শুধু গিটারের ছ'টা তারে যে পাঁজর নিঙড়ে অনুভূতির প্রকাশ ঘটানো যায় তা নোনা জলের ওপারে বুঝেছিলেন জ্যানিস জপলিন, জিমি হেনড্রিক্সরা। আর পদ্মাপারে জোয়ার আনলেন আইয়ুব বাচ্চু। বাংলাদেশের সঙ্গীতে 'ফিলিংস' নিয়ে আসা মানুষটা এরপর গেয়ে গেয়ে গড়লেন ইতিহাস। তারপর ১৮ অক্টোবর, ঢাকার স্কোয়ার হাসপাতাল থেকে চির ছুটিতে রকস্টার।
কিন্তু সুর যে কখনও কাঁটা তার বোঝেনি। তাই সেদিন ওপার বাংলার সঙ্গে সঙ্গেই হৃদয় কেঁপে উঠেছিল এপার বাংলারও। চোখের কোনায় জল চিক চিক। বাষ্প হয়ে বেরচ্ছিল বাঁধ না মানা ভালবাসা। সেখান থেকেই জন্ম হল 'দুই বাংলার রকস্টার'-এর। 'ক্যাফে কবীরা' ও 'কুলকুচি'র লাগাতার প্রচেষ্টায় আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে পাটুলি মেলা প্রাঙ্গনে ২৪ নভেম্বর ৩টে থেকে ৯টা পর্যন্ত আয়োজন করা হচ্ছে গান, গল্প, আড্ডার। এপার বাংলার শহর, ভূমি, চন্দ্রবিন্দু, মহীনের ঘোড়াগুলি, ক্যাকটাস ব্যান্ড থেকে উপস্থিত থাকবেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র, উপল, শিলাজিৎ, বুলা দা, দেব চৌধুরি, সিধুর মতো শিল্পীরা। তেমনই বাংলাদেশের মাকসুদ হক, সুব্রত বড়ুয়া, জর্জ লিঙ্কন ডি কোস্টারাও গান শোনাবেন।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে যাঁর সাংগীতিক জীবন শুরু, সেই কন্ঠই ইতিহাস রচনা করে চিরতরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। সোলস ব্যান্ডে টানা দশ বছর লিড গিটারিস্ট তিনি। পরে নিজের ব্যান্ড এলআরবি। বাংলাদেশের মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম সদস্য রক্ত গোলাপের রূপকারও তিনিই। ফলে আয়ুব বাচ্চুর স্মরণে অনুষ্ঠানর আয়োজন করতে এগিয়ে এসেছেন কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী। তিনি বললেন, ''আমার বেড়ে ওঠার সঙ্গী তিনি। বাংলা ব্যান্ডের আত্মপ্রকাশ হয়েছে তখনই। আর মনে হয়েছে, শুধু তাঁকে স্মরণ করা নয়, এই অনুষ্ঠান দুই বাংলার সংস্কৃতি আদান-প্রদানেরও একটি জায়গা। তাই আমি যতটা পেরেছি সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে পেরে আমি ধন্য''।
'ক্যাফে কবীরা'র পক্ষ থেকে জুল মুখোপাধ্যায় বলেন, ''আমি ব্যক্তিগতভাবে এই ভৌগলিক, রাজনৈতিক বিভাজনটা মানি না। দুটো দেশের একটা সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন আছে। আর আইয়ুব বাচ্চু বাংলাদেশের, এ কথা আমার কখনওই মনে হয়নি। ফলে এ দেশে তাঁকে স্মরণ করা হচ্ছে, এমনটা আলাদা করে মনে হয়নি কখনও। এই অনুষ্ঠান, শিল্পীর প্রতি ভালবাসার প্রকাশ মাত্র''।
ইতিমধ্যে এই রকবাজির টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছে। +৯১ ৮০১৭৭২০৬৬৩ নম্বরে ফোন করে আপনিও সংগ্রহ করতে পারেন অনুষ্ঠানের টিকিট।