প্রথম সন অফ সর্দার-এর বেশিরভাগটাই ভুলে যাওয়ার মত। এমনকি, সন অফ সর্দার ২ দেখতে গিয়েও হতাশাই সঙ্গি হবে। অজয় দেবগনের সেই চিরচেনা "ইয়ে কেয়া হো রাহা হ্যায়?" ভঙ্গি। প্রয়াত মুকুল দেব এবং বিন্দু সিংয়ের চরিত্ররা স্ক্রিনে লক্ষ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পূর্বের ছবির থেকেও বেশি ক্লান্তি ফেরত আসবে।
এইবার গল্পে নতুন করে জোড়া হয়েছে দুই উপাদান—এক, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ঘিরে ড্রামা। দুই, দীপক ডোব্রিয়ালের অসামান্য অভিনয়। পাকিস্তানি চরিত্রগুলোকে এই সিনেমায় শুধুই 'চোখে সুরমা দেওয়া সন্ত্রাসী'র মতো দেখানো হয়নি, যা স্বস্তির বিষয়। ডোব্রিয়াল একজন ট্রান্স চরিত্রে অভিনয় করে প্রায় পুরো ছবিটিতে নিজের আধিপত্য বিস্তার করে নিয়েছি। যদি স্ক্রিপ্ট তাকে একটু স্বাধীনতা দিত, হয়তো আরও বেশি কিছু করতে পারতেন।
অজয় দেবগনের চরিত্র জাসি রন্ধাওয়া, তার পুরনো প্রেমিকা (ডলি আহলুওয়ালিয়া) কে পেছনে ফেলে স্কটল্যান্ডে ফিরে আসে, যেখানে স্ত্রী (নীরু বাজওয়া) এখন 'বেওয়াফা'। একগুচ্ছ বিভ্রান্তি এবং নাটকের মধ্যে সে প্রেম, স্বদেশ, এবং নিজের পরিচয় পুনরুদ্ধার করতে ব্যাস্ত। কিন্তু সিনেমার গঠন এতটাই অসংলগ্ন যে, সে চেষ্টা ব্যর্থ বলেই ধরা যায়।
মৃণাল ঠাকুরের রাবিয়া চরিত্রটি খানিকটা আলোর রেখা—পেশায় নৃত্যশিল্পী এবং ঘটনাচক্রে একজন পাকিস্তানি। তার মেয়ের প্রেমিকের বাবা (রবি কিষাণ) এক কট্টর ভারতপন্থী ভেড়া চাষী, যিনি পাকিস্তানিদের ঘৃণা করেন। চাঙ্কি পান্ডে ও কুব্রা সাইতের মতো পার্শ্ব চরিত্রগুলো গল্পে যোগ হয়, কিন্তু তাদের উপস্থিতি কেবল চটকদার ভরাট বলেই মনে হয়। পুরনো ছাঁচের নায়কের পাশে অনেক কম বয়সী নায়িকা, বর্ডার (১৯৯৭) ছবির রেফারেন্স দিয়ে কমেডি তৈরির চেষ্টা, শরৎ সাক্সেনার বর্ণবাদ মিশ্রিত রসিকতা—সব মিলিয়ে, ছবিটি যেন একটা কোলাজ, যার রং রস নেই বললেই চলে।
তবুও, দীপক ডোব্রিয়াল এবং কুব্রা সাইতের মত অভিনেতাদের সঠিক ব্যবহার করলে ছবিটি কিছুটা হলেও স্মরণীয় হয়ে উঠতে পারতো। দেবগনকে যদি বয়স উপযুক্ত কোনও নায়িকার সঙ্গে জোড়া লাগিয়ে শক্ত স্ক্রিপ্ট আর মজার কিছু ডায়লগ দেওয়া হতো, হয়তো মজা পাওয়া যেত। শেষকথা? সন অফ সর্দার ২ আসলে প্রমাণ করে দিল, পুরনো ভুল থেকে শিক্ষা না নিলে, নতুন কিছু বলার সুযোগও চলে যায়। কিছু ভালো অভিনয় এবং মৃদু হাসির মুহূর্ত ছাড়া, ছবিটি মূলত হতাশার দিকেই।