Bengali serial actress Amandeep Sonkar: অমনদীপ সোনকার 'স্ত্রী' ধারাবাহিক দিয়েই বাংলা টেলিভিশনে ডেবিউ করেন। তখন ছিলেন অষ্টাদশী। সান বাংলা-র 'কনে বউ' ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রে এসেছেন সম্প্রতি। শুটিংয়ের ফাঁকে আড্ডায় উঠে এল তাঁর অভিনেত্রী হয়ে ওঠার গল্প আর ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথা।
তুমি কীভাবে শুরু করলে অভিনয়-মডেলিং?
আমার যখন ৩ বছর বয়স, তখন আমি প্রথম হরলিক্সের অ্যাড করেছিলাম। আরও অনেক অ্যাড করেছি। অফ কোর্স মা-বাবারই ইন্টারেস্ট ছিল। আর একটা সিরিয়াল করেছিলাম, সেটা হিন্দি সিরিয়াল কিন্তু এখানে শুট হয়েছিল-- সাহেব বিবি গোলাম বলে।
আরও পড়ুন: যখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখন বোধহয় ভগবানই শক্তি দেন: পল্লবী
সাহারা ওয়ান-এর ধারাবাহিক, দেবাংশু সেনগুপ্তর পরিচালনা...
হ্যাঁ, রবিনা ট্যান্ডন হিরোইন ছিলেন। তখন আমার ৬ বছর বয়স। ওটা একেবারেই ক্যামিও। তার পরে বাবা বলল যে পড়াশোনায় মন দাও তো তাই ছেড়ে দিলাম। ওই সময় আমার ভালোও লাগত না। কী সকাল সকাল তুলে দেয়, ঠান্ডার মধ্যে শ্যাম্পু করিয়ে দেয়। ক্লাস নাইনে উঠে আবার আমি মডেলিং শুরু করি। বাড়ির কিছু সমস্যা ছিল। বাবা-মা সেপারেটেড হয়ে গেল। তখন আবার শুরু করলাম। ক্লাস টেন-এ একটা ওড়িয়া ছবি করলাম। তার পরে 'স্ত্রী' আমার বিগেস্ট ব্রেক, আমি তখন ক্লাস টুয়েলভ-এ। 'স্ত্রী'-এর পরে 'ওম নমহ্ শিবায়' আর এখন 'কনে বউ'। মাঝে দুটো জি বাংলা অরিজিনালস করলাম, আর একটা শর্ট ফিল্ম করেছি এর মধ্যে যেটা এখনো রিলিজ হয়নি। আর একটা বাংলাদেশী ছবিও করেছি, এই বছর ডিসেম্বরে আসছে।
ছোটবেলায় যেমন ভালো লাগত না সকাল সকাল তুলে দেয়, এখনও তো অনেক সকালে কলটাইম থাকে, এখন ভালো লাগে?
হ্যাঁ, এখন সত্যিই ভালো লাগে। ইন ফ্যাক্ট, 'স্ত্রী'-এর সময় মনে হতো... উফফ, কখন ছাড়া পাব। ঘুম নেই, কিছু নেই, এত হেকটিক শিডিউল। ছোটবেলায় মা বলত বলে করা। কিন্তু এখন এটা আমার প্যাশন। এখন এটা না করলে আমি ডিপ্রেসড হয়ে যাই। এখন বাড়িতে বসে থাকলে বা কাজ না থাকলে আমার মনে হয় কী করব, ভালো লাগছে না। পড়াশোনা...ঠিক আছে, তবুও
কোন ইয়ার তোমার কলেজে, কী সাবজেক্ট পড়ো?
থার্ড ইয়ার, আমার বি.কম অনার্স।
বি.কম অনার্সে তো খুবই চাপ থাকে, এর মধ্যে ম্যানেজ করো কীভাবে, কখন পড়ো?
আমি ওই পরীক্ষার একমাস আগে থেকে শুরু করি পড়া। তাও বলছি... শেষে গিয়ে পরীক্ষার আগের দিন রাতে পড়ি।
খুবই প্রতিভাবান তো তাহলে তুমি, আর খুব সাহসী!
হি হি.. আমি জানি আমি ঠিক করে নেব। হ্যাঁ, নাইনটি পারসেন্ট হয়তো পাব না কিন্তু পাশ করে যাব। আমি যখন ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষা দিই, তখন আমার শুটিং চলছিল ওড়িশাতে। আমি ওখান থেকে আসতাম, পরীক্ষা দিয়ে চলে যেতাম শুটিং করতে। আবার আসতাম, পরীক্ষা দিয়ে চলে যেতাম, শুটিং করতাম। মাঝখানে ওই জার্নির সময়টা পড়তাম আর রাতে একটু পড়তাম। আমি ৮৫% পেয়েছিলাম, আইসিএসসি বোর্ডে।
বাহ্, তো তুমি যখন কলেজে পড়ছ, তখনই তো স্ত্রী করতে, ওখানে কেউ চিনতে পারত না?
আমার প্রথম দিন কলেজে, ফার্স্ট পিরিয়ডেই তো হয়েছিল। একজন বাঙালি ম্যাম ছিলেন। আমি ফার্স্ট বেঞ্চে বসেছিলাম। আমাকে দেখে বলছেন, ''আচ্ছা তুমি কি সিরিয়াল করো? আমি তোমাকে দেখেছি।'' আমি বললাম, ''হ্যাঁ।'' তখন ম্যাম বললেন, ''আমার মা খুব পছন্দ করে তোমাকে।'' তখন থেকেই কলেজের সবাই বলতে শুরু করল-- ও হো, অ্যাকট্রেস! তার পর থেকেই একটা ব্যাপার হয়ে গেছে কলেজে...
ভবিষ্যতের কোনও গোল সেট করেছ যে পরে বলিউডে যাবে বা সেরকম কিছু?
আমি চাই সেটা। কারণ আমি তো বাঙালি নই এমনিতেও। আমি চাই হিন্দি সিরিয়াল করতে। আর এখন সাউথের ছবি খুব ফেমাস। তো সেটাও একটা ইচ্ছে রয়েছে।
তুমি খুব ইমোশনাল?
ডিপেন্ডস, আমি বরং প্র্যাকটিকাল। তবে আমার মাইন্ড খুব ফ্লাকচুয়েট করে। আজ যেমন আমি অভিনয় করছি, ভালো লাগছে। কাল হঠাৎ মনে হতেই পারে, ভালো লাগছে না, অন্য কিছু করব। ওটাই আমার সমস্যা।
আরও পড়ুন: দাদা বলেছিলেন ও-ই আমার নায়িকা আর ও প্রমাণ করে দেবে: অমনদীপ
তোমার হবিজ কী?
আমি নাচ ভালোবাসি। আর মুভি দেখি, ওয়েব সিরিজ দেখি। আর আমার নেচার খুব পছন্দ, খুব বেড়াতে ভালোবাসি। ছোটবেলায় আমার লক্ষ্য ছিল ট্রাভেলার হওয়ার। ভাবতাম এমন একটা কাজ করব, যেখানে অনেক জায়গায় বেড়ানো যাবে। যেমন এয়ার হোস্টেসরা বেড়ায়। অভিনয় করলেও বেড়ানো যায়, যদি মুভি করে। আমি সারা পৃথিবীটা দেখতে চাই। আলাদা আলাদা কালচারের মানুষজনকে দেখতে চাই। ছোটবেলা থেকেই বিদেশের প্রতি টানটা ছিল, যেটা এখনও আছে। আর আমার অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস ভালো লাগে। ইন ফ্যাক্ট, 'দিদি নাম্বার ওয়ান'-এ গিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল যে বিয়ে কাকে করতে চাও। তখন আমি বলেছিলাম আমি একজন এনআরআই-কে বিয়ে করব আর বিদেশ চলে যাব।
এখনও কি সেরকমই প্ল্যান রয়েছে?
নাহ্, সে তখন ছোট ছিলাম তাই। আমি যাকে বিয়ে করব, সেই মানুষটা ভালো হলেই হল। এনআরআই হোক, ভারতীয় হোক, কিছু যায় আসে না।