কেন্দ্রশাসিত জঙ্গলমহল কিংবা উত্তরবঙ্গ, পৃথক বাংলার দাবি তুলে ইতিমধ্যেই রাজ্য-রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টির দুই সাংসদ- জন বার্লা (John Barla) এবং সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan)। যা নিয়ে দলের অন্দরেই মতান্তর তুঙ্গে। ইতিমধ্যেই অস্বস্তি ঢাকতে বার্লা-সৌমিত্রকে সতর্ক করে দিয়েছে পদ্ম শিবিরের উপরমহল। কিন্তু তাতেও বিতর্কের রেশ কি কিছু কমল? উল্টে বাঙালি আবেগ উস্কে বিজেপির বিরুদ্ধে বঙ্গভঙ্গের অভিযোগ এনে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে যখন সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি (BJP), তখন গেরুয়া শিবিরের-ই আরেক তারকা রূপা ভট্টাচার্য (Rupa Bhattacharjee) বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন। তাঁর মন্তব্য, অখণ্ডে ভারতবর্ষের ত্বত্ত্বে বিশ্বাসীরা কোন মুখে বঙ্গভঙ্গের কথা বলছেন? প্রশ্ন ছুঁড়ে রূপা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, নাহ! তিনি 'বিভাজননীতির বিরোধী'।
বঙ্গভঙ্গের দাবি নিয়ে কী মন্তব্য রূপা ভট্টাচার্যের? বলছেন, "যারা অখন্ড ভারতবর্ষে বিশ্বাস করে তারা রাজ্য বিভাজনের কথা বলে কোন মুখে?" নিজস্ব শিবির-বিপরীত ফেসবুক পোস্ট দেখে অনেকেই একাধিকবার মন্তব্য করেছেন যে, "পদ্ম শিবিরের রূপাও এবার 'উলটো সুর' গাইছেন!" স্বাভাবিকবশতই কৌতূহলী নেটজনতারা প্রশ্ন তুলেছেন, "তাহলে বিজেপির রূপাও কি এবার তৃণমূল-মুখী?"
এপ্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে অভিনেত্রী তথা ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য রূপা ভট্টাচার্য জানালেন, "বিভাজননীতিকে একেবারেই সমর্থন করি না। আমি বিশ্বাস করি, সেটা রাজ্য হোক কিংবা ঘর-সংসার, আমার প্রাপ্য অধিকার কেউ না দিলে, সেটা আদায় করে নিতে হবে। কিন্তু তার জন্য রাজ্য-দেশ কোনওটাই বিভাজনে আমি বিশ্বাসী নই। কারণ, ভাঙাটা খুব সহজ। আমি গড়ার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। উত্তরবঙ্গের মতো রাজ্যের কোণায় কোণায় অপ্রাপ্তির যন্ত্রণা তৈরি হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে একত্রিতভাবে আমাদের মতামত রাজ্য সরকারের কাছে তুলে ধরব। কিন্তু তার জন্য বাংলা ভাগ কোনও সমাধান নয়। পশ্চিমবঙ্গ স্বায়ত্তশাসনে আসুক, সেটা যেমন আমি মানব না, তেমন বাংলা ভেঙে টুকরো হোক, সেটাও আমি মানব না।"
<আরও পড়ুন: Dev: ‘বহুবার চিঠি দিয়েও কিছু হয়নি’, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ দেবের>
তাহলে কি 'উলটো সুর' গাইছেন রূপা ভট্টাচার্য? অভিনেত্রীর উত্তর, "বিরোধিতার পাশাপাশি আধুনিক রাজনীতিতে আত্মসমীক্ষাও ভীষণভাবে প্রয়োজন। আমি বা আমার দল যদি কোনও ভুল করে থাকি সেই আত্ম-উপলব্ধি থাকলে তবেই আমি অন্য দলের ভুলের দিকে আঙুল তুলতে পারব। দলের মধ্যে নিজস্ব গণতান্ত্রিক অধিকার রাখলেই আমি রাজ্য বা দেশের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের কথা বলতে পারব। বিচক্ষণ-বুদ্ধিমান রাজনীতিবিদরা সবসময়েই আত্মসমীক্ষায় বিশ্বাসী। রাজনীতি মানে সর্বদাই কাদা ছোড়াছুঁড়ি নয়। ভুল-ঠিক পর্যালোচনা করে মন্তব্য করলে কেউ যদি দলবদলু আখ্যা দেয়, তাহলে সেটা একান্তই ব্যক্তিবিশেষের মতামত।"
পাশাপাশি অভিনেত্রী এও জানান যে, নবীন প্রজন্ম যেভাবে রাজনৈতিক ময়দানে সক্রিয় হয়ে উঠছে, তা রাজ্য-রাজনীতির জন্যই আখেড়ে ভাল। বাংলার উন্নয়ন-ই সর্বৈব লক্ষ্য হওয়া উচিত। তাঁর জন্যে দলের অন্দরের কারও ভুল পদক্ষেপের সমালোচনা করতেও পিছপা হবেন না তিনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন