অভিনেত্রী মধুমিতা সরকার ফের একবার মুখ খুলেছেন। তাঁকে নিয়ে সমালোচনা এবং কটাক্ষের বন্যা সবসময় লেগেই থাকে। আর এবার যেন নিজের রাগ দমন করতে না পেরেই অকাট সত্যি কথা বলে ফেললেন তিনি।
শেষ কিছুদিন ধরে মহিলারা রাস্তায় নেমেছেন প্রতিবাদের খাতিরে। এখানেই শেষ না। তাঁরা নিজেদের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে রীতিমতো মরিয়া। আজও যে রাজ্যে মেয়েরা সুরক্ষিত নয়, সেখানে কিছু সম্ভব? এমনই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। মধুমিতা নিজেও পিছিয়ে নেই। তিনিও প্রথম থেকেই সরব। কিন্তু, এতকিছুর পরেও মেয়েদের বাঁকা চোখে বিচার জোড়া বন্ধ হচ্ছে না বাকিদের।
মধুমিতা ট্রোলের মুখে থাকেন সবসময়। এবার সমাজ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেই বললেন, "আমি জানিনা আমার জীবন নিয়ে আমার কী করা উচিত। কিভাবে বাঁচা উচিত সেটাও জানিনা। আমি শুধু এটুকুই জানি, আমি যাই করি না কেন মানুষের সমস্যা। আমি যদি ইংরেজিতে বেশি কথা বলি, তাহলে লোকে বলে তোমার কি বাংলা বলতে অসুবিধা হয়? আবার যদি বাংলায় বলি, তাহলে আমার অনেক হিন্দিভাষী অনুরাগীরার এবং বন্ধুরা বলবে কি বলছে বুঝতে পারলাম না।"
"মাঝেমধ্যে ফটোশুটের কারণে আমাদের ছোট ছোট জামা কাপড় পড়তে হয়। কিন্তু তারপরেও যদি আমি শাড়ি পড়ে কোন ছবি আপলোড করি, তাহলে অনেকেই বলেন, বাবা! শাড়ি পড়ে ছবি আপলোড করেছ তোমার একটা নির্দিষ্ট বডি পার্ট দেখা যাচ্ছে না। আবার এই যে আমি বড় বড় মুখ করে কথা বলছি, লোকে বলবে আমি ওভার অ্যাক্টিং করছি। আবার যদি আমি খুব আস্তে কথা বলি, লোকে ভাববে আমি ন্যাকামো করছি।"
আরও পড়ুন - Alia Bhatt: মেজাজ হারিয়ে চিৎকার আলিয়ার! অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে ঢুকে পড়লেন কারা?
ডিভোর্স প্রসঙ্গে কী বলছেন তিনি?
অভিনেত্রী এখানেই থামলেন না। এই সমাজে সবসময় মেয়েদেরকে দাগিয়ে দেওয়া হয়। আর বিশেষ করে সে যদি ডিভোর্সী হয়, তাহলে তো কোন কথাই নেই। ডিভোর্সী মেয়ের এটা করা উচিত না ওটা করা উচিত নয়, কত কি শুনতে হয় তাকে। অভিনেত্রী কিছুক্ষণ আগেই, গনেশ পুজোর একটি ভিডিও আপলোড করেছিলেন। শেখাও তাকে ডিভোর্সি উল্লেখ করে নানা মন্তব্য শোনানো হয়।
অভিনেত্রী বললেন, "ডিভোর্সে মেয়ে যজ্ঞ কেন করছে ইনিও মানুষের আপত্তি? তার মানে ডিভোর্স হলে মানুষ পুজো করতে পারেন না? আর যদি আমরা পুজো করে ফেলি, তাহলে আমাদের সঙ্গে তো অভিনেতা শব্দটা জুড়েই আছে। আমাদেরকে তো ফেক হতেই হবে তাই না? আমরা যেহেতু নারী, আমাদেরকে সব সময় জাজ করা হবে।"
আরও পড়ুন - Dev: 'একজন মহিলার বিচার চাইতে গিয়ে অন্যদের মেরে ফেলবেন..?' আন্দোলনরত চিকিৎসকদের প্রশ্ন ছুঁড়লেন দেব
কোন মেয়ের নামের সঙ্গে ডিভোর শব্দটা জুড়ে গেলে, সমাজ তাকে কি চোখে দেখে সেটাও তিনি পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন। এমনকি বললেন, "কালকে যদি আমায় কেউ ছুঁয়ে দেয় বা আমাকে হেনস্থা করে বা আমার সঙ্গে শ্লীলতাহানি হয়, তাহলে মানুষ কি বলবে বলুন তো? একা মেয়ে, ডিভোর্সি মেয়ে, একা থাকে, এটা তো হবে জানা কথাই।" যে ভিডিওটি মধুমিতা শেয়ার করেছেন, তাতে তিনি ক্যাপশনে লিখেছেন, "ডিভোর্স আমার জীবনের সবকিছু পাল্টে দিল।"
মানুষের নেতিবাচক বক্তব্যে তিনি জর্জরিত। কিন্তু এখন যেন আর গায়ে লাগানো ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। তবে এত আন্দোলনের মাঝে যে কটা কথা বললেন একটাও ফেলে দেওয়ার মত নয়। এই সমাজ সবসময়ই, মেয়েদের বিরুদ্ধাচারণ করে এসেছে। এখনও তা থামার নয়।