/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/22/deepti-naval-2025-08-22-21-14-57.jpg)
প্রাক্তন স্বামী প্রকাশ ঝা-র সঙ্গে দীপ্তি নাভাল।
অভিনেত্রী দীপ্তি নাভাল ও খ্যাতনামা পরিচালক প্রকাশ ঝা ১৯৮৫ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রায় ১৭ বছর একসঙ্গে থাকার পর ২০০২ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। অনেক সেলিব্রিটির বিচ্ছেদ তিক্ততার জায়গায় পৌঁছায়, কিন্তু দীপ্তি ও প্রকাশ বিচ্ছেদের পরও একে অপরের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন.. প্রয়োজনে একে অপরের পাশে থেকেছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দীপ্তি খোলাখুলি বলেছেন কীভাবে তাঁদের বিয়ে ভাঙে যায় এবং সেই সময় তিনি কীভাবে ভীষণ মানসিক চাপে ভুগেছেন।
বিবিসি নিউজ হিন্দিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দীপ্তি জানান, কমলা, আনকাহি এবং তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি হিপ হিপ হুররে–র সময় থেকেই প্রকাশের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শুরু হয়। সেই সময়ের বলিউডের মানসিকতা নিয়ে তিনি বলেন, "আমি যখন বিয়ে করি, তখনও বলিউডে প্রচলিত ধারণা ছিল যে, নায়িকা বিয়ে করলে তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। যেন দোকান গুটিয়ে নিতে হবে। সবাই ধরে নিত যে বিয়ে হয়ে গেলে অভিনেত্রীর আর কাজ করার আগ্রহ থাকে না, ফলে ধীরে ধীরে কাজের প্রস্তাব আসা বন্ধ হয়ে যেত।" দীপ্তির মতে, এই ধ্যানধারণার পরেই তাঁর জীবনে নেমে আসে এক অন্ধকার অধ্যায়। যদিও আজ তিনি ও প্রকাশ “খুব ভালো বন্ধু” এবং একে অপরের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন, তবে সবসময় পরিস্থিতি এত সহজ ছিল না।
Bollywood Actor: 'ঠোঁট গলা সব শুকিয়ে গিয়েছে..', উপায় না পেয়েই পুলিশের দ্বারস্থ অভিনেতা
তিনি মনে করেন, বিয়ের কিছু বছরের মধ্যেই দু’জনেই বুঝে গিয়েছিলেন যে তাঁদের সম্পর্কে কিছু বড়সড় সমস্যা রয়েছে। দীপ্তি বলেন, "বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে জিনিসগুলো আমার কল্পনা মতো চলছে না। আমাদের সম্পর্কে এমন এক সময় এসেছিল, যখন যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তখন আমার মানসিক অবস্থা খুব খারাপ। এবং আমি গভীর হতাশার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি তখন।" স্কুলে মনোবিজ্ঞান পড়ার কারণে ও কাছের এক বন্ধুর ডিপ্রেশনের অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষ করার ফলে দীপ্তি নিজের মধ্যে সেই উপসর্গগুলো চিনতে পারেন।
তিনি আরও জানান, সেলিব্রিটিদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যার মোকাবিলা করা আরও কঠিন, কারণ তাঁরা সবসময় জনসমক্ষে থাকেন এবং মানুষের কড়া নজরদারির শিকার হন। তাঁর কথায়, "আপনি যখন জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়ে থাকবেন, তখন নিজেকেই সেই গভীর গর্ত থেকে টেনে তুলতে হবে। একজন সেলিব্রিটি হিসেবে আমি সবসময় সচেতন ছিলাম। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সাহায্য নিচ্ছি, এই খবর বাইরে গেলে মানুষ কী ভাববে? তাই আমি স্থির করেছিলাম, নিজের জোরে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসব।"
দীপ্তি জানান, প্রতি ২০-২৫ দিন পরপরই তাঁর মনে হতো জীবনে কিছুই ঠিকমতো কাজ করছে না। তিনি নিজেকে প্রশ্ন করতেন, পরিবার ছেড়ে আমেরিকায় আসা কি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল? কিংবা এত অনিশ্চিত ক্যারিয়ার বেছে নেওয়াটাই কি ভুল ছিল? এমন দুঃসময়ে তাঁর সৃষ্টিশীলতা হয়ে ওঠে আশ্রয়। "আমার লেখা আর ছবি আঁকা আমার ভরসার লাঠি হয়ে দাঁড়ায়। আমি ঘন্টার পর ঘন্টা গ্যারাজে বসে থাকতাম, অসংখ্য ক্যানভাসে ছবি আঁকতাম, ডায়েরি লিখতাম। এগুলো আমাকে মানসিক শান্তি দিয়েছে।" ১৯৮৮ সালে দীপ্তি ও প্রকাশ দিশা ঝা নামে একটি কন্যাশিশুকে দত্তক নেন।