Advertisment

সুপারস্টারডমের যুগ গিয়েছে, এখন কন্টেন্টই আসল: দেব

ব্যক্তিগত জীবনে ভাল থাকার 'টনিক' দিলেন দেব! কী বললেন?

author-image
IE Bangla Entertainment Desk
New Update
Dev, Tonic, Dev on Bengali Film Industry, bengali upcoming films, দেব, টনিক, টনিক নিয়ে দেবের মন্তব্য, bengali news today

দেব, টনিক

পুজোর সময়েই মুক্তি পেয়েছে 'গোলন্দাজ'। ২৪ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে রিলিজ করল 'টনিক'। সেই প্রেক্ষিতেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর সঙ্গে আড্ডায় দেব। শুনলেন শতরূপা বসু

Advertisment

নাচ-গান, মশালা মুভির বাইরে গিয়ে গত সাত-আট বছর ধরে ভিন্ন স্বাদের ছবি করে চলেছেন। 'টনিক'ও কি সেই এক্সপেরিমেন্টের মধ্যে পড়ে?

দেব- গত সাত-আট বছর ধরেই ভিন্ন স্বাদের ছবি করছি। দেখো, এখন কন্টেন্ট-ই ছবির শেষ কথা। সুপারস্টারডমের কোনও জায়গা নেই। একজন অভিনেতা কতটা সিনেমার চরিত্র হয়ে উঠতে পারছে, সেটাই মূল বিষয়। টনিক-এর চরিত্রটা ভীষণ ইন্টারেস্টিং। এর আগে এহেন চরিত্র অভিনয় করিনি। গল্পটা এত ফ্রেশ যে, সেটার জন্যই হ্যাঁ বলেছিলাম। সিনেমার গল্পে অদ্ভূত একটা এনার্জি রয়েছে। পাশাপাশি, সামাজিক বার্তাও রয়েছে।

সিনেমারও রকমফের রয়েছে। কোনওটা সত্যি ঘটনা অবলম্বনে হয়। আবার কোনওটা ইতিহাসকে ভিত্তি করে, যেমন- গোলোন্দাজ। আবার কোনওটা কল্পকাহিনী ভিত্তিক, যেমন- বাহুবলী। আর কিছু সিনেমা এমন হয়, যার গল্পের সঙ্গে মানুষ খুব সহজভাবেই একাত্ম হতে পারে। যেটা দর্শকদের কমফরটেবল ফিল করায়। এটা অবশ্য আমার জীবনের গল্প নয়। কিন্তু টনিক-এর সঙ্গে আমি নিজেকে রিলেট করতে পেরেছি। যখন কেউ সিনেমাটা দেখবেন, তাঁর মনে হতে পারে তিনিই হয়তো পরিবারের টনিক। এরকম একজন মানুষ যিনি নিজের পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে কিংবা তাঁদের সুস্থ রাখতে অতিরিক্ত পরিশ্রমও করতে পারেন।

টনিক-এর ক্ষেত্রে কতটা কসরত করতে হয়েছে আপনাকে?

দেব- গোলোন্দাজ-এ অভিনয় করা এর থেকে কঠিন ছিল। কিন্তু টনিক অনেকটা আমারই মতো। যে কিনা ছবির চরিত্রর মতোই হাসতে কিংবা ঠাট্টা করতে ভালবাসে। আমার মনে হয়, আমার মাকে খুব ভালভাবে বুঝি আমি। ওঁরা হয়তো নিজেদের মতো করে ব্যস্ত থাকে, পাশাপাশি পরিবারেও ততটাই গুরুত্ব চান। ওঁরা চান, সন্তানরা ওঁদের ভাললাগা, না-লাগার বিষয়ে জিজ্ঞেস করুক। তাই যখনই আমি ছুটি কাটাতে যাই, আমি চাই ওঁরাও যেন সেটা উপভোগ করেন। এই তো, দার্জিলিংয়ে যখন টনিক-এর শুটিং করছিলাম, মা-বাবা আমার সঙ্গে ছিলেন। সকালে আমি শুটে যেতাম, মা-বাবা ঘুরতে যেতেন।

আজকাল সবাই ফেসবুক নিয়েই ব্যস্ত থাকে। ব্যক্তিগত জীবনের সব আপডেট দিতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেটা থেকে আবার অনেকেই প্রভাবিত হন। কে কি খাচ্ছে-পরছে, অন্যেরটা দেখে সেটাই করতে ইচ্ছে করে। ওই ছোটখাট বিষয়গুলিও ভীষণ ম্যাটার করে। এই সিনেমার গল্পেই দেখা যাবে, এক দম্পতি যখন নিজেদের ১০ বছরের বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করতে ব্যাঙ্ককে যাবেন, তখন মা-বাবার ৫০ বছরের বিবাহবার্ষিকী সেলিব্রেট করবেন বাড়ির ছাদে। 'টনিক' তখন সেই বৃদ্ধা দম্পতিকে বোঝাবে, বাড়ির ছাদে সেলিব্রেট করার মধ্যে কোনও ভুল নেই, কিন্তু তার আগে একবার সন্তানদের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া উচিত।

<আরও পড়ুন: শুধু বাথরুম ছাড়া কোথাও প্রাইভেসি পাই না, স্পষ্ট কথা বলে কেস খাই: নুসরত>

কিন্তু এইসব সিনেমার মাঝে সুপার ডান্সার, টিপিক্যাল হিরো সেই গ্ল্যামারাস দেব কোথায়…

দেব- (প্রশ্ন শেষ না হতেই) কে বলল আমি এখন আমি আর নাচ-গান করি না? কিশমিশ দেখুন, উত্তর পেয়ে যাবেন। আমার কাছে সিনেমার কন্টেন্ট-ই প্রাধান্য পায় এখন। যেসব ছবির প্রস্তাব আমার কাছে আসে, আমাকে সেগুলোর মধ্যে বেছে নিতে হয়। শাহরুখ-সলমন খানেরও কত কমার্শিয়াল ছবি চলেনি। আপনাকে বুঝতে হবে দর্শক এখন অনেকটাই পরিণত। তাঁদের সিনেমা দেখার ধরণ বদলেছে। আজকে তাঁরা আন্তর্জাতিক মানের ছবি দেখেন। যে সিনেমার গল্পের অর্থ রয়েছে। বেশি অ্যাকশন কিংবা অতিরিক্ত নাচ-গান দেখতে পছন্দ করেন কিনা, সেই বিষয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে… সব সিনেমা কিন্তু 'সূর্যবংশী' হয় না। কিন্তু আমি আবারও বলব, এখন যদি আমরা সূর্যবংশী'র মতো ছবি বানাই, তাহলে দর্শক বলবেন আমরা অবাস্তব ছবি বানাচ্ছি। আমি হয়তো করছি না এই ধরণের সিনেমা, কিন্তু অন্য হিরোরা তো করছেন, আর তার ফলাফলও আপনার চোখের সামনে।

রুক্মিণী বলিউডে বিদ্যুৎ জামওয়ালের সঙ্গে 'সনক' করলেন, আপনারও কি মুম্বইতে যাওয়ার প্ল্যান রয়েছে?

দেব- আমি এখানেই ভাল আছি। কেউ মুম্বইতে গেছে বলেই যে আমাকে যেতে হবে, তার কোনও মানে নেই। বড় সাম্রাজ্যে পদানত সৈনিকের মতো থাকার চেয়ে একটা ছোট রাজ্যে রাজার মতো থাকা অনেক বেশি শ্রদ্ধার। মুম্বইতে আমি শুধুমাত্র ওঁদের একজন হয়ে থাকব, কিন্তু এখানে আমিই একা। আপনি যদি গত একদশকের বাংলা ছবি দেখেন, তাহলে দেবকে ইগনোর করা আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। সবাই দেখেছেন, প্রত্যেকটা সিনেমার জন্য আমি কতটা পরিশ্রম করি। এখন যদি এসব ছেড়ে আমি মুম্বইতে চলে যাই, বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রিকে আমার যা কিছু দেওয়ার রয়েছে, সেটা হারিয়ে ফেলব। এখানে আমাদের অভিনেতাদের সংখ্যা কম। শুধু তিন-চার জন অভিনেতাই সারাবছর ধরে সিনেমা করেন। সেকথা মাথায় রেখেই আমি যদি এখন বলি যে, আমি এখানে আর কাজ করব না, তাহলে বাংলা ছবির রাশ কে টানবেন? আমি খুব খুশি এখানে। ঠিক যতটা আমি রুক্মিণীর জন্য খুশি।

আপনি রুক্মিণীকে গাইড করেন না?

দেব- রুক্মিণী আমার থেকে অনেক বেশি বুদ্ধিমতী। যখনই ওঁর কোনও প্রয়োজন হবে, আমি পাশে রয়েছি সাহায্যের জন্য।

রুক্মিণীর সঙ্গে সম্পর্কে অনেক চড়াই-উতরাই গিয়েছে, তবে এখন অনেকটাই সুস্থিত, কীভাবে হল?

দেব- আমি এখন অনেক বেশি ফোকাসড। রাজনীতির পাশাপাশি সিনেমাও সমানভাবে সামলাতে পারি। আর সেটা আমার কাছে আশীর্বাদ।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Tonic tollywood Dev Bengali Film Industry Entertainment News
Advertisment