১) ছবিতেও তাঁর অভিনয় বাংলা ছবির অনুরাগীরা মনে রাখবেন চিরকাল। তিনি ছিলেন একজন পূর্ণাঙ্গ অভিনেতা। বড়পর্দা, ছোটপর্দা, রেডিও থেকে মঞ্চ, দাপটের সঙ্গে কাজ করে গিয়েছেন সর্বত্র।
আরও পড়ুন: সঞ্জয় দত্তের জীবনকে নতুন করে দেখা, প্রকাশিত রাম কমলের নতুন বই
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি মাধ্য়মেরই বিবর্তন ঘটেছে। অভিনয়ের ধরন, প্রযোজনার ধরন পাল্টেছে, নতুন প্রযুক্তি এসেছে, কিন্তু অভিনেতা-গায়ক হিসেবে তাঁরা যাত্রা থামেনি। নতুন প্রজন্মের কাছেও তিনি ততটাই আদরণীয় ছিলেন, যেমনটা ছিলেন প্রবীণ প্রজন্মের কাছে। অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য জানালেন, ''আমি একবারই ওঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। খুব জমাটি মানুষ ছিলেন। সব সময়েই গান করছেন, সবার সঙ্গে গল্প করছেন। মেকআপ রুম জমিয়ে রাখতেন উনি। খবরটা পেয়ে খুবই খারাপ লাগছে।''
'আমলকী' ধারাবাহিকে কাজ করার সময়েই অনেকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। অথচ মারণ রোগ যে বাসা বেঁধেছে এই খবরটা খুব কম মানুষই জানতেন। মৃত্য়ুর কিছুদিন আগেই ছিল স্ত্রীর জন্মদিন। পরিবারের সকলের সঙ্গে চমৎকার সময় কাটিয়েছেন। তাঁর ব্যক্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল তাঁর মৃদু হাসি। অনেক শারীরিক কষ্টের পরেও সেই হাসি কোনওদিন মিলিয়ে যায়নি এবং দর্শকের স্মৃতিতেও তা চিরদিন অমলিন থেকে যাবে।