ঐশ্বর্য রাই বচ্চন, নামটা শুনলেই চোখের সামনে কতগুলো রাজকীয় পরিচ্ছদ ভেসে ওঠে। গুরু, দেবদাস, চোখের বালি, ইরুভারের মতো ছবিগুলোতে বচ্চন ঘরনী পিরিয়ড লুকে দাপিয়েছেন ৭০এমএম। ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের ক্লাসিক অ্যাপিলই তাঁকে পিরিয়ড ছবিতে জায়গা করে দিয়েছে। তাঁর সৌন্দর্যকেই কাজে লাগিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতারা পেছনের সময়ের চরিত্রের বুনন করেছেন। আজ তিনি বিবাহিত এবং সঙ্গে এক কন্যাসন্তানের মা। কিন্তু তাঁকে দর্শকরা মনের মনিকোঠায় রেখেছেন সেই গুছিয়ে শাড়ি পরা, সঙ্গে বাঙালিয়ানার সাজ আবার কখনও বাদশা আমলের বেগম হিসাবে। ২০১৬য় অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল ছবির মাধ্যমে কামব্যাক করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি এখনও বলিউডের রাণী। বৃহস্পতিবার ৪৫ টি বসন্ত পার করে ফেললেন ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। এদিন আমরা ফিরে তাকাব মণি রত্নম, সঞ্জয় লীলা বনশালী ও ঋতুপর্ণ ঘোষের দিকে, যারা প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরীকে পিরিয়ড ড্রামার মহীরুহ তৈরি করেছেন।
মণিরত্নম- ইরুভার ও গুরু
কুড়ি বছর আগে মণিরত্নম এমন কিছু দেখেছিলেন ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের মধ্যে যা অন্য পরিচালকদের দেখা তখনও বাকি ছিল। কাঞ্জিভরম শাড়ি ও চুলে ফুলের মালা, ইরুভার ছবিতে মোহনলালের বিপরীতে দৃশ্যগুলোয় মোহময়ী অবতারে সামনে এলেন ঐশ্বর্য। ইরুভার একটি পলিটিক্যাল ড্রামা, যেখানে মোহনলাল ছিলেন এমজিআরের চরিত্রে। এরপরে আসে গুরু। দুটো ছবির মাঝে ২০ বছরের ব্যবধান। পঞ্চাশের দশকের গুজরাত, সারল্য দিয়ে স্ক্রিনে আবার তার উজ্জ্বল উপস্থিতি।
গুরু-ছবিতে ঐশ্বর্য রাই বচ্চন
আরও পড়ুন, দুই প্রজন্মের ফারাক থেকেই তৈরি হল ‘জেনারেশন আমি’
সঞ্জয় লীলা বনশালী- হাম দিল দে চুকে সনম ও দেবদাস
''কীসের জন্য নিজের ওপর এত গর্ব, দেব? সৌন্দর্য? ঐশ্বর্য?''-ছবিতে অ্যাশের এই সংলাপ ছিল তাঁর ছোটবেলার বন্ধু দেবদাসের জন্য। এই ছবিতে শাহরুখের সামনে বিয়ে করে চলে যাওয়ার সময়ে তাঁর মুখোমুখি হওয়ার দৃশ্য হোক বা মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে নাচের যুগলবন্দী, বনশালী পিরিয়ড ছবির গ্র্যাঞ্জা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। তার আগে হাম দিল দে চুকে সনম ছবিতে নায়িকা গুজরাতি অবতার। সাদামাটা পোশাকে গুজরাতি গৃহবধূর চরিত্র, যে পর্দার আড়ালে থাকতে চেয়েছে তার থেকে অনেক আলাদা। ভাবুন কীভাবে বনশালীর কল্পনার মুঘল-এ-আজমের মধুবালা গুরু দত্তের নায়িকা হয়ে যায় আবার মণিরত্নমের তৈরি ছবিতে ঐশ্বর্য নিমেষে বদলে যায় বিমল রায়ের সুজাতা বা নুতনের জায়গায়।
সঞ্জয় লীলা বনসালীর দেবদাসে অ্যাশ
ঋতুপর্ণ ঘোষ- রেনকোট ও চোখের বালি
যদি সাধারণ বাঙালি বৌদি থেকে দৈনন্দিন সামাজিক বাঁধন ভুলে যাওয়া চিত্তাকর্ষক নারীকে দেখতে চান, তাহলে ঋতুপর্ণ ঘোষের রেনকোট রয়েছে আপনার জন্য। বার্গম্যান এসকিউ চেম্বার ড্রামার স্টাইলে ঘোষের বিভিন্ন ছবিতে তিনি ইনডোরের বাইরে বেরোননি। ১৯০২ এ রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি চোখের বালিতে ঐশ্বর্য বিধবা রমণীর ভূমিকায়। পুরো ছবিটা তিনি রাজত্ব করেছিলেন। যদিও চোখের বালির বিনোদিনীর ভূমিকায় নন্দিতা দাস পরিচালকের প্রথম পছন্দ ছিল। কিন্তু অ্যাশ সেই চিন্তায় সজোরে ব্যাঘাত হানলেন। ঐশ্বর্য রাই ছাড়া এই ছবির বিশ্বের দরবারে সমাদৃত হতে সময় লাগত।
ঋতুপর্ণ ঘোষের চোখের বালিতে ঐশ্বর্য রাই বচ্চন
Read the full story in English