Bhaswar Chatterjee: অতিমারীর (Pandemic) জেরে যে বিশেষ করে নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরা সবচাইতে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তা বোধহয় আর আলদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। দিন আই দিন খাই মানুষগুলোর রোজগারের পথ বন্ধ। বাড়ির ভাঁড়ারে থাকা চাল, ডাল, অত্যাবশকীয় রসদও অনেকেরই ফুরিয়েছে। যৎসামান্য সঞ্চিত অর্থ দিয়েও আর কদিন? অতঃপর সাহায্যই ভরসা! ঠিক এরকম একটি অবস্থায় কিন্তু সমস্যায় পড়েছেন যৌনকর্মীরাও। খদ্দের নেই। খাবার-রেশন তো দূরের কথা, অনেকেই এইসময়ে আবার মাথা গোজার ঠাঁই নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। কেমন আছেন তাঁরা? খোঁজ নিতে উত্তর কলকাতার সোনাগাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় (Bhaswar Chatterjee)। ওঁদের হাতে ত্রাণ তুলে দেওয়ার পাশাপাশি শুনলেন যৌনকর্মীদের করুণ কাহিনীও।
বেশ অন্যরকম এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলেন অভিনেতা। 'দুর্বার'-এর সভাপতি বিশাখা এবং সেক্রেটারি কাজলের কাছ থেকে কিছু কথা শুনে বেজায় মন খারাপ হয়েছে তাঁরা। আবার হতবাকও হয়েছেন। ভাস্বরের কথায়, "বহু বছর ধরে ওঁদের ইচ্ছে দুর্গাপুজো করার। কারণ আশেপাশের পুজোতে ওঁরা গেলে দূর ছাই করে তাড়িয়ে দেওয়া হত, পতিতা পল্লীর মেয়েরা এলে পুজো নষ্ট হবে, সেই অছিলায়। ওঁদের ছেলেমেয়েরা অঞ্জলি দিতে গেলে তাড়িয়ে দেওয়া হত সমাজের নোংরা জঞ্জাল বলে।" সেই প্রেক্ষিতেই অভিনেতা প্রশ্ন ছুঁড়েছেন, আচ্ছা এই জঞ্জাল উৎপন্ন করল কে? ওই পল্লীর মেয়েরা নিজেরাই? ওরা সিঁদুর খেলতে গেলে সবাই সরে গিয়ে বলত- ওদের ছোঁয়া লাগাও পাপ। হায় রে, এরা কি জানে পতিতা পল্লীর মাটি ছাড়া দুর্গাপুজো হয় না!
<আরও পড়ুন: ‘পর্ণশ্রী ভেনিস হয়ে গেছে, মানুষের সেবা করার লোকরা ভ্যানিশ’, কটাক্ষ অপরাজিতার আঢ্যর>
পাশাপাশি ভাস্বর যৌনকর্মীদের প্রকৃত দশভুজা আখ্যা দিয়ে এও জানান যে, "অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আজ দিদিরা নিজেদের পুজো করেন এবং কলকাতার সমস্ত পতিতা পল্লীতে খাবার সরবরাহ করেন। তাই মাত্র দুটো হাত নিয়েই এরা দশভুজার কাজ করছেন। আর আপনি স্বামী-পুত্র নিয়ে সংসার করে নিজেকে সুখী ভেবে জানতেও পারছেন না কখন আপনার স্বামী রত্ন আপনারি চোখে ধুলো দিয়ে আরও কিছু দশভুজার জন্ম দিয়ে আসছে।" যৌনকর্মীদের তীর্যক চোখে দেখা সমালোচকদের সোজাসুজি কটাক্ষ করেছেন অভিনেতা।
যৌনপল্লীতে গিয়ে দুর্গাপুজোর আমন্ত্রণ পেয়ে আপ্লুত ভাস্বর। জানিয়েছেন, তিনি অবশ্যই বিশাখা এবং কাজলের তরফে আসা নিমন্ত্রণ রক্ষা করবেন। আর প্রত্যেকবছর ভাঁইফোটাও নিতে যাবেন যৌনকর্মীদের কাছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন