Aparajita Auddy On Monsoon:আকাশজুড়ে কালো মেঘ, বাইরে অবিরাম বৃষ্টি। কখনও মুশলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে তো কখনও আবার ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। আর সেই বৃষ্টিভেজা মাটির সোদা গন্ধে প্রেমিক মন চায় প্রিয় মানুষটাকে জড়িয়ে ঝিঝি পোকার ডাকের সঙ্গে একে অপরের চোখে হারিয়ে যেতে। বর্ষার দুপুরে পাত পেরে খিচুরি আর গরম গরম বেগুনি বাঙালি বাড়ির চেনা চিত্র। সন্ধ্যা হলেই চপ-মুড়ির সঙ্গে জমে ওঠে ড্রইং রুমে আড্ডা। বর্ষার রাতে লোডশেডিংয়ের সময় মা-ঠাকুমাদের কোলে মুখ গুজে ভূতের গল্প শোনার অনাবিল আনন্দের সত্যিই কোনও বিকল্প হয় না। এইরকম নানান অনুভূতির মিশ্রণে বর্ষাকে বেঁধে রাখে আমবাঙালি। ভুরিভোজ থেক আড্ডা, প্রেম সবটাই বর্ষার বিশেষ প্রাপ্তি। শুধু সাধারণ বাঙালি ঘরেই কিন্তু, এই চিত্র ধরা পড়ে তা নয়। রূপোলি দুনিয়ার তারকাদের জীবনটাও যেন অনেকটা একই সুরে গাঁথা। অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যর কথায় সেটা একদম স্পষ্ট।
বৃষ্টিস্নাত কয়েকটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন অভিনেত্রী। ক্যালেন্ডারের হিসেবে বয়স বাড়লেও মনের বয়স বিন্দুমাত্র বাড়েনি। তাই আজও আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামলে ছুটে যান ছাদে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে অপরাজিতা বলেন, 'আমি তো এখনও ছোট। কে বলেছে আমি বড় হয়েছি। আমি তো বড় হতেই চাই না। বন্ধুদের বলি, তোরা বুড়ো হও, আমি কেন হব? (ফোনের ওপারে সেই প্রাণখোলা হাসি) বৃষ্টি আমার ভীষণ ভাল লাগে। ঋতুচক্রের মধ্যে বর্ষাই আমার প্রিয় ঋতু। বর্ষা নিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও কিন্তু, অনেক গল্প-কবিতা লিখেছেন। ছোটবেলা থেকেই বর্ষা আমাকে ভীষণ নাড়া দেয়। বৃষ্টির শব্দ আমার মনকে উদ্বেলিত করে। যদি আমি বৃষ্টির এই শব্দ সংরক্ষণ করতে পারতাম...কারণ এই শব্দটা আমার মনে জাগায় এক অন্য অনুভূতি। মনটাকে অন্যভাবে স্নাত করে। আমার মনে হয় বৃষ্টির শব্দের সঙ্গে মনের অনুরণনগুলো বদলে ফেলা যায়। এটা আমার বিশ্বাস। যে জায়গাগুলো একটি নিঃস্তব্ধ, কোলাহল নেই সেই সকল জায়গার বৃষ্টির শব্দ আমাকে আরও বেশি আকৃষ্ট করে। পাহাড় থেকে সমুদ্র, বৃষ্টি সর্বত্রই আমাকে একটা অন্য উন্মাদনা দেয়।'
গুরুজনদের চোখ রাঙানি ফাঁকি দিয়েই বৃষ্টিতে ভিজতে চলে যান সকলের প্রিয় অপরাজিতা আঢ্য। সেই প্রসঙ্গে মজা করে বলেন, 'ভিজো না ভিজো না...আমি কিন্তু, ঠিক সকলের চোখের আড়ালে মন খুলে একটু ভিজে নিই। তারপর স্নান সেরে নিই।' বৃষ্টিভেজা দিনে স্কুলের স্মৃতিগুলো মনের মাঝে ভিড় করে আসে। সোনলি দিনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, 'স্কুলে পড়ার সময় তো বৃষ্টি হলেই ভিজে বাড়ি আসতাম। হাওড়ায় তখন একটু বৃষ্টি হলেই জল জমে যেত। ব্যাগ প্লাস্টিকে ঢুকিয়ে জুতো হাতে নিয়ে বৃষ্টির জমা জলে ছলাৎ ছলাৎ করতে করতে আসতাম। তখন আবার বেশ কিছু ম্যান হোল খোলা থাকত। সকলে সেই দিকটা মাথায় রেখে হাঁটতে হত। ওই দিনগুলোর কথা আমার স্মৃতিতে একদম টাটকা।'
মেয়েবেলার গল্প, বর্তমানে বৃষ্টিতে ভেজার আনন্দের কথা যেমন বলেছেন সেই সঙ্গে আরও একটি বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। সেটা হল অতিবর্ষা কখনই কারও জন্য ভাল নয়। যাঁদের মাথার উপর ছাদ নেই, রাস্তায় যাতে দিন কাটে তাঁদের কষ্টকে অনুভব করে বলেন, 'যাঁরা ভবঘুরে, রাস্তায় থাকেন, বাড়িতে থাকার মতো সামর্থ নেই, ফুটো ছাদ থেকে জল পড়ে তাঁদের জন্য বর্ষা খুবই কষ্টের। সেটা অস্বাকীর করার কোনও উপায় নেই। তবুও বর্ষায় একটা আলাদা রূপ, আলাদা মুগ্ধতা আছে।'