Prosenjit Chatterjee, Bengali Television: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় আবারও টেলিপর্দায় প্রযোজকের ভূমিকায়। ১৩ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে তাঁর কোম্পানি এনআইডিয়াজ প্রযোজিত ধারাবাহিক 'অলৌকিক না লৌকিক'। স্টার জলসা চ্যানেলে প্রতি শনি ও রবিবার রাত আটটায় সম্প্রচারিত হবে এই সীমিত এপিসোডের সিরিজ। অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বিজ্ঞানমনস্কতার লড়াই, এই ধারাবাহিকের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। সাংবাদিক সম্মেলনে তাই বিশ্বাস ও অবিশ্বাস নিয়ে উঠল অনেক কথা। প্রযোজকের ব্যক্তিগত জীবনের অভ্যাস ও দৃষ্টিভঙ্গীর প্রসঙ্গও এল।
সেই কথার পরিপ্রেক্ষিতেই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানালেন যে তিনি নিজে ঈশ্বরবিশ্বাসী হলেও অন্ধবিশ্বাসকে সমর্থন করেন না। ''আমি রোজ পুজো করি। পুজো না করে আমি বাড়ি থেকে বেরোই না। সেটা বিশ্বাসের জায়গা। কারও বিশ্বাসে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়'', বলেন প্রসেনজিৎ, ''কিন্তু পুজো বলতে কোনটা এবং কতটা, কতটা আমরা দেখাবো, সেটা নিয়ে ভাবার প্রয়োজন রয়েছে। অনেকে বলেন না যে অমুক জায়গায় গিয়ে আপনাকে মাথাটা ঠেকাতেই হবে, বা অমুক জায়গায় যেতেই হবে, সেইখানে আমার আপত্তি রয়েছে।''
আরও পড়ুন: টানা ২৫ সপ্তাহ শীর্ষে ‘কৃষ্ণকলি’, রইল এই সপ্তাহের সেরা দশ তালিকা
এই সিরিজের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি ও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, দুজনেই পরেন জ্যোতিষ-নির্দেশিত আংটি। অথচ এই সিরিজের প্রোমো-তে ডাইনি অপবাদ, তুকতাক, গুরুদের ভণ্ডামির পাশাপাশি ভাগ্য ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে আংটিধারণের প্রসঙ্গটিও উঠে এসেছে। তাই সাংবাদিকদের মধ্যে থেকে প্রশ্ন ছিল প্রযোজক ও ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টরের কাছে যে তাঁরা ব্যক্তিগত জীবনে জ্যোতিষের আংটি নিয়ে ঠিক কী মনে করেন?
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ''আমার আঙুলের আংটিগুলি অনেক বছরের। আমি এর আগে অনেক ইন্টারভিউতে বলেছি। আমার অনেক অল্পবয়সের ছবি যদি দেখেন, তখনও এই আংটি দুটো দেখতে পাবেন। এই দুটো পরিয়েছিলেন আমার মা। তিনি খুব বিশ্বাস করতেন। মায়ের প্রতি আমার শ্রদ্ধা থেকেই বলুন বা বিশ্বাসই বলুন, এই আংটি দুটো আমি পরি। অনেকে বলেছেন যে অন্য কোনও আংটি নিলে নাকি আমি অনেক উঁচুতে উঠে যাব। কিন্তু আমি বলেছি না, মা যা দিয়ে গিয়েছেন, সেটাই থাক।''
প্রায় একই কথার পুনরাবৃত্তি করলেন জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। তিনিও জানালেন যে পরিবারের কারও অনুরোধেই আংটি পরা। কিন্তু আংটি দিয়ে ভাগ্য ফেরানোর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাঁরা মানুষকে ঠকিয়ে চলেছেন, তাঁদের সম্পর্কে সচেতন করাই এই সিরিজের উদ্দেশ্য।
আরও পড়ুন: একদিকে ডাইনি, অন্যদিকে বিজ্ঞান! দর্শক ঘাবড়ে যাবেন না তো?
বাংলায় যুক্তিবাদী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, প্রবীর ঘোষের 'অলৌকিক নয় লৌকিক' বইয়ের উপর ভিত্তি করেই মূলত তৈরি হয়েছে এই সিরিজ। ওই বইতে প্রবীর ঘোষ তাঁর নিজের বহু অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে বেশ কিছু অদলবদল ও সংযোজন করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় সংযোজন হল মূল প্রোটাগনিস্ট ও তার সহযোদ্ধাদের টিম বিল্ডিং। বিক্রম ও তার চার বন্ধুরা নিজেদের উদ্যোগেই কুসংস্কার দূরীকরণের কাজে সঙ্ঘবদ্ধ হবে।
প্রধান পাঁচটি চরিত্রে রয়েছেন ঋদ্ধিশ চৌধুরী, সোহিনী বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবপ্রিয় মুখোপাধ্যায়, কার্তিকেয় ত্রিপাঠী ও সৌম্যরূপ সাহা। প্রত্যেকটি গল্প নিয়ে থাকবে দুদিনের এপিসোড অর্থাৎ দর্শক প্রতি উইকএন্ডেই পাবেন নতুন অভিযান যা সম্পন্ন হবে সেই উইকএন্ডেই। মোট ১৬টি গল্প নিয়ে ৩২টি এপিসোড সম্প্রচার হবে। এই সিরিজের ইউএসপি, বাংলার সবচেয়ে বড় তারকা অভিনেতারা এই সিরিজের বিভিন্ন গল্পে, বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করবেন।
আরও পড়ুন: কাটমানি কাণ্ডের ঢেউ এবার টলিপাড়াতেও, সৌজন্যে নবনির্মিত ফেডারেশন
সব্যসাচী চক্রবর্তী, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, দেবেশ চট্টোপাধ্যায়, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়কে দেখা যাবে বিভিন্ন গল্পে। শোানা যাচ্ছে একটি বিশেষ গল্পে দেখা যেতে পারে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কেও। টিম 'অলৌকিক না লৌকিক' অত্যন্ত আশাবাদী যে দর্শক এই সিরিজটি দেখে বিভিন্ন কুসংস্কার সম্পর্কে অবহিত হবেন ও সচেতনতা বাড়বে।