বিয়ে না লিভ-ইন এই বিতর্কের সূত্রপাত প্রায় দু'দশক আগেই। তখনও সমাজের বেশিরভাগ মানুষেরই ধারণা ছিল লিভ-ইন মানেই সেটা অবৈধ বা বেআইনি। পপুলার কালচারে লিভ-ইন বিভিন্নভাবে আলোচিত হওয়ার পরে, বেশ কিছু মেইনস্ট্রিম ছবি দেখার পরে দেশের মানুষ শেষে বুঝেছেন যে আসলে এদেশে দু'জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিয়ে না করেও একসঙ্গে থাকতে পারেন। তা একেবারেই আইনসম্মত। কিন্তু তার পরেও যেটা রয়েছে তা হল সামাজিক ট্য়াবু। বিয়ে যে আদতে যৌনতার ছাড়পত্র নয় এবং বিয়ে ব্যতীত যৌনতাও যে স্বাভাবিক এবং সুন্দর, এখনও এই সহজ উপলব্ধি ঘটেনি বেশিরভাগ মানুষের। কিন্তু মুমতাজ সরকার সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখেন লিভ-ইন ইস্যুকে।
সম্প্রতি কলকাতার একটি রেস্তোরাঁয় আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি পেল মুমতাজ সরকার ও সপ্তর্ষি ঘোষ অভিনীত শর্ট ফিল্ম 'দায়রা'-র ট্রেলার। ছবির পরিচালক রণদীপ সরকার। লা পেলিকুলা মোশন পিকচার্স-এর ব্য়ানারে ছবিটি প্রযোজনা করছেন অয়নজিৎ সেন। এই স্বল্পদৈর্ঘ্য়ের ছবির গল্প একটি লিভ-ইন সম্পর্ককে ঘিরে। খুবই প্রাসঙ্গিক নিঃসন্দেহে। কিন্তু ছবির মূল চরিত্রের অভিনেত্রী মুমতাজ ব্যক্তিগতভাবে লিভ-ইন নিয়ে ঠিক কী ভাবেন? মুমতাজ জানালেন যে লিভ-ইন সম্পর্কের প্রতি তাঁর সমর্থন নেই। তবে সেটা কোনও ট্যাবুজনিত কারণে নয়।
আরও পড়ুন: বকেয়া টাকা নিয়ে বিপর্যস্ত টেলিপাড়া! পয়লা মে সমাধান মিলবে কি?
''যদি আমার পার্সোনাল ওপিনিয়ন বলো, আমি লিভ-ইন-কে সাপোর্ট করি না। যদি আমি কাউকে ভালবাসি, তার সঙ্গে থাকতে চাই, তবে বিয়ে না করে লিভ-ইন কেন? তার মানে কি আসলে একটা দরজা খুলে রাখতে চাইছি? সম্পর্কে কোনও রকম ওঠাপড়া ঘটলেই, যাতে বেরিয়ে যাওয়া যায়? আমি আসলে সম্পর্ককে এভাবে দেখি না। আমার মনে হয় ইদানীং মানুষের ধৈর্য কমে গেছে। একটু কিছ মনোমালিন্য হলে, তার সলিউশন খোঁজে না, অন্য কোনও অপশন খোঁজে। আমি এই দৃষ্টিভঙ্গির একেবারেই পক্ষপাতী নই'', জানালেন মুমতাজ।
অভিনেত্রীর বক্তব্য, সম্পর্ক একটি সিদ্ধান্ত এবং এটা একদিনে গড়ে ওঠে না। সম্পর্কের পরিণত পর্যায়ে যদি একসঙ্গে থাকতে চান দু'জন মানুষ তবে বিয়ে না করে লিভ-ইন করার কথা তখনই ভাবেন, যখন তাঁরা মনে মনে জানেন যে এটা স্থায়ী নয় বা স্থায়ী হতে দিতে তাঁরা চান না। আর সেখানেই আপত্তি মুমতাজের। তাঁর মতে, এই প্রবণতার কারণ এই প্রজন্মের বেশিরভাগ মানুষই জীবনসঙ্গী বা জীবনসঙ্গিনী খোঁজেন না, শুধুই সঙ্গী বা সঙ্গিনী খোঁজেন যা সাময়িক। মুমতাজ ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন এই প্রবণতা আসলে পলায়ণপ্রবৃত্তির কারণেই ঘটে।
আরও পড়ুন: ”ফ্লোরে কেঁদে ফেলেছিলাম, কোয়েল খুব সাপোর্ট করেছিল”: কৌশিক
''আসলে আমি ছোট থেকে যে দু'জন মানুষকে দেখে বড় হয়েছি, তার পরে আমার মনে হয় যে সম্পর্ক এমনই হওয়া উচিত। আর সম্পর্ককে এমনভাবেই দেখা উচিত। কোনও পরিস্থিতিতেই পরস্পরকে ছেড়ে না যাওয়া, ধৈর্য রাখা। আজকালকার দিনে ধৈর্যটা ভীষণ কম'', তবে কি বিবাহবিচ্ছেদেরও বিরোধী অভিনেত্রী? মুমতাজ জানালেন, ''কোনও বিচ্ছেদই কাম্য় নয়। যদি তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তবে দু'জন মানুষকে হয়তো আলাদা হয়ে যেতে হয়। আলাদা হয়ে যাবে এমনটা ভেবে তো আর তারা বিয়ে করেনি। কিন্তু লিভ-ইনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিষয়টা ঠিক উলটো। ঠিক যেন পালানোর রাস্তাটা খোলা রাখা হয়!''