/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/28/madhvan-2025-08-28-12-02-27.png)
চমকে উঠলেন অভিনেতা...
সদগুরু জাগ্গি বাসুদেব, যাঁকে তাঁর ভক্তরা সদগুরু নামেই চেনেন, ২০২৪ সালে টানা দুইবার তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। মাত্র এক বছরের, মধ্যেই ৬৭ বছর বয়সী এই আধ্যাত্মিক গুরু এতটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন যে এখন বাইক নিয়ে কৈলাস পর্বতের পথে যাত্রা করছেন। যাত্রাপথে অভিনেতা আর. মাধবনের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়, যেখানে মাধবন সদগুরুর সাহস এবং ইতিবাচক মানসিকতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সাবডুরাল হেমাটোমা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা
মাধবন অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন, “আপনি সাবডুরাল হেমাটোমা থেকে সেরে উঠছেন, যখন অধিকাংশ মানুষ সতর্ক থাকতে চায়, তখন কীভাবে কৈলাস যাত্রার মতো কঠিন পথ বেছে নিলেন, তাও আবার সাইকেলে করে, বৃষ্টি আর কাদার মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রুট দিয়ে? এটা কীভাবে সম্ভব?” জবাবে সদগুরু হেসে বলেন, “মাথা ভাঙলে শিবের কোলে রাখা-ই শ্রেয় মনে করলাম।” মাধবনের মতে, এটি এক অসাধারণ মনোভাব। তিনি জানতে চান সদগুরুর শক্তির উৎস কী এবং তিনি কী খেয়েছেন। সদগুরু মজার ছলে উত্তর দেন, “আজ প্রাতঃরাশে উপমা খেয়েছি।”
তিনি আরও জানান, বহু বছর ধরেই কৈলাস যাত্রা করছেন। তবে গত পাঁচ বছর ধরে, চীনের সীমান্ত বন্ধ থাকায় তিনি নেপালের দিক দিয়ে মানস সরোবর হ্রদের কাছাকাছি গিয়েছিলেন। গত বছরও যাওয়ার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু অসুস্থতার কারণে যেতে পারেননি। হাসতে হাসতে বলেন, “গত বছর যেতে পারিনি কারণ মাথা একবার নয়, দু’বার ভেঙেছিল।”
কৈলাসে অলৌকিক অভিজ্ঞতা
কথোপকথনের সময় সদগুরু সেই অভিজ্ঞতার কথাও শোনান। তিনি টানা ১২ সপ্তাহ জ্বরে ভুগছিলেন এবং চিকিৎসকরা বলেছিলেন তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু কৈলাসে পৌঁছে তিনি আশ্চর্যভাবে সেরে ওঠেন। তাঁর কথায়,
"কৈলাসে পৌঁছানোর সময় আমার উরুর প্রায় এক-চতুর্থাংশ পেশী ক্ষয় হয়েছিল। তবু সেখানে বসে এক অদ্ভুত ঐশ্বরিক শক্তি অনুভব করলাম। মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই নিজেকে নতুন মানুষ মনে হচ্ছিল, তখনই ট্রেকিং করাও শুরু করি।"
মাথার আঘাত ও অস্ত্রোপচারের গল্প
এর আগে সদগুরু নিজের দ্বিতীয় অস্ত্রোপচারের ঘটনার কথাও শেয়ার করেছিলেন। সেটিও মস্তিস্কের অপারেশন ছিল। একদিন তিনি তাঁর মেয়ের সঙ্গে সাঁতার কাটছিলেন। হঠাৎ দেখেন, একটি বানর ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে, কারণ সেখানে প্রচুর ফল ছিল। হঠাৎ মেয়ে চিৎকার করলে বানরটি মুখ খোলা রেখে ঘুরে দাঁড়ায়। সদগুরু বলেন, “আমি সহজাতভাবে উঠে পড়ি এবং বানরটিকে তাড়ানোর জন্য দৌড়াই। কিন্তু কেউ দরজা বন্ধ করে রেখেছিল। আমি গিয়ে ফুল স্পিডে কাঁচের দরজায় ধাক্কা খাই। দরজাটি ভাঙতেই বিস্ফোরণের মতো শব্দ হয় এবং বানরটা পালিয়ে যায়, কিন্তু আমার মাথা ফেটে যায়।"
স্ক্যানের পর জানা যায়, মাথার হাড়ের নিচে একটি বড় রক্তক্ষরণ হয়েছে। চিকিৎসকেরা আগেই সতর্ক করেছিলেন, মাথায় আঘাত লাগলে এমন হতে পারে। সদগুরু বলেন, “সেই রাতে অপেক্ষা করছিলাম। ভেবেছিলাম ভারসাম্যহীনতা বা ব্যথা হবে। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে ভালো লাগছিল। কয়েক দিনের প্রোগ্রাম শেষ করে কোয়েম্বাটুরে গিয়ে স্ক্যান করাই, তখনও রক্তক্ষরণ ছিল। এরপরই আবার অস্ত্রোপচার করতে হয়।”
অস্ত্রোপচারের পর সংক্রমণ না হলেও তিনি তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হন। কিন্তু তাঁর দৃঢ় মনোবল এবং সাধনার শক্তিতে তিনি ধীরে ধীরে সবকিছু কাটিয়ে ওঠেন এবং আজ আবার নতুন উদ্যমে জীবনের পথে ফিরেছেন।