স্টার জলসা-র 'গুড়িয়া যেখানে গুড্ডু সেখানে'-র মুখ্য চরিত্রের অভিনেত্রী প্রত্যুষা পাল। টেলিপর্দার সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকাদের একজন। একান্ত আলাপচারিতায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানালেন যে তিনি আসলে ঠিক অভিনেত্রী পরিচয়ে আটকে থাকতে চান না। তাঁর শৈশবের স্বপ্ন, ছবি পরিচালনা। তাই সিনেম্যাটোগ্রাফি নিয়ে বিধিবদ্ধ পড়াশোনা করতে চান।
টেলিপর্দায় বহু ধারাবাহিকের প্রধান চরিত্রে দর্শক দেখেছেন প্রত্যুষাকে। কিন্তু তিনি এখনও দর্শকের মনে 'মা লক্ষ্মী' হিসেবেই রয়ে গিয়েছেন। জি বাংলা-র 'এসো মা লক্ষ্মী' ছিল তাঁর প্রথম কাজ। তখন বয়স মাত্র ১৬ বছর। সামনেই ছিল দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা। তবু ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রের প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন প্রত্যুষা।
আরও পড়ুন: ‘ললিতা’ হয়ে এল ঐন্দ্রিলা! ধারাবাহিকে ত্রিকোণ ঝামেলা
''আমি চাইল্ড অ্যাক্টর হিসেবে অনেকদিন ধরেই কাজ করছি। একটা সময় পরে আমার আর ভাল লাগছিল না। আমি পড়াশোনাতেই শুধু মন দিয়েছিলাম। আমার টেনথ-এর বোর্ডস-এর আগে পাড়ার এক বন্ধু আমাকে বলে যে জি বাংলা থেকে একটা সিরিয়ালের জন্য নতুন মুখ চাইছে। তোর ছবিটা কি পাঠাব? আমি বলেছিলাম, না না দরকার নেই, আমার সামনে বোর্ডস, আমি এখন এসব কিছু করব না'', বলেন প্রত্যুষা।
কিন্তু প্রত্যুষার বন্ধু তাঁর কথা শোনেননি। ছবি পাঠিয়েছিলেন জি বাংলা-তে। আর তার পরের দিনই দূরভাষে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রত্যুষা প্রাথমিকভাবে অরাজি হলেও অডিশনে যান। তখনও জানতেন না ঠিক কোন ধারাবাহিকের কোন চরিত্রের জন্য তাঁকে ডাকা হয়েছে। অডিশনে প্রথম পছন্দ ছিলেন তিনি, তবুও সামনে পরীক্ষার কথা ভেবে পিছিয়ে আসছিলেন।
''মা বলেছিল, এত ভাল একটা চরিত্র, তুই ছেড়ে দিবি? আসলে আমি নিজে ছোট থেকেই পুরাণ নিয়ে খুব চর্চা করতে ভালবাসি'', বলেন প্রত্যুষা, ''সেই শুরু হল অভিনয়। 'এসো মা লক্ষ্মী' -র পরে 'তবু মনে রেখো', তার পরে এখন 'গুড্ডু-গুড়িয়া'... পর পর চলতেই থাকল। আমি আসলে এবার একটু ব্রেক নিতে চাই। মেগাসিরিয়ালের শিডিউল এমন থাকে যে আর কোনও কিছুর জন্যই সময় পাওয়া যায় না। তাই এবার আমার ইচ্ছে, এই সিরিয়ালটা শেষ হলে সিনেম্যাটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনাটা শুরু করব।''
আরও পড়ুন: ‘আমি আসলে খুব চাপা, অগ্নির সঙ্গে মিল আছে’: শুভজিৎ
অভিনেত্রী জানালেন তিনি শুটিংয়ের ফাঁকে যতটা সময় সম্ভব ক্যামেরা, যন্ত্রাংশ ইত্যাদি নিয়ে পড়াশোনা করেন। শুধু তাই নয়, শুটিং ফ্লোরে তিনি ডিওপি-র থেকে ক্যামেরা অপারেশনও শিখে নিয়েছেন অল্পবিস্তর। ''ছোট থেকেই ক্যামেরা আমাকে প্রচণ্ড আকর্ষণ করে। সব সময় দেখতে থাকি যে কী কী নতুন ক্যামেরা বেরিয়েছে। এই যেমন রেড হিলিয়াম ক্যামেরাটা নিয়ে এখন পড়ছি। আর শুটিংয়ে তো সুযোগ পেলেই আমি ফোকাস পুলিংয়ের কাজটা করি। ডিওপি-র থেকে অল্প অল্প শিখতে থাকি, অ্যাসিস্ট করি। মজা করে বলে ওরা যে এবার আমাদের চাকরি খেয়ে নেবে'', জানান প্রত্যুষা।
আলিয়া ভাট অভিনীত 'ডিয়ার জিন্দেগি' তাই খুবই প্রিয় ছবি অভিনেত্রীর। ওই ছবি দেখার পরেই তিনি আরও বেশি করে সিদ্ধান্ত নেন যে এবার তিনি ভবিষ্যতে নিজেকে সিনেম্যাটোগ্রাফার হিসেবেই দেখতে চান। এমনটা ঠিক নয় যে তিনি অভিনয়টা পুরোপুরি ছেড়ে দেবেন বা অভিনয় তিনি ভালবাসেন না। প্রত্যুষা বলেন, ''আমি যখন অভিনয় শুরু করি খুব বেশি কিছু ভাবিনি। কিন্তু এখন আমি চাই, এটা ছাড়াও এমন একটা কিছু করি যাতে আমার বাবা-মা আমাকে নিয়ে গর্ব করে। আর সেটা ঠিক করে শিখেই করতে চাই।''