দক্ষিণী সিনেমার রাজত্বে বলিউডের কপালে ভাঁজ! সেখানে বাংলা সিনেমার লক্ষ্মীলাভ তো দূরঅস্ত! অভিযোগ ছিল, বাংলা ছবি হল-ই পায় না… ১ মাস আগেও চিত্রটা ঠিক এরকমই ছিল। তবে গত এক মাসে চার-চারটে বাংলা সিনেমা বদলে দিয়েছে সেই দৃশ্য। 'কিশমিশ', 'রাবণ'-এর পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করছে 'অপরাজিত', 'বেলাশুরু'। অতিমারী উত্তর পর্বে বাংলা সিনেমার সুদিন যে ফিরছে, তা বক্সঅফিসের বর্তমান হাল-হকিকতে চোখ রাখলেই আন্দাজ করা যায়।
Advertisment
প্রথম সপ্তাহেই ছক্কা হাঁকিয়েছে শিবপ্রসাদ-নন্দিতার 'বেলাশুরু'। পয়লা সপ্তাহান্তে ঘরে তুলেছে ১ কোটির ওপর। পাশাপাশি দৌঁড়চ্ছে 'অপরাজিত'ও। কারণ, প্রথম সপ্তাহে অনীক দত্ত পরিচালিত এই ছবির মোট আয় ১.৮৬ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সপ্তাহে তা আরও বেড়েছে। যা নিঃসন্দেহে অতিমারী উত্তরপর্বে বাংলা সিনেমার বক্সঅফিসে রেকর্ড ব্যবসা। এর আগে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন' এবং দেব-পরাণ জুটির 'টনিক'ও ভাল ব্যবসা করেছিল। তবে পয়লা সপ্তাহান্তের নীরিখে এই ছবির আয়ের ধারেকাছে কেউ যেতে পারেনি এযাবৎকাল। এবার 'টনিক', 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন' -এর প্রথম সপ্তাহান্তের ব্যবসার রেকর্ডকেও টপকালো 'অপরাজিত' এবং 'বেলাশুরু'।
প্রথমদিনে 'বেলাশুরু'র আয় ৩৫ লক্ষ, দ্বিতীয় দিনে ৪৫ লক্ষ এবং তৃতীয় দিনে ৬১ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে ইতিমধ্যেই ১.৪১ কোটির ব্যবসা করে ফেলেছে সৌমিত্র-স্বাতীলেখার এই সিনেমা।
Advertisment
Nothing but a storm at the box office!🔥🔥🔥
Day 1 - 35 lakhs Day 2 - 45 lakhs Day 3 - 61 lakhs
পাল্লা দিয়ে বক্সঅফিসে তুখড় 'অপরাজিত'। সিনেসমালোচকদের প্রশংসা কুড়নোর পাশাপাশি আম-দর্শকরাও সত্যজিতের নস্ট্যালজিয়ায় ভেসেছে অনীক-জিতু 'কামাল'-এ। এমনকী IMDb রেঙ্কিংয়ে সত্যজিৎ রায়ের 'অপরাজিত' রেকর্ড ছাড়ানোর পর বিশ্ব সিনেমার তালিকাতেও এখন ট্রেন্ডিং 'অপরাজিত'। প্রথম সপ্তাহে সেভাবে হল না পেলেও দ্বিতীয় সপ্তাহে কলকাতার শহরতলী তথা বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে চড়চড়িয়ে বেড়েছে এই সিনেমার হল সংখ্যা। পয়লা সপ্তাহে ১.৮৬ কোটি টাকার পর দ্বিতীয় সপ্তাহের শুক্রবারে ২২ লক্ষ, শনিবার ৩৩ লক্ষ এবং রবিবার ৪৩ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে এই ছবি। ২ সপ্তাহ মিলিয়ে 'অপরাজিত' মোট ব্যবসা করেছে ২.৪৮ কোটি টাকার। বেঙ্গল বক্স অফিসের রিপোর্ট অন্তত তেমনটাই বলছে।
'বেলাশুরু'র শুটে শিবু-নন্দিতার সঙ্গে সৌমিত্র-স্বাতীলেখা
'টনিক', 'কিশমিশ' ও 'অপরাজিত'র ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউটার শতদীপ সাহার কথায়, বাংলা সিনেমাকে বাঁচান বলে আলাদা করে কোনও আন্দোলনের দরকার নেই। সিনেমার কন্টেন্ট যদি ভাল হয় দর্শক এমনিই প্রেক্ষাগৃহে আসবেন। বর্তমানে ৯০ শতাংশ মাল্টিপ্লেক্সে বাংলা সিনেমা দেখানো হচ্ছে।
দেব-রুক্মিণীর 'কিশমিশ'-ও সাফল্যের সঙ্গে ২৫ দিন পার করেছে। রমরমিয়ে চলছে জিতের 'রাবণ'ও। এছাড়া সামনেই মুক্তি পাচ্ছে অরিন্দম শীলের 'তীরন্দাজ শবর', প্রসেজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত 'আয় খুকু আয়', রাজ চক্রবর্তীর 'হাবজি গাবজি' এবং সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের 'X= প্রেম'। এবার চলতি সিনেমাগুলো যেগুলো ভাল ব্যবসা করছে, তাদের মাঝে কীভাবে নতুন এই ছবিগুলোর জন্য স্লট দেওয়া হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তার ভাঁজ হল মালিকদের কপালে। কারণ তাঁদের কথায়, সবাইকেই জায়গা করে দিতে হবে, যাতে সব বাংলা সিনেমাই ব্যবসা করার সুযোগ পায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন