বিগত দু'বছর ধরেই বিনোদুনিয়ার অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো অতিমারীর করাল গ্রাসে ধুঁকছে দেশের ভিন্ন রাজ্যের আঞ্চলিক গানের দলগুলো। সেসব শিল্পীদের যে প্রায় দু-বেলার ভাত জোগাড় করাও দায় হয়েছে, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। তবুও, এহেন বিপন্ন পরিস্থিতিতে ধার-দেনা করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন রাজস্থানের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক শিল্পী। কিন্তু শোধ করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন। সেই দুঃস্থ শিল্পীর পাশেই দাঁড়ালেন ব়্যাপার বাদশা (Badshah)।
নাম ইসমাইল লাঙ্ঘা রাজস্থানের লোকশিল্পী (Rajasthan’s ‘Ismail Langha’ group)। অর্থাভাবে যাতে মেয়ের বিয়ে না আটকায় তাই লোকের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা ধার নিয়ে বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছিলেন। একে কামাই নেই, উপরন্তু কন্যাদায়গ্রস্থ পিতা! ঋণ মেটাতে না পেরে নিজের কাছেই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যতদিন না পর্যন্ত ধার-দেনা মেটাতে পারছেন, মাথায় পাগড়ি তুলবেন না। উল্লেখ্য, পাগড়ি রাজস্থানের সংস্কৃতির এক বাহক। সেই ইসমাইল-ই সোনি চ্যানেলের 'ইন্ডিয়াজ গট ট্যালেন্ট' (India’s Got Talent) রিয়ালিটি শোয়ের মঞ্চে তাঁর লোকগীতির দল নিয়ে গান পরিবেশন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তাঁর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ করেছে কিরণ খের, শিল্পা শেট্টি কুন্দ্রার, বাদশা এবং মনোজ মুন্তাশিরের মতো বিচারকদের।
<আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ড ট্যুরে সামান্থা, প্রাক্তন স্বামী নাগা চৈতন্য বোমা ফাটালেন বিবাহ-বিচ্ছেদ বিতর্ক নিয়ে>
পারফরম্যান্সের পরই কথা প্রসঙ্গে ইসমাইলের কাছ থেকে বাদশা জানতে পারেন যে, মেয়ের বিয়ের ঋণ শোধ করতে না পারর জন্য তিনি পাগড়ি পরেন না এখন। যেদিন শোধ করতে পারবেন, সেদিনই মাথায় পাগড়ি তুলবেন। দুঃস্থ শিল্পীর কাছ থেকে একথা শুনে তৎক্ষণাৎ ব়্যাপার বাদশা চলে যান মঞ্চে। সযত্নে ইসমাইলের মাথায় পাগড়ি বেঁধে দিয়ে বলেন, "আপনি যদি আমাকে সুযোগ দেন, তাহলে আমি আপনার মেয়ের বিয়ের সব ধার-দেনা শোধ করে দিতে পারি।"
বাদশার এহেন মানবিক উদ্যোগে মুগ্ধ হয়েছেন শোয়ের অন্য বিচারকরা। পাশাপাশি ইসমাইল নিজেও আবেগাপ্লুত তারকার মুখ থেকে একথা শুনে। তিনি 'ইন্ডিয়াজ গট ট্যালেন্ট' - এর মঞ্চেই গায়ককে ধন্যবাদ জানান। বলেন, "বাদশা যেটা করলেন, সেটা ভীষণ অপ্রত্যাশিত ছিল আমার কাছে। কীভাবে ওঁকে ধন্যবাদ জানাব জানি না। আজ অবধি ১৭টি দেশে পারফর্ম করেছি। কিন্তু 'ইন্ডিয়াজ গট ট্যালেন্ট'-এর মঞ্চে গান গাওয়া সত্যিই আমার কাছে আশীর্বাদের মতো।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন