Sanchari Mondal faced viweres wrath for Joyi: 'জয়ী' ধারাবাহিকে প্রায় দুবছরের যাত্রা শেষ সঞ্চারী মণ্ডলের। ওই ধারাবাহিকে ইরাবতী চরিত্রে নজর কেড়েছিলেন অভিনেত্রী। ধারাবাহিক শেষ, এবার নতুন চরিত্রে এলেন সঞ্চারী, স্টার জলসা-র 'নজর' ধারাবাহিকে। একান্ত আলাপচারিতায় জানালেন, নেগেটিভ চরিত্রে যে দর্শক তাঁকে গ্রহণ করেছেন সেটা তাঁর কাছে একটি বিরাট প্রাপ্তি। দর্শকের মধ্যে ইরাবতী চরিত্রটি এতটাই প্রভাব ফেলেছিল যে একাধিকবার দর্শকের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে।
''জয়ী'-তে দুটো বছর আমার জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। ওই দুবছরে অনেক কিছু ঘটেছে। ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক ওঠাপড়া এসেছে। একটা সময়ে কিছু ব্যক্তিগত কারণে ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলাম'', বলেন সঞ্চারী, ''আবার ওই সময়েই সঙ্গীতের মতো একজন মানুষ আমার জীবনে আসে, আমাদের এনগেজমেন্ট হয়। 'জয়ী' আমার জীবনে খুব স্পেশাল একটা প্রজেক্ট। 'অপুর সংসার'-এর পরেই 'জয়ী'-র এই চরিত্রটা একটা চ্য়ালেঞ্জ ছিল। সুশান্তদাকে ধন্যবাদ যে তিনি আমার উপর এই ভরসাটা রেখেছিলেন। ইরাবতী চরিত্রের উপর দর্শকের যে কী প্রচণ্ড রাগ, সেটা শো করতে গিয়ে দেখেছি। ওই চরিত্রের জন্য আমাকে হালকা মারও খেতে হয়েছে।''
Actress Sanchari Mondal bags new role in Nojor
ঘটনাটা ঘটেছিল ২০১৭ সালের শেষে। ওই সময় সহ-অভিনেত্রীদের সঙ্গে শান্তিনিকেতনে বেড়াতে গিয়েছিলেন সঞ্চারী। সেবার সেখানেই মীরাক্কেল-খ্যাত কমেডিয়ান সঙ্গীত তিওয়ারির সঙ্গে তাঁর প্রেমের সূত্রপাত বলা যায়। সঞ্চারীকে মনের কথা বলতে, শান্তিনিকেতনেই ছুটে গিয়েছিলেন সঙ্গীত। একদিকে যখন এমন একটা সুমধুর ব্যাপার ঘটছে, অন্যদিকে তখনই ইরাবতী-প্রভাবে নাকাল হতে হয়েছিল অভিনেত্রীকে।
আরও পড়ুন: ‘দিদার জন্যই আজ আমি এখানে’, সুপ্রিয়া দেবীকেই পুরস্কার উৎসর্গ শনের
খোয়াইয়ের হাটে ঘুরতে ঘুরতেই বেশ কিছু বিরূপ মন্তব্য কানে আসতে থাকে তাঁর। পর্দার চরিত্র যে কতটা প্রভাব ফেলেছে দর্শকের মধ্যে সেটা বুঝে, বিষয়টা বেশ উপভোগই করছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরে যেটা ঘটে, তার জন্য খুব একটা তৈরি ছিলেন না। ''হাটের মধ্যে হাঁটছি, এটা-ওটা জিনিস দেখছি। তার মধ্যে একজন বিক্রেতা বললেন, 'আপনি কিন্তু জয়ী-র সঙ্গে ঠিক করছেন না।' আমি কিছু বলিনি। চুপচাপ অন্য দিকে চলে গেছি। হাটে তখন প্রচুর লোক। হঠাৎ একজন আমার পিঠে দুম করে এক ঘা বসিয়ে বললেন, 'তুমি এরকম কেন হ্যাঁ, এত বাজে কেন?' ভাগ্য ভালো তার বেশি কিছু করেননি'', বলেন অভিনেত্রী।
শুধু তাই নয়, এমনও ঘটেছে যে অভিনেত্রী কোনও ক্যাবে উঠেছেন, ক্যাবচালক তাঁকে বলেছেন, 'আপনি আমার ক্যাবে এটা যদি আমার স্ত্রী এখন জানতে পারে, নির্ঘাৎ বলবে ধাক্কা মেরে ফেলে দিতে'! দর্শকের এই রাগই তাঁর কাছে আশীর্বাদস্বরূপ, এমনটাই মনে করেন তিনি। ''আমি প্রচুর স্টেজ শো করেছি 'জয়ী' চলাকালীন। যখন সুকুমারের সঙ্গে ইরাবতীর সম্পর্কের ট্র্যাকটা চলছে, কত দর্শক এসে বলেছেন, তোমার বর এত ভালো, তাও তুমি কেন প্রেম করছ? বাইরে শো করতে গিয়ে দেখতাম অনেক সময় দর্শক আমাকে দেখে রাগে প্রায় ফুঁসছেন। আমাকে তখন স্টেজে উঠে বলতে হতো, আমি কিন্তু ভালো, 'জয়ী'-কে আমি খুব ভালোবাসি। যেটা দেখেন আপনারা, ওটা অভিনয় করি, আসলে আমি এরকম নই'', হাসতে হাসতেই জানালেন সঞ্চারী।
আরও পড়ুন: ‘ঠোঙা বিক্রি করেও মাথা উঁচু করে বাঁচা যায়’
ইরাবতী চরিত্রের এই সাফল্যই তাঁকে নেগেটিভ চরিত্রের অভিনেত্রী হিসেবে দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে, এমনটাই জানালেন অভিনেত্রী। 'নজর'-এর চরিত্রটিও নেগেটিভ এবং তাঁর কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ। স্টার জলসা-র এই অলৌকিক-ফ্যান্টাসি ধারাবাহিকে মানুষের রূপধারী এক অশুভ আত্মার ভূমিকায় এসেছেন সঞ্চারী। নায়ক ও নায়িকার মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে এবং নায়ককে অশুভ শক্তি দিয়ে কব্জা করাই এই চরিত্রের লক্ষ্য। সঞ্চারীর ট্র্যাকটির সম্প্রচার ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি চলছে সঙ্গীত ও সঞ্চারীর বিয়ের প্রস্তুতি। অভিনেত্রী জানালেন, আগামী বছরই সামাজিক বিয়ের পরিকল্পনা রয়েছে।