'হাঁটি হাঁটি পা পা'...কোন জার্নির গল্প বলবে এই ছবি?
জীবনটা একটা বিরাট জার্নি। প্রতিনিয়ত প্রতিদিন এই জার্নির মধ্যে দিয়ে আমরা এগিয়ে চলি। 'হাঁটি হাঁটি পা পা' একটা সম্পর্কের গল্প। এমন এক সম্পর্ক যার প্রত্যেকটা মোমেন্ট আমরা এনজয় করছি। তারপর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। 'হাঁটি হাঁটি পা পা'-এর প্রতিটি চরিত্রের একটা নিজস্ব জার্নি আছে। সেটা একটু একটু করে এগিয়ে চরিত্রগুলো পরিপূর্ণতা পাবে। এই জার্নিটাকে তুলে ধরতেই সিনেমার নাম দেওয়া হয়েছে 'হাঁটি হাঁটি পা পা'।
পোস্টারে একটা ছোট পা আর একটা বড় পা। কোনও অসমবয়সী প্রেম না বিশেষ কোনও সম্পর্কের গল্প বলবে 'হাঁটি হাঁটি পা পা'?
আমরা যখন প্রথম টিজার-পোস্টারটা রিলিজ করেছিলাম সেখানে একটা বড় আর একটা ছোট পা ছিল। আর একটা নামও প্রকাশ্যে এনেছিলাম সেটা রুক্মিণী মৈত্র। তাই সকলে ভেবেছিল বড় পা রুক্মিণীর। হয়তো মা-মেয়ের কোনও গল্প হতে পারে। কিন্তু, না ছোট পা-টা ওঁর। আর বড় পায়ের ছাপটা রুক্মিণীর বাবা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর। বাবা-মেয়ের সম্পর্কের একটা গল্প বলবে 'হাঁটি হাঁটি পা পা'।
দুই প্রজন্মের দুজন মানুষ চিরঞ্জিৎ- রুক্মিণী। ছবির প্রস্তাব নিয়ে গেলে প্রথমেই গল্পটা পছন্দ হয়েছিল নাকি বিষয়টা চ্যালেঞ্জিং ছিল?
রুক্মিণীকে ভেবেই এই গল্পনা তৈরি করেছিলাম। গল্পটা নিয়ে যখন ওঁর কাছে গিয়েছি ভাল করে শুনেছে। আমি আর সিনেমার স্ক্রিপ্ট যিনি লিখেছিলেন প্রিয়াঙ্কা পোদ্দার দুজনেই গিয়েছিলাম। গল্পটা শোনার পর রুক্মিণীর ভাল লাগে। চিরঞ্জিৎ দা-কে যখন গল্পটা বলি উনি তখন আমেরিকায় মেয়ের কাছে ছিলেন। গল্পটা শুনে এতটাই এক্সাইটেড হয়ে পড়েন যে উনি আমাকে মেয়ের সঙ্গে ছবি পাঠিয়ে বলেন, বাবা আর মেয়ে ফর্ম আমেরিকা। একজন অভিনেতার চরিত্রটা পছন্দ হয়েছে বলেই তো এতটা উৎসাহের সঙ্গে আমাকে বেশ কয়েকবার বাবা-মেয়ের ছবি পাঠিয়েছেন। চিরঞ্জিৎ দার মতো সিনিয়ার মোস্ট একজন স্টারের সঙ্গেকাজের সুযোগ পেয়ে আমি আপ্লুত।
রুক্মিণীর সঙ্গে কাজের অজ্ঞিজ্ঞতা কেমন?
রুক্মিণী কিন্তু, শুধু নিজের অংশের শ্যুটিং করে চলে আসছেন এমনটা কিন্তু, নয়। উনি তো একজন পেশাদার অভিনেত্রী তাই পুরো ক্লাইম্যাক্সটা ভাল করে বুঝে হোমওয়ার্ক করেই সেটে আসে। এর ফলে কাজটাও অনেক সহজ হয়। একটি সিনেমা তো প্রতিটি চরিত্রের কম্বিনেশনে তৈরি হয় তাই সকলে যদি সবটা বোঝে তাহলে দর্শকের সামনে একটা প্রোডাক্ট ডেলিভারি করা যায়। রুক্মিণী হাঁটি হাঁটি পা পা করে সকলের সঙ্গে সুন্দরভাবে মিশে গিয়ে শ্যুটিং করছে যাতে চরিত্রগুলো পরিপূর্ণতা পায়। আমি খুব লাকি যে রুক্মিণীর মতো একজন পেশাদার অভিনেত্রীর সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছি।
চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর মতো সিনিয়ার অভিনেতাকে পরিচালক হিসেবে নিজের পছন্দ-অপছন্দের কথা বলতে পারছেন?
সিনিয়ার স্টাররা যখন আমার মতো একটু নতুন পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেন তাঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হতে সময় লাগে। প্রথমে উনি শট দেওয়ার পর এসে দেখে যেতেন। কিন্তু, এখন আর দেখেন না। কারণ আমাদের প্রতি চিরঞ্জিৎ দা-র বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। আমার যদি কোনও জায়গায় কিছু পরিবর্তন করার কথা মনে হয় আমি বলি, উনি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হচ্ছেন। আমিও সম্পূর্ণ যুক্তি দিয়ে বুঝিয়েছি কেন পরিবর্তনের প্রয়োজন। চিরঞ্জিৎ দা আমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে খুব সহযোগিতা করে কাজটি করছেন।
বাবা-মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে গল্প তৈরির যে ভাবনা তার উৎসটা কী?
আমার মনে হয় বাঙালিরা সম্পর্কে খুব বিশ্বাসী। এটা একটা ইমোশনের জায়গা। একটা আবেগ জড়িয়ে থাকে। বাবা-মেয়ে, মা-ছেলে বা স্বামী-স্ত্রী বা ভাই-বোন প্রতিটি সম্পর্কই কিন্তু, খুব সংবেদনশীল। নিজেও আমি সম্পর্কে খুব বিশ্বাসী। আমার মনে হয়েছে মানুষের কাছে এমন গল্প পৌঁছে দিতে হবে যা প্রত্যেকে নিজের জীবনের সঙ্গে রিলেট (সম্পর্ক) করতে পারে।
রুক্মিণীর ছোটবেলার চরিত্রে কোন শিশুশিল্পীকে দেখা যাবে?
ওটা এখনও পর্যন্ত ঠিক করা হয়নি। আপাতত চিরঞ্জিৎ দা রুক্মিণীর শ্যুটিং চলছে। এখন ইনডোর শ্যুট চলছে। পরে আউটডোর হবে।
ছবি তৈরির সময় কোন বিষয়টা মাথায় রাখেন? ভালভাবে কাজটা করা না বক্স অফিসের সাফল্য?
শ্রীকৃষ্ণ তো বলেছেন, কর্ম করে যাও ফলের আশা করো না। আমি সেটা মেনেই চলি। আগে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। তারপর তো দর্শক বিচার করবে। আমরা তো অবশ্যই নিজেদের সাধ্যমতো দর্শকের সামনে একটা সুন্দর প্রোডাক্ট পরিবেশন করার চেষ্টা করব।
ছবিটি কবে রিলিজ করার প্ল্যান করছেন?
ইচ্ছে আছে ২০২৫-এর গরমের ছুটির সময় রিলিজ করব।