গতকাল থেকেই সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল একটি ছবি। বৃষ্টিতে ভিজে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে আছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। গতকাল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে তাঁরা আলোচনায় গিয়েছিলেন। সেখানে ফের শুরু হয় আলোচনা।
সুত্র বলছে, গতকাল রীতিমতো আফসোসের সুরে মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের বলেন, তোমরা মিটিং করবে না, ঠিক আছে, কিন্তু বৃষ্টিতে না ভিজে বাড়ির ভেতরে এসে বসো। চা খেয়ে যাও। তাঁরা যখন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে তখনই জানা যায় ফের একবার ধর্ষণ-খুনের অভিযোগে গ্রেফতার সন্দীপ ঘোষ। এমনকি টালা থানার ওসি-ও গ্রেফতার।
আর এবার গতকালের নানা কর্মকাণ্ড দেখেই প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেতা পরমব্রত। অভিনেতা যা দেখেছেন এবং যা শুনেছেন, তাতে নিজের মতামত রাখতে ভুললেন না। অভিনেতা বলছেন... "অত্যন্ত ভদ্রভাবে , কোনোরকম শালীনতা বা ভব্যতার সীমা না অতিক্রম করেও যে দৃঢ় ভাবে নিজেদের দাবির কথা বলা যায়, তার প্রত্যক্ষ প্রমান হয়ে থাকবে গতকাল মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতীক্ষা ! উল্টোদিকের মানুষটিকে সম্মান জানিয়েও নিজেদের সম্মান ও সুরক্ষার জন্যে তাদের যে লড়াই, সেটি নিজেদের দাবিগুলির প্রতি তাদের বিশ্বাস , এবং বৃহৎ পরিণত মনস্কতার পরিচয় ! কুর্নিশ তাদের !"
আরও পড়ুন - Raveena Tandon: ভয়ে-আতঙ্কে জর্জরিত রবিনা, পুরুষদের এগিয়ে আসতে দেখেই প্রাণ হাতে নিয়ে ছুটলেন নায়িকা...
অভিনেতা তাঁর পাশে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্নামঞ্চে যাওয়ার ঘটনাকেও ঐতিহাসিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তাঁর পাশাপাশি অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। তিনি আরও বলছেন.. "অন্যদিকে , এই ঘটনার আগে , ধর্ণা মঞ্চে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর পৌঁছে যাওয়াটা নিঃসন্দেহে সাধুবাদ জানানোর মতো, অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ ! দেশের অন্য কোনো রাজ্যে সাম্প্রতিক সময়ে শাসকের এরকম ভঙ্গি দেখা গেছে বলে আমার স্মৃতিতে বা জ্ঞাতসারে নেই | খুব কম প্রশাসনই এতটা সময় ধরে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলন চলতে থাকা বরদাস্ত করে ! সাধারণত তাদের বিরুদ্ধে সুর চড়ানো আন্দোলনকে আরো অনেক আগেই রাষ্ট্রশক্তি দিয়ে দমিয়ে দিতে তারা চেষ্টা করে...উত্তর ভারতে দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকা কৃষক আন্দোলন তার জ্বলন্ত উদাহরণ ! এরকম উদাহরণই বেশি ... এক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসন তা করেনি , এই কথা অনস্বীকার্য!"
প্রশ্ন করলেন পরম...
কিন্তু কিছু প্রশ্ন তো রয়েই যায়। দুই পক্ষের বাকবিতণ্ডা-বিবাদ ও বিতর্ক দূরে সরের কয়েকটি কাজের প্রশ্ন করেছেন তিনি। পরমের প্রথম জিজ্ঞাস্য? "এই পদক্ষেপ আরেকটু আগে নেওয়া যেত না? ডাক্তাররা অভয়ার মৃত্যু কে সামনে রেখে অনেক বড়ো আন্দোলনে নেমেছেন... সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কে ঘূণ ও ভয় মুক্ত করার লড়াই ...রাত দখলের লড়াই একটা ছোট এক রাতের অবস্থান নয় ! লিঙ্গ বৈষম্যের মানসিকতা ও রাজনীতির মুলে আঘাত হানার এক ভীষণ দরকারি চেষ্টা ...আগ বাড়িয়ে দলীয় রাজনীতির রঙে না রাঙিয়ে , এনাদের সঙ্গে আরো আগে এনগেজ করা যেত না?সমস্যা গুলি সমাধানের চেষ্টা আগে শুরু হতো , শাসকের মানবিক মুখ আরো আগে মানুষ দেখতে পেতো! সব থেকে বড়ো কথা , এই যে বার বার কাজে ফিরতে বলা হচ্ছে জুনিয়র ডাক্তারদের , সেটা অনেক আগেই হয়তো তারা স্বেচ্ছায় করতেন, তাদের কথা গুলো শোনা হলে! অনেক ক্ষেত্রে রোগীরা যে পরিষেবা পাচ্ছেন না , তার দায় তাহলে কার ? ডাক্তারদের একার ?"
"দ্বিতীয় জিজ্ঞাসা ...আন্দোলন পরবর্তী সময়ে দু পক্ষের আলোচনা একটি নেগোশিয়েশন , সেখানে কিন্তু রাষ্ট্র এবং আন্দোলনকারী , দু পক্ষেরই সমান অধিকার ! লাইভ স্ট্রিমিং যদি বা নাও হয় , ভিডিও রেকর্ড করতে চাওয়া টা সম্পূর্ণ ন্যায্য ! তাছাড়া তারপরেও তো তাঁরা সব মেনে নিয়ে মিটিং করতেই চেয়েছেন ! আধ ঘন্টা সময় ! তখন আর করা হলো না কেন ?
প্রশ্ন গুলো ও সহজ নয় আজকের পরিস্থিতিতে , উত্তর তো সহজ নয়ই ..."
উল্লেখ্য, আন্দোলনে বরাবরই অংশ নিয়েছেন সকলে। পরম তাঁর মধ্যে অন্যতম। পথে নেমেছেন। নিজের মতামত রেখেছেন, এবারও ব্যতিক্রম না।