Durga Puja vasan memory of Raj Bhattacharya: বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেতা রাজ ভট্টাচার্য বড় হয়েছেন বারাসতে। সেখানে ছোটবেলা থেকেই পাড়ার পুজোয় তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকত। আর বিসর্জনের সময় তো বিশেষ ভূমিকা ছিল তাঁর। একবার দুর্গা পুজোর বিসর্জনের সময় বড়সড় একটি দুর্ঘটনার থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন অভিনেতা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে শোনালেন তাঁর সেই অভিজ্ঞতার কথা।
''একটা সময় ছিল যখন পুজো মানেই শুরু থেকে শেষ পাড়ার পুজোতেই থাকা। এখন আর পুজোর চারদিনই থাকা হয় না কিন্তু যত যাই হোক না কেন, বারাসতে আমাদের পাড়ার পুজোর বিসর্জনে আমি প্রত্যেক বছর থাকি, ওটা মিস হয় না'', বলেন রাজ, ''আগে ঠাকুর নামানো থেকে ভাসান দেওয়া পর্যন্ত পুরোটাই করতাম। সেরকমই এক বছর মারাত্মক একটা কাণ্ড হতে যাচ্ছিল।''
আরও পড়ুন: ভাসান জমিয়ে দেবে এই ৫টি বাংলা গান
রাজ ভট্টাচার্যকে যাঁরা পর্দায় দেখেন নিয়মিত, তাঁরা জানেন অত্যন্ত দীর্ঘদেহী চেহারা এই অভিনেতার। আর বিসর্জনের সময় সাধারণত পাড়ায় এমন লোকজনেরই ডাক পড়ে। অতবড় প্রতিমাকে বেদী থেকে নামিয়ে গাড়িতে তোলা, আবার গাড়ি থেকে নামিয়ে তিন পাক ঘুরিয়ে জলে ফেলতে গেলে বেশ বলশালী হওয়া প্রয়োজন। সানন্দে পাড়ার পুজোতে সেই কাজটি করতেন রাজ। কিন্তু একবার একটু ভুল বোঝাবুঝিতে ঘটতে চলেছিল বড়সড় দুর্ঘটনা।
''সেবার আমি ঠাকুর নামিয়ে গাড়িতে তুলেছি। আমাদের এখানকার পুকুরেই ঠাকুর ভাসান হয়। প্রতিমার দুই দিকেই সমান সংখ্যক লোক থাকার কথা যাতে কারও হাতেই বেশি চাপ না পড়ে। কী কারণে মনে নেই, হঠাৎ খেয়াল করলাম একদিকে আমি একা। হাতে তখন প্রচণ্ড টান ধরেছে, সেটা বিসর্জনের ঠিক আগের মুহূর্ত। প্রতিমাকে তো আর এক সেকেন্ডের জন্যেও মাটিতে রাখা যাবে না। দাঁতে দাঁত চেপে ধরে আছি'', পুরনো ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন রাজ, ''ওই অবস্থাতেই কোনওমতে প্রতিমা যখন জলে পড়ল, আমি তখন কাঠামোর তলায়। হাতে অসম্ভব ব্যথা। কীভাবে যে নিজেকে কাঠামোর তলা থেকে বার করে নিয়ে এসেছিলাম, ভাবলেও এখন গায়ে কাঁটা দেয়। সেবার আমার হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছিল।''
আরও পড়ুন: ভূতের শ্বশুরবাড়িতে চুনি-বউমার অভিযান! আসছে নতুন ধারাবাহিক
''যাঁরা প্রতি বছর ভাসান দিতে যান, বিশেষ করে গঙ্গায়, তাঁদের অনেকেরই হয়তো এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাই ভাসানের সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকাটা জরুরি। যাঁরা নিয়মিত এক্সারসাইজ করেন, ভালো সাঁতার জানেন, মানে দক্ষ সাঁতারু আর যাঁদের রিফ্লেক্স খুব ভালো, শুধুমাত্র তাঁদেরই কিন্তু ঠাকুর জলে ফেলার কাজটা দেওয়া উচিত'', বলেন অভিনেতা, ''আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, এই কাজটা হল পুজোর কাজের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন। তাই সবচেয়ে বেশি সতর্কতা নেওয়া দরকার। প্রয়োজন হলে সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখুন। এটা নিয়ে লজ্জা পাওয়ার কিছুই নেই। সতর্ক না থাকাটাই বরং লজ্জার।''
রাজ জানালেন, বারাসতে তাঁর পাড়ার পুজোয় এখন আর ঠাকুর জলে ফেলার দায়িত্ব নিতে পারেন না সব সময়। কিন্তু অবশ্যই উপস্থিত থাকেন বিসর্জনে। ''ভাসানের নাচ আমার ফেভারিট। কী দারুণ এনজয় করেছি সেই সব দিনগুলো। এখন পুজোটা একটু অন্য রকম কাটে। পুজোর জাজমেন্ট থাকে, অনেক ইনভিটেশনও থাকে, সেগুলোতে যেতে হয়। অনেক সময় এমনও হয় যে দশমীর দিন বিকেলের আগে বারাসত পৌঁছতে পারলাম না। কিন্তু ঠাকুর ভাসানে উপস্থিত থাকা আর ভাসানের পরে গুরুজনদের প্রণাম-- বিজয়া দশমীতে এই দুটোই আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ'', বলেন রাজ।