ভেন্টিলেশনে চলছে লড়াই। ঐন্দ্রিলা হার মানার মানুষ নয়। তাঁর সঙ্গে প্রতিদিন কঠিন প্রহর কাটাচ্ছেন সব্যসাচী। তবে গতকাল রাত থেকেই স্বস্তির খবর। সব্যর পোস্ট দেখে যেন শান্তিতে ঘুমিয়েছেন সকলেই। ভাল রয়েছে ঐন্দ্রিলা। হাজার প্রার্থনা বিফলে যেতে পারে না। তাই তো, নিজের মনের কথা ব্যক্ত করেছেন সব্যসাচী।
এ এক নাম না জানা লড়াই। কাছের মানুষকে আঁকড়ে ধরে থাকার লড়াই। মুহুর্তের মধ্যে অনেককিছু দেখেছেন সব্যসাচী। একসময় অসাড় হয়ে যাওয়া ঐন্দ্রিলার (Aindrila Sabyasachi) পাশেও বসে থেকেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিস্তৃত পোস্ট করে লিখলেন, "হাজারো মানুষের নিস্বার্থ ভালবাসার জন্য এতখানি লেখার প্রয়োজন ছিল"। এমনকি এও জানালেন, একটা সময় তাঁর কোনও রেসপন্স ছিল না। একজন নিউরোসার্জন এসে পরীক্ষা করার পর বলেছিলেন, ও চলে গেছে অনেক আগেই। শুধুশুধু আটকে রেখেছেন কেন? লেট হার গো পিসফুলি! কিন্তু না, তখন ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস ভাঙেনি। ঐন্দ্রিলার ছোট্ট হাত ধরে বসেছিলেন সব্যসাচী।
আরও পড়ুন < জিয়াগঞ্জের প্রতিটা মন্দির-মসজিদে প্রার্থনা, ঐন্দ্রিলার পাশে অরিজিৎ সিং >
একের পর এক যন্ত্রণা, কাছের মানুষের অনেকেই এসেছিলেন। কেউ কেউ তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। সহ্য করতে পারছিলেন না সব্যসাচী। পরশু রাতে কাউকে বাঁধা দেন নি। সকলে এসেছেন, তাঁকে দেখেছেন, ছুঁয়েছেন। শরীর ফুলছিল ঐন্দ্রিলার, রক্তচাপ কমে ৬০/৩০। নিজেকে অপরাধী ভাবতে শুরু করেছিলেন। সত্যিই কি তাঁর জন্য যেতে পারছেন না ঐন্দ্রিলা। কিন্তু ঈশ্বরের কৃপা আর তাঁর বড়মার আশীর্বাদ, হঠাৎ করে নড়ে ওঠে ঐন্দ্রিলার হাত। আবারও আশার আলো দেখতে পেলেন সব্যসাচী।
মিরাকেল হয়! এভাবেই হয়! শূন্য থেকে এক ধাক্কায় ফিরে আসা যায়। এখন ভাল আছেন ঐন্দ্রিলা। একরকম কোনও সাপোর্ট ছাড়াই আছেন। ভেন্টিলেশন থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টাও করছেন। ক্লিনিক্যালি তাঁকে সুস্থ করার চেষ্টা চলছে। চিকিৎসকরা নিজেদের কাজ করছেন সাধ্যমত। আর এদিকে সব্যসাচী তাঁদের অনুরাগীদের জন্য বললেন, "ধন্যবাদ দিয়ে তোমাদের ছোট করতে পারব না। একদিনে, বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন আশীর্বাদের ফুল প্রসাদ এসেছে। ঈশ্বরে আমিও বিশ্বাস করি। মুর্শিদাবাদের প্রতিটি মন্দিরে মসজিদে প্রার্থনা হয়েছে"।
একদিকে, মরণপণ লড়াই অন্যদিকে মানুষের ভিড় তাঁদের নানান অপপ্রচার এবং কটু কথা। কিন্তু গতকাল থেকে সামনের চিত্রটা একেবারে ভিন্ন। সব্যসাচী বললেন, ওর চিকিৎসার জন্য একটা পয়সাও কেউ দেয়নি। আমার অপমান হোক তবে ওঁর অপমানে আমার গায়ে ফোস্কা পড়ে। তবে সারাদিন নির্ধিধায় যে অরিজিৎ এর সঙ্গে আলোচনা করেছেন একথাও জানিয়েছেন তিনি।