করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সারা দেশব্যাপী ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাংলা বিনোদন জগতের অনেকেই রাত আটটায় প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশে বিশেষ বক্তব্যের পরেই সোশাল মিডিয়ায় বাংলা বিনোদন জগতের বিভিন্ন ব্যক্তিত্বরা তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন।
প্রায় সকলেই এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন নিজেদের সোশাল মিডিয়া টাইমলাইন থেকে। কিন্তু পাশাপাশি কিছু উদ্বেগের কথাও উঠে এসেছে। এতদিন জানা ছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন। শুটিং বন্ধ হওয়ার ঘোষণার সময়ও তাই বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: করোনার জের, বাসন মাজার অভিনব উপায় শেখালেন ক্যাটরিনা
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে শুটিং এপ্রিলের ১৬-১৭ তারিখের আগে শুরু হবে না। শুধু কলাকুশলীরা নন, শিল্পীদের বেশিরভাগই প্রতিদিনের সাম্মানিক নিয়ে কাজ করেন। প্রায় এক মাস শুটিং বন্ধ থাকা এবং স্টেজ শো বন্ধ থাকা মানে পুরোপুরি আয়বিহীন হয়ে পড়া তা নিয়ে অনেকেই উদ্বিগ্ন। অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী তাঁর সোশাল মিডিয়া টাইমলাইনে লিখেছেন, ''আমরা যারা সরকারী চাকরি করি না, যারা পার ডে কাজ করে সংসার চালাই তারা হোম লোন, কার লোন, ফোন লোন, যে কোনও লোন কী করে দেবে? গভর্নমেন্টের এই বিষয়ে স্টেপ নেওয়া খুবই উচিত।''
ডিজাইনার এবং অভিনেতা অভিষেক রায়ও এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে তিনি এবং জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় মূলত উদ্বিগ্ন খাদ্য সরবরাহ নিয়ে। জয়জিৎ তাঁর সোশাল মিডিয়া প্রোফাইলে লেখেন,
প্রধানমন্ত্রীর কথামতো মুদির দোকান ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা চালু থাকবে। ইকমার্স গ্রসারিও খোলা থাকবে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু অনেক জায়গাতেই সব মুদির দোকান খোলা রাখা হচ্ছে না এবং দোকান খোলা থাকলেও ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দ্রব্যের স্টকে টান পড়েছে। আবার ছোট শহরগুলিতে ই-কমার্স সরবরাহ করে না। সেই নিয়েও একটু চিন্তিত অনেকেই। শহরেও বেশ কিছু ই-কমার্স সংস্থা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
তবে অনেকেই আবার অকুণ্ঠ সমর্থন করেছেন এই লকডাউনকে। নিজেদের কথা না ভেবে সমষ্টির স্বার্থে সুবিধা-অসুবিধার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন। তেমন অভিনেত্রী তন্বী লাহা রায় তাঁর সোশাল মিডিয়া টাইমলাইনে লেখেন যে এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁদের নিয়মিত চিকিৎসা করাতে বাড়ির বাইরে যেতে হয় অথচ তাঁরা এমার্জেন্সি পেশেন্ট নন। এখন যেহেতু এমার্জেন্সি ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না, তাই তাঁদেরও বাড়িতে আটক থাকতে হবে। তিনি বলেন, ''আমার আমার না করে একটু সকলের কথা ভাবি''
তবে অভিনেত্রী অনন্যা বিশ্বাস সম্পূর্ণ অন্য একটি দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্বিগ্ন। তাঁর বক্তব্য, এবার ছোট ব্যবসায়ীরা কী করবেন। এই যে এতদিন ব্যবসা বন্ধ থাকবে, তাঁদের ট্যাক্স ও জিএসটি-তে কি ছাড় দেবে সরকার। এমন নানাবিধ উদ্বেগ ও আশঙ্কার মিশ্র অনুভূতিতে এখন সাধারণ মানুষ এবং বাংলা বিনোদন জগতের সদস্যরাও।