রাঙা বউয়ের পর অনেকটা বিরতি। তরপর কেরিয়ারে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হল উইন্ডোজ প্রোডাকশনের 'আমার বস'-এ। দ্বিতীয় সিনেমা ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেল কেরিয়ারে আরও একটা টার্নিং পয়েন্ট?
২০২৩ এ 'রাঙা বউ'-য়ের জার্নি শুরু। ২০২৪-এর ডিসেম্বরে শেষ হল। ২০২৫-এর শুরুতে 'আমার বস', মাঝখানে 'ডাইনি' শুট করলাম। আমার বস-র আগেল ডাইনি মুক্তি পেল। দর্শকের থেকে প্রশংসা পেলাম। বড় পর্দায় আমার প্রথম কাজেও বেশ সুখ্যাতি হয়েছে। এরপর 'ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেল', 'ছায়াসঙ্গী'-তে কাস্ট করা হল আমাকে। টার্নিং পয়েন্ট কিনা জানি না, তবে এটুকু বলতে পারি লম্বা বিরতির পর ব্যাক টু ব্যাক কাজ করছি। এটা খুব আনন্দের।
নতুন ছবিতে কেমন চরিত্রে দেখা যাবে?
'ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেল'-এ ভূতের দল আর মানুষের দলের মধ্যে আমাকে দ্বিতীয়টায় দর্শক দেখতে পাবে। চরিত্রটা মিষ্টি তবে অদিতির মতো নয়। প্রথমবার হরর কমেডিতে কাজ করছি। এর আগে তো দর্শক আমাকে এমন চরিত্রে দেখেনি। আশা করছি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব।
ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেলে কেন কাজ করতে রাজি হলেন?
রাজি হওয়ার প্রথম কারণ, 'আমার বস' মুক্তির একমাসের মধ্যে পরবর্তী কাজের শুটিং শুরু এটা আমার কাছে বিরাট প্রাপ্তি। উইন্ডোজ আবার আমাকে কাস্ট করল সেটার জন্য শিবু দা, নন্দিতা দি, জিনিয়া দি, অরিত্র দার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
ব্যক্তিগতভাবে হরর কমেডি পছন্দ?
না, ব্যক্তিগতভাবে যদি বলা হয় তাহলে আমার উত্তর হবে 'না'। আমি হরর কমেডি এনজয় করতে পারি না। সেই জন্য, 'স্ত্রী' বা 'স্ত্রী ২' দেখে ভাল লেগেছে কিন্তু, বারবার দেখব এমন নয়। হরর আর হরর কমেডির মধ্যে আমার পছন্দ হরর মুভি।
ছোটবেলায় ভূতের ছবি দেখে ভয় পাওয়ার মতো কোনও স্মরণীয় ঘটনা আছে?
ছোটবেলায় ভূতের ছবি দেখে ভয় পেতাম আর এখনও পাই। সেই জন্য বাড়িতে বকাও খাই। কিন্তু, আমার প্রচণ্ড ভাল লাগে, বিশেষ করে হলিউডের হরর মুভি।
গল্পের বই পড়তে তো ভালবাসেন। ভূতের গল্প কেমন লাগে?
সিনেমা যেমন ভাল লাগে তেমনই ভূতের গল্প পড়তেও দারুণ লাগে। খুব এনজয় করে আমি ভূতের গল্প পড়ি।
বাংলায় ভূতের ছবি কম হয়। ভানুপ্রিয়ার ভূতের হোটেলে কী বিশেষত্ব আছে যেটা দর্শকের ভাল লাগবে?
হ্যাঁ, বাংলায় ভূতের সিনেমা কম হয়। তবে আমার মনে হয় ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেলের কনটেন্টের জন্যই দর্শকের ভাল লাগবে। কারণ দর্শকও অন্য স্বাদের গল্প পছন্দ করে। 'ভূতপূর্ব' মুক্তির পর তো দর্শক ভাল সার্টফিকেটই দিয়েছে।
একই প্রযোজনা সংস্থার ব্যানারে পরপর দুটি কাজ। এটা কোনওভাবে কেরিয়ারে নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট ফেলবে বলে মনে হয়?
এটা নিয়ে আপাতত ভাবছি না। কারণ আমি একটা জানিস শিখেছি আর মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, কাজের ইচ্ছেশক্তি আর পদ্ধতি জানলে হয়তো সুযোগ দেরিতে হলেও আসবে। একটা কাজ দেখেই তো ভবিষ্যৎ-এ নির্বাচন হয়। 'আমার বস' মুক্তির আগেই কিন্তু, ডাইনি'-তে কাজের সুযোগ এসেছে। 'ছায়াসঙ্গী'-তে কাস্টিং হয়েছে। একই প্রযোজনা সংস্থার ব্যানারে পরপর কাজের জন্য অন্য সংস্থা আমাকে কাজ দেবে কিনা সেটা সম্পূর্ণ তাদের সিদ্ধান্ত। আমি তো আমার একশো শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করি। বিভিন্ন রকমের চরিত্রে কজের চেষ্টা করি। যাতে দর্শকের একঘেয়ে না মনে হয়, শ্রুতি মানেই একটা নির্দিষ্ট ধরনের চরিত্র। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্যের সঙ্গে কাজ করার ভীষণ ইচ্ছে।
উইন্ডোজের কোনও স্ক্রিপ্ট যদি কখনও পছন্দ না হয় নাকোচ করতে অসুবিধা হবে?
উইন্ডোজের সঙ্গে সম্পর্ক এতটাই ভাল হয়ে গিয়েছে যে যদি কোনওদিন স্ক্রিপ্ট ভাল না লাগে তবুও মুখ ফুটে না বলতে পারব না। তবে আমার সেই ভালবাসাটা তৈরি হয়েছে যেখানে আমি ওঁদের বলতে পারি, আমার চরিত্রটা কেন পছন্দ হচ্ছে না। আমার বিশ্বাস, আমার মতকে ওঁরা গুরুত্ব সহকারে প্রাধান্য দেবেন, বোঝার চেষ্টা করবেন। সেটার জন্য আমি উইন্ডোজের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
একই সময়ে যদি অন্য প্রযোজনা সংস্থার তরফে বেশি বাজেটের ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ আসে তখন কোনটাকে বেছে নেবেন?
প্রথমে আমি উইন্ডোজের সঙ্গে কথা বলব। ওঁরা যদি মনে করেন আমার সেখানে উচিত তাহলে মুভ অনটা সহজ হবে। অন্যথায় অপর সিনেমাটির শিডিউল অ্যাডজাস্ট করব। কারণ আমি ব্যক্তিগতজীবন হোক বা কর্মজীবন কখনই কোনও কিছুর জন্য কম্প্রোমাইজ করিনি।
উইন্ডোজের হাত ধরে কৌশানীর কেরিয়ারে ঘুরে দাঁড়াল। নতুন ছবিতে বনি সেনগুপ্ত রয়েছেন। শ্রুতি দাসের ক্ষেত্রেও টার্নিং পয়েন্ট তো, উইন্ডোজকে একলাইনে বিশ্লেষণ করা যায়?
কৌশানী-বনি দুজনেই বড় পর্দার মুখ। কিন্তু, আমি ছোট পর্দার দর্শকের কাছে পরিচিত মুখ। অন্যদিকে উইন্ডোজ তো ইন্ডাস্ট্রির 'ফেস', একটা 'নাম'। নতুনদের সুযোগ দেয়, প্রতিভা খুঁজে নেয়। আমার জন্য আমার বস ভীষণ লাকি, উইন্ডোজ আমার কাছে খুব লক্ষ্মী। এখানে কাজের পরই পরপর তিনটি কাজের প্রস্তাব পেলাম। 'ডাইনি', 'ছায়াসঙ্গী' আর 'ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেল'।
কাজের পরিধি বিস্তৃত হচ্ছে। নতুন কোনও স্বপ্ন বা ইচ্ছে...
স্বপ্ন দেখি কৌশানীর মতো আমিও একদিন শিবপ্রসাদ স্যারের বিপরীতে কাজ করব। স্বপ্ন দেখা বন্ধ করলে তো হবে না। সেদিন হয়তো সেটা প্রকৃত অর্থে আমার কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হবে।