Bengali Television, Artists Forum, Non-Payment Issue: বিগত তিন মাস ধরে বাংলা টেলিজগত সরগরম বহু শিল্পী-টেকনিসিয়ানদের বকেয়া পেমেন্ট নিয়ে। বহু প্রযোজকের বিরুদ্ধেই টাকা বাকি রাখার অভিযোগ রয়েছে বহুদিন ধরেই। তার মধ্য়ে সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি আলোচিত রানা সরকার এবং তাঁর সংস্থা দাগ সি মিডিয়া। এই সংস্থার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারাবাহিকের বেশিরভাগ শিল্পী-কলাকুশলীদের পারিশ্রমিকের টাকা বাকি রাখার অভিযোগ রয়েছে। আগামীকাল ২৫ মে একটি আপৎকালীন সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছে আর্টিস্টস ফোরাম। টেলিজগতের একাংশের ধারণা, বকেয়া টাকার ইস্যুতেই এবার বড়সড় পদক্ষেপ নিতে পারে ফোরাম।
সম্প্রতি বকেয়া টাকা সংক্রান্ত অসন্তোষের কারণেই 'মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য়' ধারাবাহিকের মূল চরিত্রের অভিনেতা শুভ রায়চৌধুরী ধারাবাহিক থেকে সরে গিয়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে তিনি সরাসরি জানিয়েছিলেন তাঁর অসন্তোষের কথা। শুধুমাত্র শুভ রায়চৌধুরী নন, 'আমি সিরাজের বেগম', 'মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য', 'প্রথম প্রতিশ্রুতি', 'খনার বচন' ও 'জয় বাবা লোকনাথ' ধারাবাহিকের বহু শিল্পী-কলাকুশলীই তাঁদের পারিশ্রমিক পাননি বলে জানা গিয়েছে। অসন্তোষ ক্রমশ বাড়তে থাকায় গত পয়লা মে একটি আপৎকালীন বৈঠক ডাকে আর্টিস্টস ফোরাম। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টার বৈঠক শেষে ফোরামের কার্যনির্বাহী সভাপতি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্য়ায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানিয়েছিলেন যে কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে এই পেমেন্টের বিষয়ে। সেই জটিলতাগুলি কেটে গেলেই শিল্পীরা তাঁদের পারিশ্রমিক পেয়ে যাবেন। তবে ঠিক কবে সেই জটিলতা কাটবে তার কোনও নির্দিষ্ট সময়কাল তখনও স্পষ্ট ছিল না।
আরও পড়ুন: ক্য়ামেরার সামনে দাঁড়াতে ভয় পাবেন শিল্পীরা! ‘মহাপ্রভু’ ছেড়ে মন্তব্য অভিনেতার
২০১৮ সালে টেলিপাড়ায় যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল, তার সুরাহা হয় শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে। পয়লা মে-র বৈঠকের পরে তাই টেলিজগতের একাংশের ধারণা হয়, এক্ষেত্রেও মুখ্য়মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হতে পারে এবং তা সম্ভব লোকসভা নির্বাচনের পরেই। ২৩ মে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। তার পরেই আর্টিস্টস ফোরামের এই আপৎকালীন সাংবাদিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত সম্ভবত টেলিজগতের একাংশের সেই ধারণারই প্রতিফলন।
ফোরামের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্য়মের কাছে যে বার্তা দেওয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়েই সাংবাদিক বৈঠক হবে এবং সেখানে ফোরাম এই বিষয়ে তাদের বক্তব্য পেশ করবে। বাংলার বড়পর্দা ও ছোটপর্দার শিল্পীদের জন্য আর্টিস্টস ফোরাম গঠন করা হয় ১৯৯৮ সালের ১২ অগস্ট। কর্মক্ষেত্রে নানা ধরনের সুবিধা-অসুবিধা, অসন্তোষে সংগঠিতভাবে শিল্পীদের পাশে থাকার জন্যই তৈরি হয় এই ফোরাম। তাই যদি বকেয়া টাকার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে হেনস্থা হতে হয় শিল্পীদের, তবে আর্টিস্টস ফোরাম কোনও কড়া পদক্ষেপ নেবে এটাই স্বাভাবিক।
আরও পড়ুন: সব প্রযোজক টাকা বাকি রাখেন না, বলছে টেলিপাড়া
কিন্তু এই বিষয়ে আরও একটি সংগঠনের ভূমিকা অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা হল 'ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিসিয়ান্স অ্য়ান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া'। আর্টিস্টস ফোরাম ও টেকনিসিয়ানদের সমস্ত গিল্ড এখনও পর্যন্ত ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত। অথচ পয়লা মে-র বৈঠকে ফেডারেশনের প্রতিনিধিদের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। তাই এই ইস্যুটি নিয়ে ফেডারেশনের মনোভাব কী, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফেডারেশন যে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বা কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি, সেই নিয়ে টেলিজগতের একাংশের, বিশেষ করে টেকনিসিয়ানদের একাংশের মধ্যে বড়সড় অসন্তোষ রয়েছে।
তাই ২৫ মে-র বৈঠকে এই বিষয়টিতেও আলোকপাত হতে পারে।