বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে প্রায় সব মানুষকেই দুধরনের লড়াই লড়তে হচ্ছে। প্রথমত, সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা আর দ্বিতীয়ত দীর্ঘ অচলাবস্থায় নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিকঠাক রাখা। ২১ দিনের লকডাউনের সময়সীমা বাড়তে বাড়তে একমাস পেরিয়ে গিয়েছে। জীবিকার অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বহু মানুষ। সঞ্চয়ের ভাণ্ডার শেষ হয়ে আসছে, আবার অনেকে ঠিকমতো খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেন না। প্রিয়জনদের থেকে দূরে থাকতে থাকতে মানুষ ভেঙে পড়ছেন। বাংলার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তাই এই সময় নানা ভিডিওতে ইতিবাচক থাকার কথা বলছেন।
যে কোনও শিল্পীই প্রকাশ করতে চান নিজেকে। লকডাউনে বাড়িতে বসে তাই বাংলা ছবির ও টেলিজগতের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তৈরি করছেন ভিডিও কোলাজ। কেউ লিখছেন স্ক্রিপ্ট, বন্ধুদের পাঠানো ভিডিও ক্লিপ জুড়ে জুড়ে তৈরি করছেন বিশেষ কোলাজ। সোশাল মিডিয়ায় সম্প্রতি এমন বেশ কিছু ভিডিও এসেছে। তারই মধ্যে কয়েকটি রইল নীচে।
আরও পড়ুন: বাংলার রণজয়ের ‘জয় হো’ কভার! প্রশংসায় স্বয়ং রহমান
অভিনেত্রী সুমনা দাস অভিনয়ের পাশাপাশি ভালবাসেন নিজের লেখা লিখতে। লকডাউনে বাড়িতে বসে লিখলেন লিরিকাল একটি ছোট্ট লেখা। শুট করলেন মোবাইল ক্যামেরায় এবং এডিট অ্য়াপ ব্যবহার করে তৈরি করলেন তাঁর একান্ত নিজস্ব একটি ছবি দেখে নিতে পারেন নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে--
বাংলা টেলিভিশনের বেশ কয়েকটি ধারাবাহিকের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা নিজেদের টিমের সদস্যদের নিয়ে তৈরি করেছেন সচেতনতা ভিডিও। প্রথম এই ধরনের কাজ করে 'করুণাময়ী রাণী রাসমণি' টিম। এর পর অনেক ইউনিট থেকেই এমন কিছু ভিডিও তৈরি হয়। সম্প্রতি 'বাঘ বন্দি খেলা' টিমের পক্ষ থেকে তৈরি করা হয়েছে তেমনই একটি ভিডিও উপস্থাপনা যার স্ক্রিপ্টটি লিখেছেন ধারাবাহিকের অভিনেত্রী পৌষমিতা ও এডিট করে ভিডিওটি তৈরি করেছেন জুপিটার। দেখে নিতে পারেন কেমন হয়েছে এই ভিডিওটি--
প্রযোজক স্নেহাশিস চক্রবর্তী এই সময়ে কম্পোজ করেছেন একটি বিশেষ গান। তাঁর কেরিয়ারের শুরুর দিকে তিনি ছিলেন সঙ্গীত পরিচালক। তার পরে তিনি চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক-প্রযোজক হিসেবে কাজ শুরু করেন। বাংলা টেলিভিশনে বহু জনপ্রিয় ধারাবাহিকের রূপকার তিনি। পাশাপাশি তাঁর ধারাবাহিকের সঙ্গীত পরিচালনার কাজও বেশিরভাগ সময় তিনিই করে থাকেন। ব্লুজ-পরিবারের তরফ থেকে তৈরি করা হয়েছে এই বিশেষ ভিডিওটি যেখানে রয়েছেন বাংলা ছবি ও টেলিভিশন জগতের বহু জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা এবং স্নেহাশিস চক্রবর্তী-রূপসা চক্রবর্তীর ছেলে রূপস্নাত।
প্রযোজনা সংস্থাগুলির পাশাপাশি শিল্পীরা নিজেরাও সংগঠিত হয়ে তৈরি করছেন সচেতনতামূলক ভিডিও, যেখানে রয়েছে ইতিবাচক থাকার বার্তা। সামাজিক দূরত্বের এই সময়ে বন্ধুদের মধ্যে দেখাসাক্ষাৎ নেই। স্টুডিওপাড়ায় যাতায়াত, দেখাশোনা বন্ধ। তাই ঘরে বসে ভিডিও ক্লিপেই জুড়ে থাকা যতটা সম্ভব এবং সোশাল মিডিয়া মারফত সবাইকে জানানো যে মন শক্ত করে এই সময়টা পেরিয়ে যেতে হবে--
অভিনেত্রী মৌমিতা চক্রবর্তী বিগত কয়েক বছর ধরেই পরিচালনা করছেন ছোট ছবি। এই সময়ে দাঁড়িয়ে তাই তিনিও উপহার দিলেন একটি ভিডিও উপস্থাপনা। ছোটপর্দা ও বড়পর্দার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা ছাড়াও এই কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কর্মক্ষেত্রের কিছু ঝলকও দেখতে পাবেন দর্শক এই ভিডিওতে--
এই সব কাজগুলিই বাড়িতে বসে সামাজিক দূরত্ব রেখে তৈরি। আর এই সব কাজগুলিই প্রমাণ করে, কোনও রকম বাধ্যবাধকতাই সৃজনশীলতাকে স্তব্ধ করতে পারে না। অসুখের বিরুদ্ধে এটাও এক রকম লড়াই।