Anup Kumar: বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে এমন ধরনের মানুষ আছেন, কিংবা বলা উচিত অভিনেতা আছেন, যারা কেবলমাত্র অভিনয় করে গেলেন, কিন্তু অভিনেতা হিসেবে নাম পেলেও, নায়ক কিংবা হিরো হিসেবে জায়গা পেলেন না। বাঙালির যেমন, ভুরিভোজের শেষ পাতে মিষ্টি প্রয়োজন, সেরকমই একটা সময় বাংলা ইন্ডাস্ট্রির প্রয়োজন ছিল অনুপ কুমার কে। হেন কোন ছবি নেই যেখানে তাকে দেখা যেত না। ছাড়া যেমন রান্না সম্পূর্ণ নয় এটি সেরকম অনুপ কুমারকে ছাড়া বাংলা ছবি অসম্পূর্ণ। আজ সেই মানুষটার জন্মদিন।
পলাতক থেকে নিমন্ত্রণ কিংবা দাদার কীর্তি, কিংবা উত্তম কুমারের কোন সুপারহিট সিনেমা, অনুপ কুমারকে যেই রোলেই ভাবা হত, তিনি যেন জলের মতো সেই জায়গাতেই নিজেকে ফিট করে ফেলতেন। তাঁর দক্ষতা এবং অভিনয়, যুগের পর যুগ তাকে সিলভার স্ক্রিনে অন্যতম অভিনেতা হিসেবে জিইয়ে রেখেছিল। পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি নিজের পেশাকে নির্দিষ্ট ছন্দে না বেঁধে, সব রকমের চরিত্র তাকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে। বলা উচিত কৌতুক অভিনেতা হিসেবে তার জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু এই মানুষটার, আরেকজন মানুষের জীবনেও দারুন অবদান রয়েছে।
Leander Paes: নায়িকার সঙ্গে গদগদ প্রেম, তারপরেও সুপারস্টারের স্ত্রীর সঙ্…
অনুপ কুমার ছিলেন জনদরদি মানুষ। কারোর কোন কিছু শুনলেই, তিনি বিপদে-আপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। এমনকি কিংবদন্তি ডিরেক্টর মৃণাল সেনের সংসারটাও একসময় নিজের হাতেই তিনি চালিয়েছেন। মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতা সেন, অনুপ কুমারের মামাতো বোন। সিনেমা বানানোর আগে যখন মৃণাল সেন নানান ধরনের স্ট্রাগলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, ঠিক তখন বোনের সংসারটা বাঁচাতেই অনুপ কুমার একাই অনেককিছু করেছেন। মৃণাল বাবুর তখন বদলির চাকরি ভালো লাগছে না। সে কারণে চাকরি বিক্রি করলে তিনি বেকার হয়ে গেলেন। একদিকে সিনেমা বানাবেন বলে দিন রাত পরিশ্রম করে চলেছেন, অন্যদিকে চরম অভাব সংসারে যেন জলটাও সেদ্ধ হতে দিচ্ছে না।
ছোট বোনের সংসারে এত অভাব, সেটাও চোখ তুলে দেখবেন রোজগেরে দাদা অনুপ? অনুপ কুমারের হাতে তখন একের পর এক ছবি। পয়সার অভাব নেই অভিনেতার। সে সময়টাই বোনের সংসারটা গুছিয়ে দিয়েছিলেন এই অভিনেতা। কিন্তু অভিনেতা হিসেবে তিনি যথাযথ মানে পেলেন না। এরকম দুর্দান্ত সুন্দর অভিনয় এবং শিল্পী সত্তা, সকলের মধ্যে একেবারেই থাকে না। কিন্তু বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগে যে এই মানুষটার অবদান অনস্বীকার্য, বলতেই হয়।