Aparajita Ghosh And Sudip Mukherjee: মেগার দর্শকের বিনোদনের আসরে এবার নয়া সংযোজন 'চিরসখা'। না বলা এক সম্পর্কের কথা নিয়ে স্টার জলসার পর্দায় আগামী ২৭ জানুয়ারি থেকে সম্প্রচারিত হবে এই নতুন ধারাবাহিক। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত ধরে প্রথমবার দর্শকের দরবারে অপরাজিতা ঘোষ দাস ও সুদীপ মুখোপাধ্যায় জুটি। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ভাবনায় বরাবরই কিছু না কিছু নতুনত্বের ছোঁয়া থাকে। 'চিরসখা'-র প্রোমো দেখলে বোঝা যাবে এখানেও রয়েছে অভিনবত্ব। সম্পর্কের না বলা কথা যে শুধু 'জেন ওয়াই'-র মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় সেটা কিন্তু, বেশ স্পষ্ট। স্বামীহারা এক স্ত্রী, মায়ের জীবনেও যে কিছু না বলা সম্পর্ক থাকতে পারে সেই গল্পই যেন বুনেছেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। সিরিয়াল শুরুর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বললেন ধারাবাহিকের দুই কেন্দ্রীয় চরিত্র অপরাজিতা ঘোষ ও সুদীপ মুখোপাধ্যায়।
চিরসখার প্রোমো মুক্তির পর অপরাজিতার লুকের স্নিগ্ধতা এখন ড্রইং রুমের টাটকা টপিক। নিজের লুক নিয়ে অপরাজিতা বললেন, 'একটা কথা বলতে পারি প্রোমোতে আমার লুকটা সকলের নজর কেড়েছে ঠিকই। প্রথমবার এইভাবে দর্শক আমাকে দেখছে। কিন্তু, আমি বলতে চাই, এইরকম একটা চরিত্রে বাংলা সিরিয়ালের দর্শক প্রথমবার আমাকে দেখবে। আসলে একজন অভিনেত্রী হিসেবে লুক নয়, আমার প্রথম প্রায়োরিটি অভিনয় করা। আমাকে যে চরিত্রের জন্য সিলেক্ট করা হয়েছে সেখানে অভিনয়ের কতটা সুযোগ রয়েছে। এখানে আমাকে সেইরকমই একটা চরিত্র দেওয়া হয়েছে। তাই চিরসখার স্ক্রিপ্ট শুনে রাজি হওয়ার থেকেও বড় ব্যপার আমি এইরকম একটা চরিত্রে কাজের সুযোগ পেয়ে আপ্লুত। আমি চেষ্টা করব এই চরিত্রটাকে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে। দর্শক এখনও পর্যন্ত আমার লুকটা দেখেছে। আশা করছি জার্নিটা তাঁদের আরও ভাল লাগবে।'
দীর্ঘদিনের অভিনয় কেরিয়ার। তারপরও এই চরিত্রটা কোনওভাবে চ্যালেঞ্জিং বলে মনে হচ্ছে? অপরাজিতা বলেন, 'আমাদের চারপাশে কিন্তু, এইরকম চরিত্র রয়েছে। তাঁদের নিয়েও আমরা অনেক সময় হয়ত কথা বলি। কিন্তু, দৈনন্দিন জীবনে আমি যেরকম মানুষ এই চরিত্রটা সম্পূর্ণ তার বিপরীত। তাই এই চরিত্রটাকে ফুটিয়ে তোলা খুবই চ্যালেঞ্জিং।' অপরাজিতা আর ঋষি কৌশিকের জুটি দর্শকমহলে খুব পপুলার। চেনা ছকের বাইরে এই নতুন জুটি নিয়ে কতটা আশাবাদী? অভিনেত্রীর সাফ জবাব, আমি একজন অভিনেত্রী। কোনও কাজ করার সময় আমি জুটির কথা ভাবি না। চরিত্র আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। দর্শক জুটি হিসেবে দেখতে হয়ত ভালবাসে। আমি যখন কোনও চরিত্রে হ্যাঁ বলি তখন কিন্তু, জুটির কথা ভাবি না। নিজেকে আরও ভালভাবে দর্শকের সামনে মেলে ধরার চেষ্টাটাই করে যাই। জুটিকে দর্শক পছন্দ করছে সেটা খুব ভাল, কিন্তু, আমি চাইব আমার ব্যক্তিগত কাজ যেন দর্শক পছন্দ করে। ইন্ডাস্ট্রিতে ২০ বছর কাজ করছি। প্রথম ১০ বছরে সিরিয়ালের ক্ষেত্রে এই জুটি শব্দটা শুনিনি।' ব্যক্তিগতজীবনে না বলা এমন কোনও সম্পর্কের মুখোমুখি হয়েছেন? অপরাজিতা বলেন, 'না, সেরকম অভিজ্ঞতা হয়নি। আমার মতে, না বলা সম্পর্ক অনেক রকম হতে পারে। ব্যক্তি বিশেষে তা নির্ভরশীল।'
এবার আসা যাক চিরসখা নিয়ে সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্যে। এখানেও সম্পর্কের জটিলতার গল্প। শ্রীময়ীর পর সুদীপ মুখোপাধ্যায়কে দর্শক আরও একবার সম্পর্কের টানাপোড়েনেই দেখবে? সুদীপের মতে, 'শ্রীময়ীর সঙ্গে চিরসখার ১৮০ ডিগ্রি পার্থক্য রয়েছে। ওখানে একরকম জটিলতা আর এখানে সম্পূর্ণ অন্যরকম। আসলে সিরিয়াল কিন্তু, সম্পর্ক নির্ভরই। শুধু সিরিয়াল কেন, মানুষের জীবনও তো সম্পর্ককে কেন্দ্র করেই। আমরা সব সম্পর্কের একটা নাম দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু, অনেক সময় এমন কিছু সম্পর্ক তৈরি হয় যার কোনও নাম হয় না। সেটা হতে পারে বন্ধুত্বের সম্পর্ক বা শ্রদ্ধার সম্পর্ক। চিরসখা সেইরকমই একটা সম্পর্কের গল্প বলবে। আমরা আসলে সম্পর্ককে নামাঙ্কিত করতে ভালবাসি। বাবা-মা, ভাই-বোন, প্রেমিক-প্রেমিকা, স্বামী-স্ত্রী, মা-মেয়ে এইরকম। এর বাইরে হয়ত এমন কোনও সম্পর্ক গড়ে উঠছে যার নাম নেই। সে হয়ত শুধুই একজন শুভানুধ্যায়ী।'
আপনার নজরে না বলা সম্পর্কের সংজ্ঞাটা কেমন? সুদীপের উত্তর, 'বেশির ভাগ মানুষের জীবনেই হয়ত এইরকম সম্পর্ক থাকে। সেগুলো সম্পূর্ণ স্বার্থহীন। একে অপরের প্রয়োজনে ঝাপিয়ে পড়ে। কিন্তু, আজকের সমাজ অনেক সম্পর্ককেই দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু, মানুষের যদি সুন্দর হৃদয় হয় তাহলেই সব সম্পর্ক সুন্দর।' অপরাজিতার সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করার কেমন অভিজ্ঞতা? অভিনেতার জবাব, 'আগে আমরা কাজ করেছি। তবে প্রথমবার জুটি বাঁধলাম। খুব ভাল একজন অভিনেত্রী। মিষ্টি মানুষ।' এখন অনেক সিরিয়ালই খুব অল্প সময়ের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়টা কতটা ভাবায়? সুদীপের সাফ কথা, 'প্রায় ২৫ বছর কাজ করছি। অনেক সিরিয়ালে কাজ করেছি। বেশ কিছু ধারাবাহিক হাজার এপিসোডও ছুঁয়েছে। শ্রীময়ী-ই তো ৮০০ পর্ব ছিল। আমার ব্যক্তিগতভাবে সেই অভিজ্ঞতা হয়নি। তবে এটা ঠিক আজকাল অনেক মেগাই মাঝপথে বন্ধ হচ্ছে। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া মানেই যে সেটা খারাপ এমনটা কিন্তু নয়। গানের ওপারে-র মতো সিরিয়ালও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই ধারাবাহিক থেকে কত প্রতিভার ইন্ডাস্ট্রিতে আগমন হয়েছিল।'