অলিভিয়া সরকার মানেই টেলিপর্দাতে চোখ ঝলসে দেওয়া লুক এবং জ্বালাময়ী উপস্থিতি। বিগত বেশ কয়েকটি ধারাবাহিকে তাঁকে দেখা গিয়েছে তেমনই কিছু খুব গ্ল্য়ামারাস অথচ নেগেটিভ চরিত্রে। বিশেষ করে ‘সীমারেখা’ ধারাবাহিকের টিয়া চরিত্রটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল, খল-চরিত্র হওয়া সত্ত্বেও। সম্প্রতি আবারও তিনি সাড়া ফেলেছেন ‘জয়ী’ ধারাবাহিকে এসে। বেশ কয়েক সপ্তাহ হল, অলিভিয়া-অভিনীত মালিনী চরিত্রের ট্র্য়াকটি শুরু হয়েছে এবং গল্পে এসেছে নতুন ক্রাইসিস, একটা ত্রিকোণ প্রেমের আভাস।
প্রকারান্তরে মালিনীও কিন্তু দর্শকের চোখে খুব একটা ভাল নয়। তবে এই চরিত্রটা পেয়ে খুবই খুশি অলিভিয়া। ''দোলের আগের দিন যখন জয়ী-র প্রোডাকশন থেকে ফোন আসে, তখনও ঠিক শিওর ছিলাম না করতে পারব কি না কারণ তার আগেই কয়েকটা জায়গায় কথা হয়েছিল কিন্তু তখনও সেই কাজগুলো শুরু হয়নি। কিন্তু ভাগ্য়িস না করিনি, করলে বোকামি হতো,'' বলে চলেন অলিভিয়া, ''মালিনী সেন... অ্য়াম লাভিং হার, এরকম চরিত্র প্রথমবার করছি। খুব সফল, পাওয়ারফুল কিন্তু সম্পর্কের দিক থেকে একেবারেই সফল নয়. তাই এখন তার ঋভুকে চাই। ঋভু মালিনীকে একটা অ্য়াক্সিডেন্টের থেকে বাঁচিয়েছিল। তার পর থেকেই মালিনী তার প্রেমে পড়ে গিয়েছে।''
আরও পড়ুন: স্বপ্নের দেশে হনিমুনে অঙ্কিতা, রইল ভিডিও
কিন্তু ধারাবাহিকের গল্পে ঋভু তো বিবাহিত এই মুহূর্তে, তাই সামাজিক নৈতিকতা অনুযায়ী, মালিনী কিন্তু মোটেই ঠিক পথে এগোচ্ছে না। তাই একশ্রেণির দর্শক মালিনীকে বাজে মেয়ে বলতেই পারেন। ঠিক যেমন 'সীমারেখা'-তে টিয়াও দর্শকের চোখে খল বলে চিহ্নিত ছিল। তবে অলিভিয়া এখনই মালিনীকে 'বাজে মেয়ে' বলতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, এখনও মালিনীকে খারাপ বলে দেখানো হয়নি। সে প্রেমে পড়েছে, শুধু সময়টা ভুল। ভবিষ্য়তে সে খল হয়ে উঠবে নাকি জয়ী-ঋভু দুজনেরই ভাল বন্ধু হয়ে উঠবে সেটা কিন্তু ক্রমশ প্রকাশ্য়।
তা ছাড়াও ভাল-খারাপ নিয়ে বেশ যুক্তিযুক্ত একটা ভাবনাও রয়েছে অভিনেত্রীর-- ''আসলে কী বলতো, আমরা সবাই কোথাও না কোথাও খারাপ অন্য় কারও কাছে। বাস্তব বা কাল্পনিক, দুভাবেই, আর এখনও কিন্তু মালিনীকে খারাপ দেখানো হয়নি।'' তার মানে চরিত্রকে বেশ ভালই বেসে ফেলেছেন অলিভিয়া। আর
কথোপকথনে একটা বিষয় বেশ বোঝা গেল, এই যে বার বার 'বাজে মেয়ে' হতে হয় তাঁকে টেলিপর্দায়, সেটা তিনি বেশ উপভোগ করেন।
''সিরিয়াসলি ব্য়াড গার্ল ইমেজটাই মেনটেন করব ভাবছি। খারাপ মেয়ে হয়েও এত ভালবাসা পাওয়া যায় মানুষের কাছে, সেটা টিয়া চরিত্রটা করার সময়েই রিয়্য়ালাইজ করেছিলাম। আর ব্য়ক্তিগতভাবে আমি তো খুব চাপা মানুষ, ট্রাস্ট মি, এই ধরনের চরিত্র করলে ভিতরের জমা রাগগুলো বেরিয়ে আসে,'' হাসতে হাসতে জানালেন অভিনেত্রী।
আরও পড়ুন: বাংলা ছবির গর্ব মধুরা, এবার পাড়ি ‘কান’-এ
তার মানে পর্দায় বার বার বাজে মেয়ে হতে বেশ ভালই লাগে তাঁর। আসলে নেগেটিভ চরিত্রগুলির মধ্য়েই শেডস থাকে অনেক বেশি এবং যে কোনও ভাল অভিনেত্রীই চান তেমন চরিত্রে নিজেকে প্রমাণ করতে। অলিভিয়া বরাবরই স্পষ্টবক্তা এবং নিজেকে নিয়ে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী। তাই মালিনী চরিত্রের মধ্য়ে তাঁর ব্য়ক্তিত্বের বেশ অনেকটাই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। আর বিশেষ করে ঋভু মানে ধারাবাহিকের নায়ক, অভিনেতা দিব্য়জ্য়োতির সঙ্গে তাঁর অন-স্ক্রিন কেমিস্ট্রি খুব ভাল। তবে অফ-স্ক্রিন দুজনের মধ্য়ে বোঝাপড়া কেমন, সেই নিয়ে তো কৌতূহল তো থেকেই যায়।
''দিব্য়জ্য়োতির সঙ্গে আমার বন্ডিংটা বেশ ভাল এবং সেটা প্রথম দিন থেকেই হয়েছে। সিনে যাওয়ার আগে আমরা আলোচনা করে নিই, রিহার্সাল করি। আবার অনেক সময়ে ও অনেক কিছু জিজ্ঞেসও করে নেয়, ওর এই আগ্রহটা আমার খুব ভাল লাগে,'' জানালেন অলিভিয়া। তবে কেরিয়ারের দিক থেকে তো অলিভিয়া অবশ্য়ই সিনিয়র দিব্য়জ্য়োতির থেকে। নায়ক কি তবে তাঁকে দিদি বলে ডাকেন অফ-স্ক্রিন? একটুও সময় না নিয়ে বললেন তিনি, ''আমি ভাই-বোন পাতাই না কাউকে, কিউট ছেলেদের তো মোটেই না!''