বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় চ্যানেল জি বাংলায় সম্প্রচারিত হওয়া 'দাদাগিরি'-র একটি পর্ব নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। সম্প্রতি একটি পর্বে প্রতিযোগীদের মধ্যে এক মহিলা দাবী করেন, কোথাও কোনও অলৌকিক ঘটনা ঘটলে ভূতের খোঁজ করাই তাঁর পেশা। মূলত 'বিজ্ঞান বিরোধী' এক ধারণাকে 'দাদাগিরি'র মতো একটি জনপ্রিয় মঞ্চে কার্যত মান্যতা দেওয়া হল, এই ভাবনা থেকেই সোশাল মিডিয়ায় গলা চড়িয়েছেন অনেকেই। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের তরফেও ইতিমধ্যে এই অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশেষ ওই পর্বে এক প্রতিযোগী দাবি করেন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে 'ভূতেদের অস্তিত্ব' টের পাওয়া যায়। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক নিজেও জানান ভূতের অস্তিত্ব সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত। সঞ্চালক এবং প্রতিযোগী দুজনেই নিজেদের যুক্তির স্বপক্ষে বিশেষ কিছু অভিজ্ঞতাও ভাগ করে নেন উপস্থিত দর্শক এবং প্রতিযোগীদের সঙ্গে।
আরও পড়ুন, সোনাগাছির মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন লীনা
এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য সৌরভ চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার পক্ষ থেকে। সৌরভ বাবু জানালেন, "আমরা দাদাগিরির পর্ব সম্প্রচারিত হওয়ার দিন সাতেক আগেই বিজ্ঞানবিরোধী অনুষ্ঠান সম্প্রচারের প্রতিবাদ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছি। ইতিমধ্যে এই পর্ব দেখানোর পর আমাদের সংগঠনের তরফে ইতিমধ্যে দায়ের করা মামলায় এই সংক্রান্ত কিছু বিষয় সংযোজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মানুষের মধ্যে কোনওরকম বিজ্ঞান বিরোধী অলৌকিক বিশ্বাস ছড়ানো আইনত অপরাধ। এবং তা ভারতীয় সংবিধানের ৫১ এ এইচ ধারাকেও(দেশবাসীর মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি, অনুসন্ধিৎসা এবং সংস্কার গড়ে তোলা বাধ্যতামূলক) লঙ্ঘন করে। তাছাড়া আমরা মহারাষ্ট্রের মতো এই রাজ্যেও কুসংস্কার বিরোধী আইন চাই।
"সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানটি একটি জ্ঞানভিত্তিক, প্রশ্নোত্তরের প্রতিযোগিতা, এখানে জ্ঞানের আদানপ্রদান হয়। সঞ্চালক হিসেবে যিনি রয়েছেন, বাঙালির কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা প্রবল। সেই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে এমন অনুষ্ঠানে বিজ্ঞানের পরিপন্থী এমন বার্তা ছড়ানো খুবই দুঃখজনক", জানালেন রাজ্য বিজ্ঞান মঞ্চের সৌরভ চক্রবর্তী। জানালেন, জনপ্রিয় অনুষ্ঠানটির বিশেষ একটি পর্ব নিয়েই কিন্তু সমগ্র মামলাটি নয়। এটি একটি অংশ মাত্র। একই সঙ্গে 'উন্নয়নের নামে যত্রতত্র গাছ কাটার বিরুদ্ধেও একই দিনে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে তাঁদের সংগঠন। দু'টি মামলার ক্ষেত্রে তাঁদের আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় এবং শামিম আহমেদ।
আরও পড়ুন, ‘লাভ আজ কাল পরশু’-র শুটিং শুরু, লুক শেয়ার করলেন অভিনেতা
সমগ্র বিষয়টি নিয়ে জি বাংলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। যেই মুহূর্তে কর্তৃপক্ষের বয়ান পাওয়া যাবে তা পৌঁছে দেওয়া হবে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার পাঠকদের কাছে।